ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মুজিববর্ষে কেউ ভূমিহীন গৃহহীন থাকবে না ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২২:২৮, ৯ নভেম্বর ২০২০

মুজিববর্ষে কেউ ভূমিহীন গৃহহীন থাকবে না ॥ প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে দেশের কোন মানুষ ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না উল্লেখ করে বলেছেন, মুজিববর্ষে একটা মানুষও ভূমিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না। মুজিববর্ষে কোন লোক যেন গৃহহারা না থাকে সে বিষয়গুলো আপনারা দেখবেন অনেকেই এগিয়ে আসছে। রবিবার মাদারীপুর, ফরিদপুর এবং মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের এই পরিকল্পনার কথা জানান। বাংলাদেশ সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ফরিদপুর জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মোঃ শামসুল হক, মাদারীপুরের মুনীর চৌধুরী এবং মৌলভীবাজার জেলার নবনির্বাচিত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিসবাহুর রহমানকে শপথবাক্য পাঠ করান। গত ২০ অক্টোবর উপ-নির্বাচনে এই তিনটি আসনের প্রার্থীরা জয়লাভ করেন। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলাল উদ্দিন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। এলজিআরডি ও সমবায়মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এবং প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য সচিবালয় প্রান্তে এবং পিএমও সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিবসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং গণভবনের উর্ধতন কর্মকর্তারা গণভবন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন। পরে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রত্যেকটি মানুষের ঘরে আলো জ্বালাবো। বিদ্যুত উৎপাদন বাড়িয়েছি, দেশের ৯৭ ভাগ মানুষ বিদ্যুত পাচ্ছে। ২০২১ সালে আমরা যখন স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করব, প্রত্যেকের ঘরেই কিন্তু আলো জ্বলবে, আমরা সেইভাবেই পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করব এবং আমরা বাস্তবায়নও করে যাচ্ছি। রাস্তাঘাট স্কুল, ব্রিজ সবকিছু আমরা ব্যাপকভাবে করে দিচ্ছি। সরকারের উন্নয়নমূূলক কর্মকান্ডের খন্ডচিত্র তুলে ধরে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা নদী ড্রেজিং করে দিচ্ছি, নৌপথগুলো আমরা সচল করে দিচ্ছি, রেলপথ আমরা উন্নত করে দিচ্ছি, এইভাবে সবক্ষেত্রে আমার কাজ করে যাচ্ছি। একদিকে করোনাভাইরাস যেমন মোকাবেলা করব, অপরদিকে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সেটা যেন হয়, আমাদের সেভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। সেবার মনমানসিকতা নিয়েই আপনাদের কাজ করতে হবে। কারণ আওয়ামী লীগ গণমানুষের সেবায় গড়ে উঠা সংগঠন। স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার সুযোগ করে দেয়ার জন্য অভিভাবকদের কাছে আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা আমরা অর্জন করেছি। সেটা আমাদের ধরে রাখতে হবে ২০২৪ পর্যন্ত এবং সেটা আমরা ধরে রাখতে পারব। কিন্তু দুর্ভাগ্য, করোনাভাইরাস হওয়ার কারণে আমাদের না শুধু, সারাবিশ্বে অর্থনৈতিকভাবে, সামাজিকভাবে স্থবিরতা চলে এসেছে। এর মাঝে বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে। নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও সংগ্রামের কথা স্মরণ করিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনাদের বলব, আপনারা নির্বাচিত হয়েছেন জনগণের প্রতি আপনাদের দায়িত্ব আছে। দেশের মানুষের কথা চিন্তা করার। আপনারা জানেন, জাতির পিতা ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণ করার জন্য যে ১৯টি জেলা ছিল এবং মহকুমা ছিল, সেই মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করেন, ৬০টি জেলা করেন। জেলা গবর্নর নিযুক্ত করেন এবং প্রত্যেকটা জেলা এক একটা ইউনিট হিসেবে গড়ে তুলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কীভাবে উন্নয়ন হবে, সেই জেলার মানুষের জীবনমান কীভাবে উন্নতি হবে- এভাবেই ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণ করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু। জনগণের কাছে ক্ষমতা নিয়ে যাওয়া এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করা সেটা তিনি শুরু করেছিলেন, যা তিনি শেষ করে যেতে পারেননি। আমরা সরকারে আসার পর থেকে বঙ্গবন্ধু যে যে কাজ করতে চেয়েছিলেন, সেগুলো বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ আসবেই এবং সেই দুর্যোগ মোকাবেলা করেই আমরা এগিয়ে যাব। কারণ জাতির পিতা নিজেই ৭ মার্চের ভাষণে বলেছিলেন- ‘আমাদের (বাঙালীকে) কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না’। কাজেই, ইনশাল্লাহ আমরা এগিয়ে যাব এবং জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব।
×