ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হাইকোর্টের রায়

আসামিকে প্রবেশনে পরিবারের সঙ্গে থাকার অনুমতি ॥ ৫ বছরের দন্ডপ্রাপ্ত

প্রকাশিত: ২২:২৬, ৯ নভেম্বর ২০২০

আসামিকে প্রবেশনে পরিবারের সঙ্গে থাকার অনুমতি ॥ ৫ বছরের দন্ডপ্রাপ্ত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাদক মামলায় ৫ বছরের দন্ডপ্রাপ্ত আসামি মতি মাতবরকে তিন শর্তে প্রবেশনে (পরীক্ষাকাল) পরিবারের সঙ্গে থাকার সুযোগ দিয়ে রায় ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। আদেশের পর আইনজীবী বলেছেন, এ ধরনের আদেশ দেশের বিচার ব্যবস্থায় যুগান্তকারী ও নজিরবিহীন। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে হাইকোর্টে প্রবেশন বিশেষ আইনে প্রথম রায়। অন্যদিকে পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্পে দুর্নীতির এক মামলায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ হোসেনকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশ বহাল রেখেছেন আপীল বিভাগ। রবিবার আপীল ও হাইকোর্ট বিভাগের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করেছে। মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি মতি মাতবরকে প্রবেশনে পাঠিয়ে সংশোধনের সুযোগ দিয়ে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি জাফর আহমেদের হাইকোর্টের একক বেঞ্চ রবিবার এ রায় দেন। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে হাইকোর্টে প্রবেশন বিশেষ আইনে প্রথম রায়। রায়ে প্রবেশনের সুযোগ চেয়ে আনা আবেদন গ্রহণ করে আসামির রিভিশন পিটিশন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। তাকে যে শর্তগুলো মানতে হবে, ৭৫ বছরের বৃদ্ধ মায়ের যতœ নিতে হবে। দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়ে ও দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়া ছেলের লেখাপড়া চালিয়ে নিতে হবে। আইন অনুসারে নির্ধারিত বয়সের আগে মেয়েকে বিয়ে দিতে পারবেন না। আদালতে আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এ ধরনের আদেশ দেশের বিচার ব্যবস্থায় যুগান্তকারী ও নজিরবিহীন। তিনি বলেন, দ-িতকে সমাজ সেবা অধিদফতরের অধীনে দেড় বছর প্রবেশনে থাকাকালীন উল্লেখিত তিনটি শর্ত পালন করতে হবে। তিনি বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আসামি মতি মাতবরের ৫ বছরের সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে দায়েরকৃত রিভিশন মামলার রায়ে আসামির সাজা বহাল রেখে প্রবেশন দেন। রবিবার আদালতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা প্রবেশন অফিসার মোঃ আজিজুর রহমান মাসুদ। আদেশের পরপরই আসামিকে তাৎক্ষণিকভাবে তার তত্ত্বাবধানে দিয়ে দেয়া হয়। শর্ত ভাঙ্গলে তার প্রবেশন বাতিল হবে বলেও আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন। মামলার বিবরণে জানা যায়, মতি মাতবর এবং অপর একজন আসামির কাছে ৪১১ পিস এবং ৭০০ পিস ইয়াবা উদ্ধারের অভিযোগে ২০১৫ সালের ২৩ নবেম্বরে ঢাকার কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষে ২৪ নবেম্বর ২০১৫ তারিখে চার্জশীট দাখিল করে। এই মামলায় ৮ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে যুগ্ম-মহানগর হাকিম আদালত আসামিদের ৫ বছরের সশ্রম কারাদ- ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। মতি মাতবর ২০১৫ সালের ২৩ নবেম্বর গ্রেফতারের পর দীর্ঘ ২০ মাস কারাভোগ করেন। ২০১৭ সালের ৯ জুলাই হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন। বিচারিক আদালতের রায়ে সংক্ষুব্ধ হয়ে মহানগর দায়রা আদালতে ফৌজদারি আপীল করা হয়। ১১ মে ২০১৭ তারিখে আপীল শুনানি নিয়ে অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখেন। পরে আসামি মতি মাতবর ১ জুলাই ২০১৭ তারিখে হাইকোর্ট বিভাগে রিভিশন মামলাটি দায়ের করেন। আইনজীবী শিশির মনির জানান, রিভিশনের শুনানিতে আসামিপক্ষে এ মামলায় প্রবেশন অধ্যাদেশ, ১৯৬০ এর ধারা ৫ অনুযায়ী আদেশ দেয়া যেতে পারে বলে আর্জি পেশ করা হয়। ঠিকাদার আসিফের আপীলে বহাল ॥ পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্পে দুর্নীতির এক মামলায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ হোসেনকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশ বহাল রেখেছেন আপীল বিভাগ। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে দুদকের করা আবেদনের ওপর শুনানি শেষে রবিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপীল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আসিফের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল।
×