ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

তূুয়া নূর

সরোজিনী নাইডুর কবিতা

প্রকাশিত: ২৩:৩৭, ৬ নভেম্বর ২০২০

সরোজিনী নাইডুর কবিতা

কবি সরোজিনী নাইডুর (১৩ ফেব্রুয়ারি ১৮৭৯- ২ মার্চ ১৯৪৯ সাল) কবিতা এত সুরেলা ও প্রাঞ্জল যে তাঁকে ‘ভারতের নাইটেঙ্গল’ উপাধি দেয়া হয়। বাবা ছিলেন ঢাকার ছেলে বিজ্ঞানী ড. অঘোরনাথ চট্টোপাধ্যায় আর মা ছিলেন বাঙালী কবি বরদাসুন্দরী দেবী। বাবা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন হায়দ্রাবাদে নিজাম কলেজ। হায়দ্রাবাদে জন্ম হয় তাঁর। পড়াশোনায় খুব ভাল ছিলেন। বাবা চাইতেন মেয়ে তাঁর মতো বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করুক। কিন্তু বিজ্ঞান বা অঙ্কে তাঁর মন ছিল না। তাই একদিন এলজেব্রা করতে গিয়ে বইয়ের পাতায় কবিতা লিখে ফেললেন। স্যার ওয়াল্টার স্কটের দীর্ঘতম কবিতা গধৎসরড়হ: অ ঞধষব ড়ভ ঋষড়ফফবহ ঋরবষফ পড়ে তিনি কবিতা লেখায় উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। বাবা দেখলেন মেয়ের আকর্ষণ সাহিত্যে। তখন তিনি কবিতা লেখার জন্য উৎসাহ দিলেন। সরোজিনী উর্দু, বাংলা, তেলেগু, ইংরেজী ও ফারসিতে সমান পারদর্শী ছিলেন। তিনি ‘মাহের মুনির’ নামে ফারসিতে একটা নাটক লেখেন ১৬ বছর বয়সে। এই নাটক পড়ে হায়দ্রাবাদের নিজাম মুগ্ধ হন। এই বয়সে তিনি বৃত্তি নিয়ে পড়তে যান ইংল্যান্ডে। এ সময় তিনি প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও সমালোচক অর্থার সাইমন, এডমন্ড গস প্রমুখের সংস্পর্শে আসেন। গস তাকে বুঝিয়ে বললেন ভারতীয় সমাজ থেকে লেখার বিষয়বস্তু বেছে নিতে। সরোজিনী এ কথা মনে রেখেছিলেন। তিনি কবি টেনিসন, শেলী, এলিজাবেথ ব্রাইনিংদের লেখায় প্রভাবিত হয়েছেন সত্যি, তবে তিনি তাঁর স্বকীয়তা অক্ষুণœ রেখেছেন। দি গোল্ডেন থ্রেশহোল্ড (১৯০৫), বার্ড অফ টাইম (১৯১২) ও দি ব্রোকেন উইং (১৯১৭) তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। এম সি গান্ধীর সঙ্গে তিনি ভারতের স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করেছেন, উজ্জীবিত করেছেন নারীদের। জেলও খেটেছেন ব্রিটিশ বিরোধিতার জন্য। তাঁর কবিতায় গ্রামীণ সমাজের সংস্কৃতি ও চিত্র উঠে এসেছে। তেমনি এসেছে প্রেম, মৃত্যু, বিরহ, আধ্যাত্মিকতা, জীবনবোধ ও দেশপ্রেম। তার কবিতা গীতিময়, সুরময়, ছন্দময়, উপমা ও চিত্রকল্পে পূর্ণ। তিনি নিপুণ বর্ণনায় বলেছেন ‘তাঁতি’ কবিতায় তাঁতিদের কথা যারা অক্লান্ত পরিশ্রমে রকমারি কাপড় বোনে মানুষের প্রয়োজনে ও নানা উৎসবের জন্য। ‘চুড়িওয়ালা’ কবিতায় অসাধারণভাবে বলেছেন চুড়ির সঙ্গে নারীর জীবন কিভাবে জড়িয়ে আছে। তাঁর আরেকটি বিখ্যাত কবিতা ‘বেহারা’। তিনি চার বেহারার পালকি টানা ও সুর করে গান গাওয়ার চিত্র এঁকেছেন। সেই সঙ্গে বলেছেন একজন নববধূর মনের কথা।
×