ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপির মুখে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মায়াকান্না মানায় না ॥ কাদের

প্রকাশিত: ২৩:০১, ৫ নভেম্বর ২০২০

বিএনপির মুখে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মায়াকান্না মানায় না ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ সংবিধান থেকে মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতি বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তিকে রাজনীতি করার সুযোগ দেয়া বিএনপির মুখে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মায়াকান্না মানায় না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থতা এবং হতাশায় বিএনপির রাজনীতিতে সঙ্কটের কালো ছায়া পড়েছে। আমরা বলতে চাই, দেশে এ মুহূর্তে কোন রাজনৈতিক সঙ্কট নেই, প্রকৃতপক্ষে আস্থার প্রকট সঙ্কট চলছে বিএনপির রাজনীতিতে। বিএনপির দলীয় নেতৃত্বের মধ্যে পারস্পরিক আস্থার সঙ্কট এখন চরমে। বুধবার সংসদ ভবন এলাকার সরকারী বাসভবন থেকে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, বিএনপি কথায়-কথায় গণতন্ত্রের কথা বলছে। গণতন্ত্র একটি বিকাশমান প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে আমাদের আরও পথ চলতে হবে। আমরা জানতে চাই তারা কোন গণতন্ত্রের কথা বলছে? তাদের দেখানো হালুয়া রুটির গণতন্ত্র? রাতের বেলায় দেয়া কারফিউ গণতন্ত্র? তাদের গণতন্ত্র ছিল এক চিমটি লবণ, একমুট গুড় আর আধা সের পানির সঙ্গে মিশ্রণের গণতন্ত্র। ‘সরকার মুক্তিযুদ্ধের সব অর্জন ধ্বংস করে দিচ্ছে’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির কথা শুনে হাসব না কাঁদব- ভেবে পাই না। যারা এখনও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী এবং সাম্প্রদায়িক অপশক্তির দোসরদের বিশ্বস্ত আশ্রয়দাতা, তাদের মুখে এ কথা মানায় না। এদেশের স্বাধীনতা যার নেতৃত্বে এসেছে, মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ককে হত্যার সরাসরি বেনিফিশিয়ারি হচ্ছে বিএনপি। তারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির জনক’। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্রের যে অবিরাম যাত্রা তাতে বিরোধী দল হিসেবে কী ভূমিকা রাখছে, জনগণ জানতে চায়। প্রথম দিন থেকেই অগণতান্ত্রিকভাবে একটি নির্বাচিত সরকার হটানোর ঘোষণা কী বিএনপির গণতন্ত্র? নেতিবাচক, মিথ্যাচার আর ষড়যন্ত্র ছাড়া গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সুরক্ষায় আপনারা আর কী করেছেন? দায়িত্বশীল বিরোধী দল হিসেবে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক পথ রচনায় সরকারকে কী সহযোগিতা করেছেন? আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনপ্রত্যাশা থেকে ছিটকে পড়ে বিএনপি এখন মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ন্যায়বিচারের কথা বলছে। অথচ এই প্রত্যেকটি তাদের আমলে ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। এমনকি সংবিধান থেকে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের মূলোৎপাটন করেছে বিএনপি। ‘হ্যাঁ-না’ ভোট দিয়ে বিএনপির গণতন্ত্রের যাত্রা। বিএনপি ১৫ আগস্ট ও ৩ নবেম্বরের হত্যাকা-ের মধ্য দিয়ে জনগণের হাত থেকে দেশের রাজনীতিকে কেড়ে নিয়েছিল। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে রাজনীতিকে তৃণমূলে পৌঁছে দিয়েছেন। তাই এখন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন দেশের জনগণ। এজন্যই বিএনপিকে বলতে চাই, গণতন্ত্র যদি বিশ্বাস করেন, তাহলে জনমতকে সম্মান করুন। ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। আমরা জনগণের ওপর আস্থাশীল। শেখ হাসিনার রাজনীতি জনগণকে ঘিরেই। ওবায়দুল কাদের বলেন, একটি মতলবি মহল সম্প্রতি ধর্মীয় ইস্যুসহ নানান ইস্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে। রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে চালাচ্ছে অপপ্রচার। তারা সামাজিক শান্তি, স্বস্তি এবং আমাদের সকল ধর্মের মানুষের বন্ধুত্বপূর্ণ সহাবস্থান নষ্ট করতে চায়। তাই আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, সম্প্রতি লালমনিরহাটের পাটগ্রাম ও কুমিল্লার মুরাদনগরের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের প্রতিটি ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। কেউ কারও ধর্মবিশ্বাসে আঘাত করে পোস্ট দেয়া প্রত্যাশিত নয়। এ ধরনের উস্কানিমূলক পোস্ট শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। গুজবে ভর করে কারও জীবন ও সম্পদের ওপর আঘাত করবেন না। পাশাপাশি অন্য ধর্মের প্রতি কেউ কটাক্ষ করবেন না। পৃথিবীর সব ধর্মবিশ্বাসই অন্য ধর্মের প্রতি সহিষ্ণুতার শিক্ষা দেয়। করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় তরঙ্গের বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে আমাদের দেশেও করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ধীরে-ধীরে বাড়ছে। এ প্রেক্ষাপটে যে কোন আশঙ্কা থেকে মুক্ত থাকতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোন বিকল্প নেই। ইতোমধ্যে শেখ হাসিনার সরকার সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ নীতি ঘোষণা করেছে। জনগণের সুরক্ষায় এ বিষয়ে শেখ হাসিনা সরকার ধীরে-ধীরে আরও কঠোর অবস্থানের দিক যাচ্ছে।
×