ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পেল আট বছরের শিশু

প্রকাশিত: ২৩:০৬, ৪ নভেম্বর ২০২০

নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পেল আট বছরের শিশু

নিয়াজ আহমেদ লাবু ॥ জন্মের পরই বাবাকে হারায়। একটু বড় হওয়ার পর মাও চোখের আড়ালে চলে যান। কোন এক অপরাধে কারাবন্দী মা। পরে শিশুটি তার দাদির কাছে বেড়ে উঠছিল। অভাবের সংসারে দাদিও পেরে উঠছিলেন না। এক পর্যায়ে নাতনির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে নিরাপদ আশ্রয়ে এলাকার পরিচিত মঈনুল-সুরমা দম্পতির হাতে তুলে দেন অবুঝ শিশু নাতনিকে। কিন্তু নিরাপদ আশ্রয়ের পরিবর্তে শিশুটির কপালে জুটল শুধুই নির্যাতন। প্রতিরাতে মঈনুল-সুরমা দম্পতির অসহনীয় নির্যাতনের ফলে শিশুটির চিৎকার আশপাশে বসবাসরত অনেকের কানে পৌঁছেছিল। প্রায় দুই বছর ধরে এভাবে নির্যাতনে শিশুটির কান্না কারও হৃদয় স্পর্শ করেনি। অবশেষে এক প্রতিবেশী নারীর মানবিকতায় শিশুটি নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেল। সোমবার রাতে প্রতিবেশী সানজিদা আক্তার নিশোর ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে পুলিশ রাজধানীর গুলশান নর্দা মোড়লবাড়ি এলাকা থেকে ৮ বছরের ওই শিশু গৃহকর্মীকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত গৃহকর্তা মঈনুল হোসাইন ও গৃহকর্ত্রী সুরমা আক্তারকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানায়, শিশুটির মুখমণ্ডলে মারধর ও পোড়া জখমের চিহ্ন ছিল। আঘাতে চোখ ফুলে গেছে। গোপনাঙ্গে আঘাতের ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটি উদ্ধারের সহায়তাকারী সানজিদা আক্তার নিশো বাদী হয়ে গুলশান থানায় মামলা করেছেন। এদিকে মঙ্গলবার সকালে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে। শিশুটিকে উদ্ধারকারী দলে থাকা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ মশিউর জানান, সোমবার রাতে খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করি। রাতেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নাক-কান-গলাসহ যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসার শেষে তাকে তেজগাঁও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে নিয়ে আসা হয়। পরে মঙ্গলবার সকালে শিশুটিকে ঢামেক হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
×