ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মাসোহারা তোলায় ব্যস্ত পুলিশ

মহাসড়ক দাবড়ে বেড়াচ্ছে নিষিদ্ধ থ্রি হুইলার

প্রকাশিত: ২১:৩৭, ৪ নভেম্বর ২০২০

মহাসড়ক দাবড়ে বেড়াচ্ছে নিষিদ্ধ থ্রি হুইলার

মাকসুদ আহমদ, কক্সবাজার ঘুরে এসে ॥ চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব মাত্র ১৫০ কিলোমিটার। তিনঘণ্টার যাত্রাপথে সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে পর্যটকরা। নিষিদ্ধ থ্রি হুইলার দাবড়ে বেড়াচ্ছে মহাসড়ক জুড়ে। মহাসড়কের পাশে থাকা স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা এলাকায় ড্যান্সিং স্পীড ব্রেকারের অভাব নেই। ব্রেক কষতে কষতে হয়রান চালক। দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে পর্যটকরা সৈকতে যাচ্ছে এই সড়ক দিয়ে। করোনাকালীন দীর্ঘ তিনমাস বন্ধ থাকলেও ১৭ আগস্ট থেকে খুলে দেয়া হয়েছে কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল, রেস্তরাঁ। পর্যটকের ভিড় সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা ট্রাফিক বিভাগ নিষিদ্ধ থ্রি হুইলারের বিভিন্ন স্ট্যান্ড থেকে মাসোহারা তোলায় ব্যস্ত। পর্যটকদের ভোগান্তি নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই তাদের। থ্রি হুইলার স্ট্যান্ডগুলোকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলের ব্যানারে চাঁদাবাজি করছে স্থানীয় চক্র। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম-দোহাজারি এবং কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে প্রকৌশলীরা মুখ খুলতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকৌশলী জানিয়েছেন, ড্যান্সিং স্পীড ব্রেকার স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা ও এতিমখানার সামনে ছাড়া আর কোথাও নেই। কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদার এসব স্পীড ব্রেকারের বিরোধী। কিন্তু স্থানীয় এমপি, চেয়ারম্যানের চাপ ছাড়াও কিছু প্রভাবশালী মহলের চাপের মুখে আমরা বাধ্য হই স্পীড ব্রেকার স্থাপনে। মূলত বাংলাদেশের শুধু চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কেই রয়েছে এ ধরনের স্পীড ব্রেকার। যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ও দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। চট্টগ্রামের জিরো পয়েন্ট তথা নিউমার্কেট মোড় থেকে যাত্রা শুরু করে কক্সবাজারের কলাতলী বীচ পর্যন্ত পৌঁছাতে প্রাইভেট গাড়িতেই সময় লাগছে কমপক্ষে চারঘণ্টা। চট্টগ্রাম রেল স্টেশন থেকে যেমন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছুটে আসা সৈকত পিপাসুরা বাসে কিংবা প্রাইভেট পরিবহনে চড়ে বসছেন কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে। ভোগান্তির অন্ত নেই কর্ণফুলী সেতু পার হয়ে মইজ্যারটেক এলাকা থেকে চার লেনের রাস্তা শুরু কক্সবাজার মহাসড়কে। মইজ্যারটেক থেকে পটিয়ার কলেজ বাজার হয়ে আনোয়ারা যাচ্ছে থ্রি হুইলার। কলেজ বাজার থেকে বোয়ালখালী বাইপাস পর্যন্ত আরেকটি থ্রি হুইলারের স্ট্যান্ড। সেখান থেকে পটিয়া পৌরসভা পর্যন্ত থ্রি হুইলারের দাপটে প্রাইভেট গাড়িগুলোর নাকাল অবস্থা। পটিয়া থেকে সাতকানিয়া হয়ে দোহাজারি পর্যন্ত রাস্তায় চলাচল করছে অসংখ্য থ্রি হুইলার। কেরানীরহাট থেকে বান্দরবান সেই কক্সবাজার মহাসড়ক থেকেই যেতে হয় তেইশ কিলোমিটার। সেখানেও ধাপে ধাপে কেরানীরহাট থেকে বান্দরবান থ্রি হুইলারের চালকরা যেন যাত্রী টেনে তোলার কৌশল অবলম্বন করে। কেরানীরহাট থেকে লোহাগাড়া হয়ে চকরিয়া পর্যন্ত সিএনজি অটোরিক্সা ও মিশুকের স্ট্যান্ডের অভাব নেই। চকরিয়া থেকে মিশুকের ছড়াছড়ি সবচেয়ে বেশি। অবৈধভাবে এসব তিন চাকার বাহন রাস্তায় চললেও জেলা পুলিশের কোন বাধা নেই। প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি চলছে স্থানীয় চক্রের মাধ্যমে। ফিফটি ফিফটি ভাগাভাগিতে চাঁদার ভাগ চলে যায় পুলিশের কাছে।
×