ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পঞ্চগড়ে প্রকাশ্যে চলছে তালমা নদী দখলের মহোৎসব

প্রকাশিত: ২১:২২, ৪ নভেম্বর ২০২০

পঞ্চগড়ে প্রকাশ্যে চলছে তালমা নদী দখলের মহোৎসব

স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড় ॥ পঞ্চগড় শহরতলী দিয়ে প্রবাহমান তালমা নদীতে বালু ফেলে নদী দখলের মহোৎসব চালালেও দেখার কেউ নেই। স্থানীয় একটি কোম্পানি কয়েকদিন ধরে প্রকাশ্যে দিন-দুপুরে ট্রাকটর দিয়ে শ’ শ’ ট্রলি বালু ফেলে নদীটিকে দখল করছে। শুধু তাই নয়, এর আগে তালমা নদীর দখল হওয়া স্থানের একই পাশে হিমালয় বিনোদন পার্ক নামে একটি ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে নদীটি ভরাট করে বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তুলেছে। এই দুই প্রতিষ্ঠানের দখলের কারণে নদীটি প্রায় অর্ধমৃত অবস্থায় প্রবাহমান। এভাবে দখলের প্রতিযোগিতা চলতে থাকলে অচিরেই নদীটি গতিপ্রবাহ হারিয়ে ফেলবে এবং পরিবেশ ও কৃষি অর্থনীতির ওপর বিরাট প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে আজ অর্ধমৃত অবস্থায় প্রবাহমান তালমা নদী। স্থানীয়দের অভিযোগে জানা গেছে, ওই বেসরকারী কোম্পানিটি তালমা এলাকায় কয়েক বছর আগে জমি কিনে পুরো এলাকা ঘিরে স্থাপনা নির্মাণ করে। তাদের কেনা জমি সংলগ্ন তালমা নদী প্রবাহমান। গত কিছুদিন আগে তালমা নদীটি বালু দিয়ে ভরাট করতে থাকে। পঞ্চগড় পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, বাংলাদেশ নদী রক্ষা কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী কোম্পানিটি ইতোমধ্যে তালমা নদীর প্রায় সাড়ে ৭ একর জমি দখল করে নিয়েছে। এরপরও গত কিছুদিন ধরে নদীর প্রবাহমান ধারায় বালু ফেলে ভরাট করছে। একই কায়দায় পাশের হিমালয় বিনোদন পার্কও প্রায় সাড়ে আট একর জমি দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তুলেছে। স্থানীয় সূত্রমতে, তালমা নদীর ওই এলাকায় এলজিইডির একটি রাবার ড্যাম স্থাপন করা হয়। এই রাবার ড্যামটি স্থাপনের প্রথমদিকে খরা মৌসুমে নদীর উজানে স্থানীয় কৃষকদের সেচের মাধ্যমে পানি দেয়া হলেও বর্তমানে ক্যানেলগুলোকেও মাটি ভরাট করে বাজার ও ব্যক্তিগত স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। যে কারণে ওই রাবার ড্যামটিও কৃষকদের কোন কাজে আসছে না। উল্টো বর্ষা মৌসুমে উজানে তালমা নদীর পাড় ভেঙ্গে কবরস্থানসহ আবাদী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বামনপাড়া গ্রামের খতিবুল ইসলাম ও সিরাজুল ইসলাম জানান, অনেকদিন ধরেই তালমা নদী ভরাট করে দখলের মহোৎসব চালানো হচ্ছে। স্থানীয় গ্রামবাসীদের পক্ষে প্রশাসনের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখির কারণে স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি গোচরিভুত হয় বলে তারা উল্লেখ করেন। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। জেলা প্রশাসক ড. সাবিনা ইয়াসমিন বালু ভরাট করে নদী দখলের অভিযোগটি পেয়েছেন বলে জনকণ্ঠকে জানিয়ে বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
×