ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় জীবনে ৪ নবেম্বর

প্রকাশিত: ২১:১৬, ৪ নভেম্বর ২০২০

জাতীয় জীবনে ৪ নবেম্বর

আমরা, বাংলাদেশের জনগণ রাষ্ট্রীয় বা জাতীয়ভাবে কতকগুলো দিবস পালন করে থাকি। এর মধ্যে একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ২৬ মার্চ জাতীয় ও স্বাধীনতা দিবস, ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম দিবস, ১৫ আগস্ট ‘জাতীয় শোক দিবস’, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস অন্যতম। সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ৭ মার্চকে ‘ঐতিহাসিক দিবস’ হিসেবে পালন করার। এ ছাড়াও জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ঘোষিত বিভিন্ন দিবসসহ জাতীয়ভাবে নারী দিবস, যুব দিবস, সমবায় দিবসসহ বিভিন্ন দিবস পালন করা হয়ে থাকে। আমাদের জাতীয় জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন ৪ নবেম্বর কেটে যায় নীরবে, কোন ধরনের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া। ৪ নবেম্বর ১৯৭২ গণপরিষদে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান ‘সংবিধান বিল’ হিসেবে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। ’৪৭-এ দেশ বিভাগের পর পূর্ব বাংলার মানুষ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সাংবিধানিক ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লাগাতার সংগ্রাম করেছে। দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং সর্বোপরি নয় মাসের একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, লাখ লাখ মানুষের আত্মত্যাগ, মা-বোনদের সম্ভ্রম বিসর্জনের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সংবিধান প্রণয়ন একটি অনন্য ও ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনা ছিল। পাকিস্তান সৃষ্টির পর সংবিধান তৈরিতে সময় লেগেছিল প্রায় আট বছর। ওই সংবিধান তৈরির পর পরেই অব্যাহত সামরিক শাসন মূলত পাকিস্তান রাষ্ট্রকে একটি জঙ্গী-বর্বর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। যেখানে সাংবিধানিক এবং আইনের শাসন ছিল অনুপস্থিত। ২২ মার্চ ১৯৭২ রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ঈড়হংঃরঃঁবহঃ অংংবসনষু ড়ভ ইধহমষধফবংয ঙৎফবৎ, ১৯৭২ জারি করা হয়। রাষ্ট্রপতির ওই আদেশবলে ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানে নির্বাচিত জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের নিয়ে গঠিত হয় ‘বাংলাদেশ গণপরিষদ’। গণপরিষদের মোট সদস্য সংখ্যা ছিল ৪০৪ জন। বহিষ্কৃত ও পাকিস্তানের প্রতি আনুগত্য পোষণকারী সদস্যরা গণপরিষদের সদস্য পদ লাভে অযোগ্য ছিলেন। গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় ১০ এপ্রিল, ১৯৭২। গণপরিষদের স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকার মনোনীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর প্রস্তাব অনুযায়ী গণপরিষদের প্রবীণতম সদস্য মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশের সভাপতিত্বে গণপরিষদের কার্যক্রম শুরু হয়। মাওলানা তর্কবাগীশ সভাপতির আসন গ্রহণ করে প্রথমে নিজেই নিজের শপথ বাক্য পাঠ করেন এবং পরবর্তীতে পরিষদের অন্য সদস্যদের শপথ পাঠ করান। একই অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর প্রস্তাব এবং সৈয়দ নজরুল ইসলামের সমর্থনে শাহ আব্দুল হামিদ (এনই-৫, রংপুর) স্পীকার ও তাজউদ্দীন আহমদের প্রস্তাবে এবং মনসুর আলীর সমর্থনে মুহাম্মদুল্লাহ (পিই-২৭৫, নোয়াখালী) ডেপুটি স্পীকার নির্বাচিত হন। পরদিন ১১ এপ্রিল ’৭২ গণপরিষদের অধিবেশনে মনসুর আলী বাংলাদেশের জন্য একটি সংবিধানের খসড়া প্রণয়ন করার উদ্দেশ্যে ‘গণপরিষদের ৩৪ সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত খসড়া প্রণয়ন কমিটি, যার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ড. কামাল হোসেন’- প্রস্তাবটি উত্থাপন করলে তা সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। ১০ জুন, ১৯৭২ তারিখের মধ্যে কমিটি বিল আকারে একটি খসড়া শাসনতন্ত্রসহ রিপোর্ট পেশ করার কথা থাকলেও কমিটির পক্ষে সভাপতি ড. কামাল হোসেন ১২ অক্টোবর ১৯৭২ ‘সংবিধান বিল’ গণপরিষদে উত্থাপন করেন। বঙ্গবন্ধু এ উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, ‘দুনিয়ার ইতিহাসে দেখা যায় না, দশ মাসের মধ্যে কোন দেশ শাসনতন্ত্র দিতে পেরেছে। আমি নিশ্চয়ই মোবারকবাদ জানাব শাসনতন্ত্র কমিটির সদস্যদের। মোবারকবাদ জানাব বাংলার জনসাধারণকে। রক্তে লেখা এই শাসনতন্ত্র। যাঁরা আজ অন্য কথা বলেন বা চিন্তা করেন, তাঁদের বোঝা উচিত যে, এ শাসনতন্ত্রের আলোচনা আজ থেকে শুরু হয়নি। অনেকে যাঁরা বক্তৃতা করেন, তাঁদের জন্মের আগের থেকে তা শুরু হয়েছে এবং এ জন্য অনেক আন্দোলন করতে হয়েছে। অনেক রক্ত দিতে হয়েছে। এই শাসনতন্ত্রের আলোচনা হতে হতে শাসনতন্ত্র কী হবে তার ওপরে ভোটের মাধ্যমে, শতকরা ৯৮ জন তাঁদের ভোট আওয়ামী লীগকে দিয়েছেন। শাসনতন্ত্র দেয়ার অধিকার আওয়ামী লীগের রয়েছে। শাসনতন্ত্র ছাড়া কোন দেশ- তার অর্থ হলো মাঝিবিহীন নৌকা, হালবিহীন নৌকা। শাসনতন্ত্রে মানুষের অধিকার থাকবে, শাসনতন্ত্রে মানুষের অধিকারের সঙ্গে সঙ্গে কর্তব্যও থাকবে। এখানে ঋৎবব ংঃুষব ফবসড়পৎধপু চলতে পারে না। শাসনতন্ত্রে জনগণের অধিকার থাকবে, কর্তব্যও থাকবে এবং যতদূর সম্ভব, যে শাসনতন্ত্র পেশ করা হয়েছে, সেটা জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার মূর্ত প্রতীক হয়ে থাকবে, সে সম্বন্ধে আমার কোন সন্দেহ নেই। আমাদের আদর্শ পরিষ্কার হয়ে রয়েছে। এই পরিষ্কার আদর্শের ভিত্তিতে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে এবং সে আদর্শের ভিত্তিতে এদেশ চলবে। জাতীয়তাবাদ-বাঙালী জাতীয়তাবাদ-এই বাঙালী জাতীয়তাবাদ চলবে বাংলাদেশে। বাংলার কৃষ্টি, বাংলার ঐতিহ্য, বাংলার আকাশ-বাতাস, বাঙালীর রক্ত দিয়ে বাংলার জাতীয়তাবাদ। আমি গণতন্ত্রে বিশ^াসী, জনসাধারণের ভোটের অধিকারে বিশ^াস করি। আমি বিশ^াস করি সমাজতন্ত্রে, যেখানে শোষণহীন সমাজ থাকবে। শোষক-শ্রেণী আর কোনদিন দেশের মানুষকে শোষণ করতে পারবে না। আর হবে ধর্মনিরপেক্ষতা। এই চারটি আদর্শের ভিত্তিতে বাংলার শাসনতন্ত্র তৈরি হবে। এটা জনগণ চায়, জনগণ এটা বিশ^াস করে। জনগণ এই জন্য সংগ্রাম করেছে। লাখ লাখ লোক এই জন্য জীবন দিয়েছে। এই আদর্শ নিয়েই বাংলার নতুন সমাজ গড়ে উঠবে।’ সংবিধান বিল উত্থাপিত হওয়ার পর সর্বমোট ১৭টি অধিবেশনে বিভিন্ন সংশোধনী প্রস্তাবসহ বিলটির ওপর আলোচনার পর ৪ নবেম্বর ১৯৭২ গণপরিষদের গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। সংবিধান বিল গৃহীত হওয়ার পূর্বে বঙ্গবন্ধু আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, ‘জনাব ¯পীকার সাহেব, আজই প্রথম সাড়ে সাত কোটি বাঙালী তাদের শাসনতন্ত্র পেতে যাচ্ছে। বাংলার ইতিহাসে বোধহয় এই প্রথম যে বাঙালীরা তাদের নিজেদের শাসনতন্ত্র দিচ্ছে। বোধহয় না- সত্যিই এই প্রথম যে, বাংলাদেশের জনগণের প্রতিনিধিরা জনগণের ভোটের মারফতে এসে তাঁদের দেশের জন্য শাসনতন্ত্র দিচ্ছেন। এই শাসনতন্ত্র শহীদের রক্ত দিয়ে লেখা। কোন দেশ কোন যুগে আজ পর্যন্ত এত বড় রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পরে এত তাড়াতাড়ি শাসনতন্ত্র দিতে পারে নাই। তাই মানুষের মৌলিক অধিকার যাতে তাড়াতাড়ি ফিরে আসে, তারই জন্য আমাদের পার্টি এই শাসনতন্ত্র প্রদান করল। আশা করি, জনগণ এই শাসনতন্ত্র গ্রহণ করবেন এবং করেছেন। এই শাসনতন্ত্রের জন্য কত সংগ্রাম হয়েছে এই দেশে। শাসনতন্ত্র এমন একটা জিনিস, যার মধ্যে একটা আদর্শ, নীতি থাকে। সেই শাসনতন্ত্রের ওপর ভিত্তি করে আইন করতে হয়। এই মৌলিক আইন বিরোধী কোন আইন হতে পারবে না। এটা জনতার শাসনতন্ত্র। ভবিষ্যত বংশধররা যদি সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ এবং ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারেন, তা হলে আমার জীবন সার্থক হবে, শহীদের রক্তদান সার্থক হবে।’ বঙ্গবন্ধুর প্রস্তাব অনুযায়ী ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিষদের অধিবেশন মুলতবি করা হয় এবং ওই দিনটিকে ঠিক করা হয় সংবিধানে সদস্যদের স্বাক্ষর দানের জন্য। সংবিধান কবে থেকে কার্যকর হবে সে বিষয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘জনাব স্পীকার সাহেব, আজ এই পরিষদে শাসনতন্ত্র পাস হয়ে যাবে। কবে হতে এই শাসনতন্ত্র বলবত হবে, তা আমাদের ঠিক করতে হবে। আমি মনে করি, সেই দিন, যেদিন জল্লাদ বাহিনী রেসকোর্স-ময়দানে মুক্তিবাহিনী ও আমাদের বন্ধুরাষ্ট্রের মিত্র বাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল, সেই তারিখ। সেই ঐতিহাসিক ১৬ ডিসেম্বর তারিখ থেকে আমাদের শাসনতন্ত্র কার্যকর করা হবে। সেই দিনের কথা রক্তের অক্ষরে লেখা আছে। স্পীকার সাহেব, সেই ইতিহাস আমরা রাখতে চাই।’ ১৪ ও ১৫ ডিসেম্বর ১৯৭২ সংবিধানে গণপরিষদ সদস্যদের স্বাক্ষর দান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। ১৪ তারিখ স্পীকারের আমন্ত্রণে সংবিধানে সর্বপ্রথম স্বাক্ষর প্রদান করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান- প্রথমে সংবিধানের বাংলা এবং পরে ইংরেজী পাঠে। ১৫ তারিখ অনুষ্ঠানের শেষ সময় পর্যন্ত ৪ জন সদস্যÑশ্রীমানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা, শ্রী সুরঞ্জিৎ সেন গুপ্ত, মোহাম্মদ আজিজার রহমান এবং মোহাম্মদ ইব্রাহীম সংবিধানে স্বাক্ষর করেননি। স্পীকার সাহেব অনুপস্থিত সদস্যদের স্বাক্ষর দানের জন্য ‘শেষবারের’ মতো নাম ধরে আহ্বান জানালে বঙ্গবন্ধু স্পীকারকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, ‘আর যদি কেউ দস্তখত করার জন্য আসতে না পেরে থাকেন, তাতে কিছু আসে যায় না। আপনি পরেও তাঁদের দস্তখত নিতে পারেন। সে জন্য ‘শেষবারের মতো’ বললে কিছুটা অসুবিধা হয়। সেটা আপনার রুলিং হয়ে যায়। তাই আশা করি, আপনার রুলিং আপনি প্রত্যাহার করে আমার অনুরোধ মেনে নেবেন। প্রতি উত্তরে স্পীকার বলেছিলেন, ‘এই পরিষদের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের বক্তব্য আমি অনুধাবন করলাম।’ গণপরিষদের সিদ্ধান্ত ও অভিপ্রায় অনুযায়ী ১৫ ডিসেম্বর দিবাগত রাত বারোটায় গণপরিষদের বিলুপ্তি ঘটে এবং রাত বারোটার পর অর্থাৎ, ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ সংবিধান কার্যকর হয়। গণপরিষদ ভেঙ্গে যাওয়া উপলক্ষে বিদায়ী ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘গণপরিষদের সদস্যরা তাঁদের কর্তব্য পালন করেছেন। তাঁরা দেশবাসীকে শাসনতন্ত্র দিয়েছেন এবং নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। শাসনতন্ত্র দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের বিলুপ্তি ঘোষণা করেছেন।’ দীর্ঘ রক্তাক্ত সংগ্রাম ও যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত সংবিধানের প্রস্তাবনার প্রথম স্তবক- ‘আমরা, বাংলাদেশের জনগণ, ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসের ২৬ তারিখে স্বাধীনতা ঘোষণা করিয়া জাতীয় মুক্তির জন্য ঐতিহাসিক সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করিয়াছি;’ এবং প্রস্তাবনার শেষ স্তবক ‘এতদ্বারা আমাদের এই গণপরিষদ, অদ্য তেরো শ’ ঊনষাট বঙ্গাব্দের কার্তিক মাসের আঠার তারিখ, মোতাবেক উনিশ শত বাহাত্তর খ্রিস্টাব্দের নবেম্বর মাসের চার তারিখ আমরা এই সংবিধান রচনা ও বিধিবদ্ধ করিয়া সমবেতভাবে গ্রহণ করিলাম।’ আমাদের সংবিধান-স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, আশা-আকাক্সক্ষার একটি অনন্য রাজনৈতিক দলিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করা হয়েছে রকমারি বল্লমের অজস্র খোঁচায়। চেষ্টা করা হয়েছে সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূল চরিত্র পাল্টে দেয়ার। সুপ্রীম কোর্টের উভয় বিভাগ বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও বিভিন্ন রায় প্রদানের মাধ্যমে সচেষ্ট থেকেছে এবং আছে সংবিধানের মূল চরিত্র ও কাঠামোকে রক্ষা করতে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও লালনকারী সরকার ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকায় ’৭২-এর সংবিধানে বহুলাংশে ফিরে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত, লালন ও বিকশিত করার জন্য প্রয়োজন সংবিধানের সঠিক চর্চা ও লালন। আর সে লক্ষ্যেই ৪ নবেম্বর দিনটি জাতীয়ভাবে পালিত হতে পারে ‘সংবিধান দিবস’ হিসেবে। প্রতিবেশী দেশ ভারত (২৬ নবেম্বর), চীন (৪ ডিসেম্বর), ডেনমার্ক (৫ জুন), নরওয়ে (১৭ মে), কাজাকিস্তান (৩১ আগস্ট), পোল্যান্ড (৩ মে), জাপান (৩ মার্চ), যুক্তরাষ্ট্র (১৭ সেপ্টেম্বর), কানাডা (১ জুলাই), জার্মানি (২৩ মে), বেলজিয়াম (২১ জুলাই), নেদারল্যান্ডস (১৫ ডিসেম্বর), অস্ট্রেলিয়া (৯ জুলাই), আর্জেন্টিনা (১ মে), ব্রাজিল (১৫ নবেম্বর), রাশিয়া (১২ ডিসেম্বর) সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ সংবিধান গৃহীত বা কার্যকর হ’য়ার দিনটিকে ‘সংবিধান দিবস (ঈড়হংঃরঃঁঃরড়হ উধু)’ হিসেবে বিভিন্ন আঙ্গিকে পালন করে থাকে। কোন কোন দেশে ‘সংবিধান দিবস’-এ সরকারী ছুটিও পালিত হয়। সংবিধান গৃহীত হওয়ার ৪৮ বছর অতিক্রান্ত হতে চলেছে বটে, কিন্তু ‘সংবিধান দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় এখনও শেষ হয়ে যায়নি। লেখক : বিচারপতি, বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগ এবং সাবেক চেয়ারম্যান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১, বাংলাদেশ
×