ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তিন বছরের মধ্যে পেঁয়াজ উৎপাদন ১০ লাখ টন বাড়বে ॥ কৃষিমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২১:৪৬, ২ নভেম্বর ২০২০

তিন বছরের মধ্যে পেঁয়াজ উৎপাদন ১০ লাখ টন বাড়বে ॥ কৃষিমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ যা উৎপাদন হয়েছে তা খুবই আনন্দের ও আশাব্যঞ্জক বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। মন্ত্রী আরও বলেছেন, পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হলে এই উচ্চফলনশীল বারি-৫ জাতের পেঁয়াজের চাষ সারাদেশে দ্রুত ছড়িয়ে দিতে হবে। কারণ, পেঁয়াজে আমরা অন্যের উপর নির্ভরশীল হতে চাই না, পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে চাই। এছাড়াও ৩ বছরের মধ্যে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন ১০ লাখ টন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। রবিবার কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) আয়েজিত ‘গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের’ মাঠ দিবসে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। মেহেরপুরের সদর উপজেলার কালিগাংনি গ্রামে বারি এই মাঠ দিবসটি আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এবং কৃষি সচিব মোঃ মেসবাহুল ইসলাম। কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে পেঁয়াজ নিয়ে সঙ্কট চলছে। পেঁয়াজ রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে আর পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার সবচেয়ে সম্ভাবনা তৈরি করেছে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ। পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হলে আমাদের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন করতে হবে। ড. রাজ্জাক বলেন, প্রদর্শনী প্লট থেকে নমুনা পেঁয়াজ সংগ্রহে দেখা যাচ্ছে হেক্টরপ্রতি প্রায় ১৯ মেট্রিক টন গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে যা খুবই আনন্দের ও আশাব্যঞ্জক বলেন তিনি। মাঠদিবসে প্রদর্শনী প্লট থেকে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের নমুনা হার্ভেস্টে দেখা যায়, বারি-৫ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের উৎপাদন অনেক ভাল, হেক্টরপ্রতি প্রায় ১৯ মেট্রিক টন। এ বছর মেহেরপুরে ১৭৯ কৃষক প্রায় ২৫ একর জমিতে বারি-৫ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষ করেছেন। কৃষিমন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজ অত্যন্ত পচনশীল পণ্য। মজুদ করে রাখা যায় না। সহজে মজুদ করে রাখতে পারলে পেঁয়াজ নিয়ে সঙ্কট হতে না। পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার জন্য কোল্ডস্টোরেজের সুবিধা বাড়াতে হবে অথবা গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়াতে হবে। বিশেষ কোল্ডস্টোরেজে মজুদ করতে পারলে পেঁয়াজ নিয়ে সঙ্কট কমত, তবে সেক্ষেত্রে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যেতে পারে। সে তুলনায় তুলনামূলকভাবে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষ সহজতর ও অধিক সম্ভাবনাময়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনকে দ্রুত সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, এই উচ্চফলনশীল বারি-৫ জাতের পেঁয়াজের চাষ সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষীদের বীজ, উপকরণ, প্রযুক্তিসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে। স্বল্পসুদে পেঁয়াজ চাষীদের কৃষিঋণ নিশ্চিত করতে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের সমন্বয়ে কমিটি করে দেয়া হবে উল্লেখ করে ড. রাজ্জাক আরও বলেন, পেঁয়াজ, রসুনসহ মসলা জাতীয় ফসলের চাষে মাত্র ৪% সুদে কৃষকেদের কৃষিঋণ দেয়া হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলো এ কৃষিঋণ প্রকৃত কৃষক পান না। স্থানীয় প্রভাবশালীরা এসব কৃষিঋণ নিয়ে কৃষিবাদে অন্যান্য কাজে লাগান। এ কৃষিঋণ যাতে প্রকৃত কৃষক পায়- পেঁয়াজ, রসুনসহ মসলা জাতীয় ফসলের চাষে কাজে লাগে তা কঠোরভাবে এসব কমিটির মাধ্যমে মনিটর করা হবে।
×