ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মামলার তদন্ত কাজে ধীর গতিতে জনমনে অসন্তোষ

রায়হানকে ছিনতাইকারী সাজানোর হোতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন

প্রকাশিত: ২২:৫৫, ১ নভেম্বর ২০২০

রায়হানকে ছিনতাইকারী সাজানোর হোতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান নিহত হওয়ার ঘটনার ১৯ দিনেও প্রধান অভিযুক্ত ফাঁড়ির এস আই আকবরকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। রায়হান হত্যা মামলার তদন্ত কাজের ধীরগতিতে জনমনে অসন্তোষ বাড়ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত আকবর ছাড়া এখনও অনেকেই গ্রেফতারের আওতায় আসেনি। নিহত রায়হানকে ছিনতাইকারী হিসেবে উল্লেখ করে পুলিশের কাছে অভিযোগকারী সাইদুর রহমানকে গত রবিবার সকালে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। সন্ধিগ্ধ হিসেবে তাকে ৫৪ ধারায় আটক দেখানো হয়। অভিযোগকারী সাইদুর রহমানের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার কথা রয়েছে। ঘটনার দিন নগরীর কাষ্টঘর এলাকায় ছিনতাইয়ের খবর প্রচার করা হলেও সেদিন সেখানে এরকম কোন ঘটনার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অভিযোগকারী সাইদুর রহমান রায়হানকে ছিনতাইকারী সাজানোর পেছনে কোন রহস্য আছে কিনা সেটা জানার জন্য সাইদুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন বলে সচেতন মহল মনে করছে। রায়হান হত্যা ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে রায়হানকে ফাঁড়িতে এনে নির্যাতনের প্রাথমিক প্রমাণ পায় কমিটি। এই তদন্ত কমিটির সুপারিশে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূইয়া, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটুচন্দ্র দাসকে সাময়িক বরখাস্ত এবং এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়। মামলাটির তদন্ত কাজ শুরু করে পিবিআই। এই মামলায় এ পর্যন্ত এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ ও টিটুচন্দ্র দাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এএসআই আশেক এলাহীকে ৫ দিনের এবং কনেস্টবল হারুনুর রশিদকে দ্বিতীয় দফায় ৩ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। রিমান্ড চলাকালে তাদের মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য উদঘাটন করা হবে। মূল অভিযুক্ত এসআই আকবরকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতাকারী বন্দরবাজার ফাঁড়ির এসআই হাসানকে উদ্দিনকে এখনও গ্রেফতার দেখানো হয়নি। এসআই আকবরের পালিয়ে যাওয়া ও আকবরকে মদদদাতা, দায়িত্ব পালনে অবহেলার বিষয়টি সামনে রেখে পুলিশ সদর দফতর থেকে উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গত মঙ্গলবার তাদের তদন্ত রিপোর্টও জমা দিয়েছে সেই তদন্তের আলোকে কি ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তা এখনও জনসমক্ষে আসেনি। রায়হান নির্যাতনের ঘটনায় সৃষ্ট পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হওয়ায় কমিশনার গোলাম কিবরিয়াকে বদলি করা হলে তার স্থলে আসেন কমিশনার মোঃ নিরাসুল আরিফ। মঙ্গলবার দায়িত্ব নিয়ে রাতে সিলেট পৌঁছে নিহত রায়হানের বাড়িতে যান। সেখানে নিহত রায়হানের পরিবারকে তিনি যথাযথ বিচারের আশ্বাস প্রদান করেন। নতুন কমিশনার মোঃ নিরাসুল আরিফ রায়হানের পরিবারকে উপহারসামগ্রী প্রদান করেছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রায়হানের বাড়িতে উপহার নিয়ে যান এসএমপির উপকমিশনার (প্রশাসন) তোয়াফেল আহমদ, অতিরিক্ত উপ কমিশনার (মিডিয়া) বিএম আশরাফ উল্লাহ তাহের এবং সহকারী কমিশনার (অর্থ) রাখি দাস। পরিবারের পক্ষে রায়হানের মা সালমা বেগম এবং স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি উপহার সামগ্রীগুলো গ্রহণ করেন। উপহার সামগ্রীর মধ্যে ফলমূল, শিশুখাদ্য ও শিশুর ব্যবহার্যের জিনিসপত্র ও পোশাক রয়েছে। নির্যাতনে নিহত রায়হানের স্ত্রীর দায়ের করা মামলাটির তদন্ত করছে পিবিআই। এই মামলায় এ পর্যন্ত এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ ও টিটুচন্দ্র দাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর এখনও পলাতক রয়েছেন।
×