না’গঞ্জে বিস্ফোরণের মামলায় মসজিদ কমিটির সভাপতি গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণের মামলায় মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুল গফুরকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি পুলিশ। শুক্রবার রাত দশটায় তল্লার রেললাইন এলাকায় নিজ বাড়ির সামনে থেকে আব্দুল গফুরকে গ্রেফতার করে নারায়ণগঞ্জ সিআইডি পুলিশের একটি দল। শনিবার দুপুরে আবদুল গফুরকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে। শনিবার দুপুরে সিআইডি পুলিশের নারায়ণগঞ্জের বিশেষ পুলিশ সুপার নাসির উদ্দিন তার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যকে এ তথ্য জানান। তিনি আরও জানান, মামলাটির তদন্তভার গ্রহণের পর থেকেই মসজিদ কমিটির সভাপতি আবদুল গফুরকে সিআইডির নজরদারিতে রেখে বিভিন্ন সময়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তদন্তে তার গাফিলতি এবং অবহেলার সুস্পষ্ট তথ্য প্রমাণ পাওয়ায় এই মামলায় তাকে গ্রেফতার করে সিআইডির হেফাজতে রাখা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া তদন্তে যাদের দোষ প্রমাণ হচ্ছে তাদের সবাইকে পর্যায়ক্রমে আইনের আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই মামলার চার্জশীট দাখিল করা হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন সিআইডির জেলা পুলিশ সুপার। তিনি জানান, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মামলার অভিযুক্ত প্রায় ৩৬ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে। এদিকে ঘটনার জন্য মসজিদ কমিটি, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ, বিদ্যুত সরবরাহ ও ভবন নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর গাফিলতি ও অবহেলার অভিযোগ এনে ফতুল্লা থানার এসআই হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তভার দেয়া হয় সিআইডিকে। এই মামলায় এর আগে তিতাসের আট কর্মকর্তা কর্মচারী, ডিপিডিসির দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে বিদ্যুতের মিস্ত্রী মোবারক হোসেনের জবানবন্দী রেকর্ড করেছে আদালত। তিতাসের ৮ জন জামিনে রয়েছেন। উল্লেখ্য, গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে এশার নামাজ চলাকালে পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট ও গ্যাসের পাইপের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে ৩৭ জন দগ্ধসহ ৩৮ জন আহত হয়। দগ্ধদের মধ্যে এখন পর্যন্ত এক শিশু ও মসজিদের ইমাম এবং মুয়াজ্জিনসহ ৩৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ফতুল্লা থানায় দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করছে সিআইডি পুলিশ। ইতোমধ্যে তিতাসের আট কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ডিপিডিসির নিয়োগকৃত মিটার ও স্থানীয় এক বিদ্যুতের মিস্ত্রিসহ মোট এগারোজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মোবারক নামে এক বৈদ্যুতিক মিটার রিডার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দিয়েছেন।