ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

লালমনিরহাটের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের

প্রকাশিত: ১৮:২৮, ৩১ অক্টোবর ২০২০

লালমনিরহাটের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নে আবু ইউসুফ মোঃ সহিদুন্নবী জুয়েল নামে এক ব্যক্তিকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। শনিবার বিকাল ৩ টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আল মামুনের সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। এতে আরোও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব মাওলানা এম.এ মতিন, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ঢাবি শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি কামরুজ্জামান রাজু, রিয়াজুল আবীর, টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক রেদোয়ানুল হাসানসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব মাওলানা এমএ মতিন বলেন, লালমনিরহাটের মানুষ পুড়িয়ে হত্যা সম্পূর্ণ ইসলাম বিরোধী ও মানবতাবিরোধী। এহেন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। দেশের প্রচলিত আইন ও বিচার ব্যবস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একজন মানুষকে প্রকাশ্য দিবালোকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ওপরও ন্যাক্কারজনক ভাবে হামলা করা হয়েছে। এই হত্যাকা-ের পিছনে নিশ্চয়ই কোন অসৎ উদ্দেশ্য আছে বলে আমরা মনে করি। ধর্মের নাম ব্যবহার করে একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আল মামুন বলেন, সম্প্রতি লালমনিরহাটের ঘটনাই প্রমাণ করে হামলাকারীরাই ইসলামের সবচেয়ে বড় শত্রু। এরা মানবতার চরম শত্রু। সাধারণ মানুষদের ভুল বুঝিয়ে গুজব ছড়িয়ে পরিকল্পিত ভাবে লোকটিকে পিটিয়ে পুড়িয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা অবিলম্বে এই হত্যাকা-ের সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। অন্যথায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ সমগ্র দেশে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে। তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন ধর্মীয় সভায় ওয়াজের নামে গুজব ছড়ানো ও উস্কানিমূলক অপপ্রচার বন্ধ করার জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। দেশের অনেক মাদ্রাসায় জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয় না, জাতীয় পতাকা ওড়ানো হয় না, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ানো হয়না যা দেশের সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সংবিধান বিরোধী এসব কর্মকা-ই ধর্মীয় উগ্রবাদকে আরোও উসকে দিচ্ছে। মাদ্রাসাগুলোতে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি দেশের ইতিহাস চর্চা বাধ্যতামূলক করতে হবে। সমাবেশে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ পাঁচ দফা দাবি রাখেন। সেগুলো হলো: লালমনিরহাটের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে; বিভিন্ন ধর্মীয় সভা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় উস্কানিমূলক গুজব ছড়ানো ও অপপ্রচারকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে; ধর্ষণের ন্যায় বলাৎকারের অপরাধে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে এবং মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের যৌন নিপীড়ন বন্ধে নজরদারি বাড়াতে হবে; মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত জাতীয় সংগীত বাজানো, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শহীদ মিনার নির্মাণ ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে হবে।
×