নিজস্ব সংবাদদাতা, সান্তাহার ॥ বগুড়ার সান্তাহার শহরের নতুন বাজার এলাকায় ছোট্র বাসায় দুই মেয়েকে নিয়ে সুখে-দুখে চলে আসছিল পত্রিকা এজেন্ট জুয়েল হোসেনের ছোট সংসার। বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছে। ছোট মেয়েকে নিয়ে জুয়েল হোসেনের ছিল অনেক স্বপ্ন। মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ করার প্রত্যয় ছিল।
পত্রিকা বিক্রি করে যা আয় হতো তার বেশির ভাগ খরচ করতো ছোট মেয়ে জিনিয়ার জন্য। বছর খানেক আগে জিনিয়ার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। রাত করে জ্বর আসতো, সাথে শুরু হয় খুসখুসে কাশি। জুয়েলের ধারনা ছিল ঠান্ড লেগে এমন হচ্ছে। কিন্তু দিনে দিনে তা আরো বাড়তে থাকে। জিনিয়ার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকলে জুয়েল স্থানীয় চিকিৎসকদের শরনাপন্ন হন।
কিন্তু চিকিৎসায় তেমন উন্নতি না হওয়ায় মেয়ে জিনিয়াকে নিয়ে যান বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা শেষে যে রিপোর্ট আসে তা জেনে জুয়েলের যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। চিকিৎসকরা জুয়েলকে জানান, জিনিয়া ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন। পত্রিকা বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে মেয়ের পড়াশোনা খরচ মিটিয়ে কোন মত দু’বেলা ভাত জোটে।
জিনিয়া বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক নজরুল ইসলামের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছে। এক বছরে আত্মীয়-স্বজনদের সহযোগীতায় মেয়ের চিকিৎসা বাবদ প্রায় দুই লাখ খরচ করেছেন। চিকিৎসক জানিয়েছেন এরোগের দীর্ঘ মেয়াদী চিকিৎসা চলবে, প্রয়োজন হবে অনেক টাকা। একজন পত্রিকা বিক্রেতা কোথায় পাবে এতো টাকা। জুয়েল জানায় করোনার কারনে পত্রিকা ব্যবসা ভাল না। মেয়ের চিকিৎসার টাকা কি ভাবে জোগাড় করবো। ইতিমধ্যে ৫০ ব্যাগেরও বেশি রক্ত দিতে হয়েছে জিনিয়ার শরীরে। জিনিয়ার রক্তের গ্রুপ এ পজিটিভ। শিশু জিনিয়ার প্রাণ রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীসহ সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিদের নিকট সাহায্যের আবেদন করেছেন জুয়েল হোসেন।
