ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চলে গেলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার খান জুনো

প্রকাশিত: ০১:০২, ৩০ অক্টোবর ২০২০

চলে গেলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার খান জুনো

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কমিউনিস্ট নেতা, মুক্তিযোদ্ধা হায়দার আনোয়ার খান জুনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। তার মেয়ে অনন্যা লাবণী জানান, বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে তার বাবার মৃত্যু হয়। নিউমোনিয়ার মধ্যে হার্ট এ্যাটাক হওয়ায় ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে জুনোকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ২৪ সেপ্টেম্বর নেয়া হয় লাইফ সাপোর্টে। সেখানে অবস্থার ক্রমাবনতি হতে থাকলে ২২ অক্টোবর স্কয়ার হাসপাতাল থেকে তাকে ধানমণ্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় যোগাযোগ করে হায়দার আনোয়ার খান জুনোর শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছিলেন বলে অনন্যা লাবণী জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বাবা নরসিংদীর শিবপুরে যুদ্ধ করেছিলেন। সে এলাকার অনেক মানুষ বাবাকে শেষবার দেখতে চান। তাদের অনুরোধে আমরা আজকে মরদেহ বারডেম হাসপাতালের মরচুয়ারিতে রাখার পরিকল্পনা করেছি। শুক্রবার শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়ার কথাও ভাবছি। আজ শুক্রবার বাদ জোহর জানাজা শেষে হায়দার আনোয়ার খান জুনোকে বনানী কবরস্থানে তার বাবা-মায়ের কবরে সমাহিত করা হবে বলে জানান তার মেয়ে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, ঐতিহাসিক ১১ দফার অন্যতম রচয়িতা, কমিউনিস্টদের সমন্বয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হায়দার আনোয়ার খান জুনোর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্ক্সবাদী), চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, সামাজিক সংগঠন জনলোকসহ বিভিন্ন সংগঠন। এছাড়াও শোকপ্রকাশ করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা এবং ট্রাস্টি ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগর সভাপতি আবুল হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক কিশোর রায় প্রমুখ। কমিউনিস্ট নেতা হায়দার আকবর খান রণোর ছোট ভাই জুনোর জন্ম ১৯৪৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর কলকাতায়। তাদের পৈত্রিক নিবাস নড়াইলের বরাশুলা গ্রামে। ষাটের দশকে কমিউনিস্ট আন্দোলনে জড়িয়ে পড়া জুনো ছিলেন চীনপন্থী শিবিরে। ১৯৭০ সালে বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়ন গঠিত হলে তিনি এর সভাপতির দায়িত্ব নেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে গেরিলা হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন জুনো। পদার্থ বিজ্ঞানের ছাত্র জুনো তখন বোমা তৈরির কাজ করছিলেন। প্রয়াত আব্দুল মান্নান ভূঁইয়াদের সঙ্গে তিনি নরসিংদীর শিবপুরে প্রতিরোধ যুদ্ধেও ছিলেন।
×