ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সুশাসন নিশ্চিত করতে সংবিধানের ৭০ ধারা তুলে দেয়ার দাবি

প্রকাশিত: ২৩:১৪, ৩০ অক্টোবর ২০২০

সুশাসন নিশ্চিত করতে সংবিধানের ৭০ ধারা তুলে দেয়ার দাবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সংবিধান থেকে ৭০ অনুচ্ছেদ উঠিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের। তিনি বলেছেন, এর ফলে একনায়কতন্ত্রের ব্যবস্থা কায়েম করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় জি এম কাদের এ দাবি জানান। জাপার ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্র সমাজ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। জি এম কাদের বলেন, অনেকেই এরশাদকে স্বৈরাচার বলে থাকেন। গণমানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে হলে সংবিধান থেকে ৭০ ধারা তুলে দিতে হবে। তিনি বলেন, ৭০ ধারার কারণে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে দলীয় প্রধান সরকার প্রধান হন, এতে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কোন সংসদ সদস্য ভোট দিতে পারেন না। দলীয় প্রধান যা বলেন, তাই কার্যকর হয়। তাই ৭০ ধারায় একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়, যা স্বৈরতন্ত্রের পর্যায়ে পড়ে। এতে সংসদের কাছে সরকারের জবাবদিহিতা থাকে না। আর জবাবদিহিতা না থাকলে সুশাসন নিশ্চিত হয় না। সুশাসন নিশ্চিত করতে ৭০ ধারা তুলে সংসদের কাছে সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। বিরোধীদলীয় উপনেতা বলেন, জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা দেশে প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন এবং দেশকে আটটা প্রদেশে ভাগ করতে হবে। আনুপাতিক হারে নির্বাচনে যে দল যত ভোট পাবে, সেই দল সংসদে ততটা আসন পাবে, এ ব্যবস্থা প্রবর্তন করত হবে। এরশাদ প্রবর্তিত উপজেলা পদ্ধতি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে। পূর্ণাঙ্গ উপজেলা পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে আদালতকেও উপজেলা পর্যায়ে আনতে হবে বলে মত দেন তিনি। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোন সাংসদ সংসদে তার দলের বিপক্ষে ভোট দিলে তাকে সংসদ সদস্যপদ হারাতে হয় একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সংসদে সকলের নিজস্ব মত প্রকাশের স্বাধীনতা দেয়া উচিত। দল সব কাজ ঠিক করবে এমন ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমি যদি মনে করি দলের পক্ষ থেকে দেয়া প্রস্তাব বাস্তবসম্মত নয়, তবে কেন বিরোধিতা করতে পারব না। তাছাড়া নিজের মতামত প্রকাশের সুযোগ দেয়া হলে পরিকল্পনা আরও সমৃদ্ধ ও গণমুখী হতে পারে। এখন যারা উপজেলা প্রতিনিধি নির্বাচিত হচ্ছেন তারা নিজেদের মতো কাজ করতে পারেন না, বলে দাবি করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, উপজেলা প্রতিনিধিদের অধীনেই সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজ করতে হবে। এতে আমলা ও সরকারী কর্মকর্তাদের ভয়ের কিছু নেই। রাজনীতিবিদেরা খারাপ কাজ করলে জনগণ ভোট দিয়ে তার জবাব দেবেন। বহুদলীয় গণতন্ত্রের স্বার্থেই নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, প্রচলিত নির্বাচন ব্যবস্থা অনেক ক্ষেত্রেই কার্যকর নয়। তাই ভোটের আনুপাতিক হারে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। এতে দেশের সকল দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে সংসদে। বর্তমান নির্বাচন ব্যবস্থায় শুধু বড় দুই থেকে তিনটি দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়।
×