ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাধীনতা পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত

প্রকাশিত: ২২:৩৯, ৩০ অক্টোবর ২০২০

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, অন্যের সহায়তা না নিয়ে আর্থ-সামাজিকভাবে স্বনির্ভরতা অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আরও মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছি। আমরা তো মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি। বিজয়ী জাতি কেন আমরা অন্যের কাছে হাত পেতে চলব, মাথা নিচু করে চলব? বিজয়ী জাতি সারাবিশ্বে বিজয়ীর বেশেই চলবে। পঁচাত্তরের পর আমরা সেই সম্ভাবনা এবং অধিকার হারিয়েছিলাম। কিন্তু সেটা আবার পুনরুদ্ধার করে জাতির পিতার যে স্বপ্ন, তাঁর সেই স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলব। বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২০ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার আদর্শে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার সংকল্পের কথা জানিয়ে দেশের উন্নয়ন ও শীতকালে সম্ভাব্য করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ওয়েব মোকাবেলায় সরকারের বিভিন্ন প্রস্তুতির কথা তুলে ধরেন। দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, আবার নতুনভাবে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে ইউরোপে ব্যাপকভাবে। ইউরোপে যখন আসে তার ধাক্কাটা আমাদের দেশেও আসে। আমরা এখন থেকে প্রস্তুত, আমরা এখন থেকেই তৈরি হচ্ছি। বিভিন্নভাবে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রত্যেকটা জেলা হাসপাতালকে আমরা প্রস্তুত রাখছি। তার সরকারের পরিচালনায় বাংলাদেশ আজ তার হৃত গৌরব পুনরুদ্ধার করতে সমর্থ হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত করে উন্নত সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলার জন্যই আমরা আমাদের সমস্ত কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি এবং যথেষ্ট অর্জনও করেছি। আসন্ন শীতে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ সম্পর্কে সকলকে সতর্ক করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের আগমনে সমগ্র বিশ্বের অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়লেও তার সরকার এটা মোকাবেলায় প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছে, যেন দেশের মানুষ এর থেকে সুরক্ষা পায় এবং দেশের অর্থনীতি গতিশীলতা না হারায়। রাজধানীর ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্তদের হাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে পদক তুলে দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এ সময় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জাতির পিতার যে স্বপ্ন, যে চেতনায় আমার লাখো শহীদ বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে স্বাধীনতা এনে দিয়ে গেছেন, তাদের এবং আমার লাখো মা-বোনের সেই আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেই আমরা এই বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি হিসেবে সারাবিশ্বে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে চলবে। আমরা কেন অন্যের কাছে হাত পেতে, মাথা নিচু করে চলব ? সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম পরিচালনা করেন এবং পুরস্কার বিজয়ীদের জীবন বৃত্তান্ত পড়ে শোনান। অনুষ্ঠানে পুরস্কার বিজয়ীদের পক্ষে খ্যাতনামা চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রফেসর ডাঃ এ কে এম এ মুকতাদির নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন। এ বছর সরকার দু’জন মরণোত্তরসহ ৮ ব্যক্তি ও একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ, চিকিৎসাবিদ্যা, সংস্কৃতি ও শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২০’ এ ভূষিত করে। এ বছর স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ীরা হচ্ছেন-স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের জন্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রয়াত কমান্ডার (অব) আবদুর রউফ (মরণোত্তর), প্রয়াত বুদ্ধিজীবী মুহম্মদ আনোয়ার পাশা (মরণোত্তর) ও আজিজুর রহমান। চিকিৎসাবিদ্যায় অধ্যাপক ডাঃ মোঃ উবায়দুল কবীর চৌধুরী ও অধ্যাপক ডাঃ এ কে এম এ মুকতাদির। সংস্কৃতিতে কালীপদ দাস ও ফেরদৌসী মজুমদার। শিক্ষায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ভারতেশ্বরী হোমসকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। পুরস্কারপ্রাপ্ত আজিজুর রহমান সম্প্রতি কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেকে ১৮ ক্যারেট সোনার একটি ৫০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণ পদক, সনদপত্র এবং ৫ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়। প্রতিবছর ২৬ মার্চ, স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে সরকার এ পুরস্কার প্রদান করে আসলেও এ বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে যথাসময়ে অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হতে পারেনি, যা বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হলো। স্বাধীনতা পদক দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় বেসামরিক পুরস্কার। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতিবছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে। অনুষ্ঠানে গণভবন প্রান্তে এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিমসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে ’৭৫-এ জাতির পিতাকে হত্যা পরবর্তী ক্ষমতা দখল, ইতিহাস বিকৃতি, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃতি খুনীদের পুরস্কৃত করা এবং স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসনের সঙ্গে জড়িত জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নস্যাত করা হয়, ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়। পরবর্তীতে ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে বাংলাদেশের ইতিহাস মানুষের সামনে তুলে ধরে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনীকে খুন, ধর্ষণ, গণহত্যায় সহযোগিতা করতে তাদের এ দেশীয় কিছু দোসর আলবদর, আল-শামস বাহিনী গড়ে তুলেছিল। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করে যুদ্ধাপরাধে জড়িত প্রায় ২১ হাজারের মতো পাকিস্তানী বাহিনীর দোসরকে গ্রেফতার করে তাদের বিচারও শুরু করেছিলেন। কিন্তু জাতির পিতাকে হত্যার পর থেকে সেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করা হয় এবং তাদের মুক্তি দেয়া হয়। তিনি বলেন, যারা অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করেছিল, মিলিটারি ডিক্টেটর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসেই এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে দিয়ে যারা কারাগারে বন্দী ছিল, তাদের মুক্তি দেয়। আর যারা দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিল, এমনকি পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে পাকিস্তান চলে গিয়েছিল তাদেরও ফিরিয়ে আনে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু এখানেই শেষ না, তাদের মন্ত্রিত্ব দেয়, উপদেষ্টা করে। জাতির পিতার হত্যাকারী, আত্মস্বীকৃত হত্যাকারী, যারা গর্ব করে বলত কে তাদের বিচার করবে? সেই খুনীদের পুরস্কৃত করেছিল বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে একবার আপনারা চিন্তা করে দেখেন যে, আপনাদের দেশ, স্বাধীন দেশ-বাংলাদেশ। বাংলাদেশের দূতাবাসে কারা আছে রাষ্ট্রদূত হিসেবে অথবা দূতাবাসের প্রতিনিধি হিসেবে? তারা হলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনী, হত্যাকারী। তাহলে সেই দেশের ভাবমূর্তি কী হতে পারে ? বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন, জাতির পিতা যখন একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তুলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে যাত্রা শুরু করলেন এবং ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণ করে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পদক্ষেপ নিলেন, ঠিক সেই মুহূর্তে ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। এর সঙ্গে বাঙালী জাতিও তাদের সকল সম্ভাবনাকে হারিয়ে ফেলে। তিনি বলেন, এই হত্যা (জাতির পিতা) শুধু একজন রাষ্ট্রপতি হিসেবে তাঁকেই নয়, আমার মা’ (বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা) যিনি প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে জাতির পিতার পাশে থেকেছেন এবং এ দেশের স্বাধীনতার জন্য নিজের জীবনকে উজাড় করে দিয়েছিলেন তাঁকে, ১০ বছর বয়সের ছোট ভাই রাসেল, ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এবং লেফটেন্যান্ট শেখ জামালসহ তিনভাই, নব পরিণীতা দুই ভ্রাতৃবধূ, একমাত্র চাচা শেখ আবু নাসেরসহ একইদিনে রাজধানীর তিনটি বাড়িতে আক্রমণ করে পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে হত্যা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে হত্যাকারীদের বিচারের পথ রুদ্ধ করে দেয়া, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নস্যাত করে ইতিহাস বিকৃত করা, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ নিষিদ্ধ করা। বঙ্গবন্ধুর নামটি পর্যন্ত ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার অপচেষ্টা করা হয়। ‘আওয়ামী লীগ ’৯৬ সালে প্রথমবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশের সঠিক ইতিহাস মানুষের সামনে তুলে ধরার প্রচেষ্টা গ্রহণ করে উল্লেখ করে সরকার প্রধান তার সরকারের সময়োচিত ও কার্যকর পদক্ষেপে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের খ- চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়া, প্রতিটি মানুষের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করা, প্রত্যেক ঘরে আলো (বিদ্যুত) জ্বালানো, প্রত্যেক ভূমিহীন-গৃহহীনকে ঘর-বাড়ি তৈরি করে এবং অর্থনৈতিকভাবে আত্মনির্ভরশীল ও আত্মমর্যাদাশীল করার লক্ষ্য নিয়েই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছি। দেশের উন্নয়নে তার সরকার অনেকগুলো মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এখন জনগণের পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতের চেষ্টা করে যাচ্ছি। শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার জনগণের সংবিধান স্বীকৃত প্রত্যেকটি মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করার জন্য পরিকল্পিত পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার এবং প্রযুক্তি শিক্ষার দিকেও তারা বিশেষভাবে দৃষ্টি দিয়েছেন। অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২০ বিজয়ীদের অভিনন্দিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা আজকে এখানে যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুরস্কারপ্রাপ্ত তাদের আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। কারণ, আপনারা সকলেই স্ব-স্ব ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখে গেছেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি-প্রতিটি ক্ষেত্রেই আপনাদের অবদান রয়েছে।’ তার সরকার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলেই ভার্চুয়ালি স্বাধীনতা দিবসের পদক প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যেহেতু স্বাধীনতা পুরস্কার সকলের হাতে তুলে দেয়া আমাদের কর্তব্য। প্রত্যেকবার নিজে উপস্থিত থেকে পুরস্কার হস্তান্তর করেছি। কিন্তু এবার করোনার কারণে উপস্থিত হতে না পেরে খারাপ লাগছে। তবে যে কারণে এভাবে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করতে হয়েছে এবং আমরা যে দিতে পারলাম সেটাই সব থেকে বড় কথা। যারা সমাজের জন্য জাতির জন্য এবং দেশের জন্য অবদান রাখেন তাদের সম্মান করা, গুণীজনের সম্মান করাটাও আমি মনে করি আমাদের কর্তব্য।’ প্রতিবছর ২৫ মার্চ সরকার এই পুরস্কারটি প্রদান করে থাকে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার এই মার্চ মাসেই এমনভাবে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা গেল যে, বাধ্য হয়েই আমরা সকল অনুষ্ঠান স্থগিত করলাম। এমনকি জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান যেটি ১৭ মার্চ ব্যাপকহারে করার কথা ছিল, সেটাও লোক সমাগম না করে এ রকম ভার্চুয়ালি করতে বাধ্য হয়েছি। কারণ, করোনাভাইরাস তখন সারাবিশ্বে আতঙ্ক ছড়িয়ে ফেলেছে এবং অনেকেই মারা গেছেন। এমনকি আমাদের একজন স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২০ বিজয়ী আজিজুর রহমানও মারা গেছেন। তিনি এ সময় আজিজুর রহমানসহ করোনাভাইরাসে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং এখনও যারা অসুস্থ তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। প্রধানমন্ত্রী দেশকে এগিয়ে নেয়ায় এবং করোনাভাইরাস থেকে দেশ ও বিশ্বের মানুষের মুক্তির জন্যও সকলের দোয়া কামনা করেন। সম্প্রতি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি সম্পর্কে তিনি বলেন, ইউরোপে যখন আসে এর ধাক্কাটা আমাদের দেশেও আসে। আমরা এখন থেকেই প্রস্তুত, বিভিন্নভাবে তৈরি হচ্ছি এবং বিভিন্ন জেলা হাসপাতালকেও আমরা প্রস্তুত রাখছি। সবরকম চিকিৎসা এবং সেবার জন্য যা যা প্রয়োজন আমরা সে পদক্ষেপ নিচ্ছি। করোনাভাইরাস দেখার সঙ্গে সঙ্গে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছি, প্রায় ছয় হাজারের মতো নার্স নিয়োগ দিয়েছি, টেকনিশিয়ান নিয়োগ দিয়েছি এবং আমরা সব রকম চিকিৎসার জন্য, সেবার জন্য যা যা করণীয় আমরা কিন্তু সেই পদক্ষেপ নিচ্ছি।
×