ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘সুষ্ঠু নির্বাচনকেও ভয় পায় সরকার’

প্রকাশিত: ২২:২০, ২৭ অক্টোবর ২০২০

‘সুষ্ঠু নির্বাচনকেও ভয় পায় সরকার’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকার বিএনপিকে যেমন ভয় পায়, জনগণের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনকেও তেমনি ভয় পায়। এ কারণেই দুটি আসনের উপনির্বাচন ঘিরে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় ক্ষমতাসীনরা বেপরোয়া বলে মন্তব্য করেছেন দফতরের দায়িত্বে থাকা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ইমরান সালেহ প্রিন্স। তিনি বলেন, সরকারের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাদের পরাজয় সুনিশ্চিত। তাই তারা দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে স্থানীয় সকল নির্বাচন কব্জা করতে চায়। সোমবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন। বলেন, ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বেপরোয়াভাবে হামলা চালাচ্ছে বিএনপির প্রার্থী, সমর্থক ও ভোটারের ওপর। পুলিশী নির্যাতন-গ্রেফতারের হুমকি দেয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় এসব ঘটলেও কোন ব্যবস্থা নেই। বরং তাদের আশ্রয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এ দুটি আসনের উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চলেছে। ভোট গ্রহণের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই প্রতীয়মান হচ্ছে, ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের মতোই এই দুটি আসনে প্রহসনের নির্বাচন করতে তারা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলেই সরকার ও আওয়ামী লীগের মধ্যে অস্থিরতা শুরু হয়ে যায়। তিনি বলেন, সরকার জানে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে তাদের ভরাডুবি নিশ্চিত। সেজন্য নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হওয়া মাত্রই আওয়ামী লীগ নির্বাচনী বিধি-বিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে। হামলা, মামলা, হুমকি, ভয়-ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশকে ধ্বংস করে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে নির্বাচনকে ব্যর্থ করে দিতে চায়। নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে তিনি বলেন, আসন্ন ঢাকা-১৮ এবং সিরাজগঞ্জ-১ জাতীয় সংসদ উপনির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও কলুষমুক্ত করতে যথাযথ উদ্যোগ নেন; নইলে ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার পরিণতি কতটা বিপজ্জনক হতে পারে তা জনগণ বুঝিয়ে দেবেন। নির্বাচনের নামে অপকর্ম করলে তাদেরও জবাবদিহি করতে হবে। দেশের আইনশৃঙ্খলনা পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, এই সরকারের লোকদের ক্ষমতার দাপটে দেশের কোন শ্রেণী-পেশার মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ও সম্মান নেই। কক্সবাজারের ওসি প্রদীপ কর্তৃক সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা, সিলেটে পুলিশী হেফাজতে রায়হান হত্যাসহ এই ধরনের ঘটনা এখন নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। মিডনাইট নির্বাচনের এক সংসদ সদস্যের ছেলে ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা সশস্ত্র বাহিনীর এক কর্মকর্তা ও তার সহধর্মিণীর ওপর হামলা ও তাদেরকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত করেছে। ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হামলাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। এ সময় তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ‘শহীদ জিয়াউর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়’ স্কুলের নাম পরিবর্তনের ঘটনায় তীব্র নিন্দাও জানান। বলেন, দুর্গাপূজার প্রাক্কালে ফরিদপুরের বোয়ালমারি, পটুয়াখালীর বাউফল এবং সম্প্রতি গাজীপুরে মন্দির ও পূজাম-পে হামলা ও প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। ঘটেছে চাঁদাবাজির ঘটনা। এর আগেও মন্দির, প্যাগোডা ও গির্জায় এই ধরনের হামলার ঘটনা ঘটেছে। অবিলম্বে হামলাকারী ও চাঁদাবাজদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান। এই ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানানোসহ পূজা উদ্যাপনে যথাযথ নিরাপত্তা প্রদানের জন্য প্রশাসনের কাছে জোর আহ্বান জানাচ্ছে। সরকারকে আর সময় দেয়া যায় না ॥ আমির খসরু এদিকে সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এই সরকারকে আর সময় দেয়া যাবে না। জনগণ ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে দেশ পরিচালিত হতে দেখতে চায়। বিন্তু সেটা সম্ভব হচ্ছে না ভোট ডাকাতির কারণে। এ ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি-এলডিপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে বলেন দেশ আজ দুর্বৃত্তদের দেশ, ধর্ষণকারীদের দেশ হিসেবে পরিচিত হয়েছে। এসব থেকে মুক্ত হতে হলে যে ভোট ডাকাতি চলছে এটা আমাদের বন্ধ করতে হবে। এখন সময় এসেছে। আর ভোট ডাকাতি করতে দেয়া যাবে না। সবাই মানসিকভাবে প্রস্ততি নিয়ে ফেলেছে এসব অপকর্মের হাত থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য।
×