ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রুবেল-তাসকিনের ফেরা, শুক্কুরের চমক

প্রকাশিত: ২১:২৯, ২৭ অক্টোবর ২০২০

রুবেল-তাসকিনের ফেরা, শুক্কুরের চমক

মোঃ মামুন রশীদ ॥ বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের প্রকোপে দীর্ঘ ৭ মাস ক্রিকেট খেলতে পারেননি বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। অবশেষে তারা ৩ দলের ওয়ানডে সিরিজ বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ দিয়ে ফিরেছেন। লক্ষ্য ছিল অভিজ্ঞ ও পরীক্ষিতদের পাশাপাশি সদ্য সাবেক হওয়া বিশ্বজয়ী অনুর্ধ-১৯ দলের কিছু ক্রিকেটার এবং প্রতিশ্রুতিশীল কিছু তরুণকে পরখ করে দেখা। সেই পরীক্ষায় বেশ কয়েকজন প্রতিভাবান ও তরুণ আলো ছড়িয়েছেন। যার মধ্যে সবার ওপরে নাম থাকবে ইরফান শুক্কুরের। চট্টগ্রামের এই ক্রিকেটার অবশ্য নতুন কেউ নয় দেশের ক্রিকেটে। তার পেশাদার ক্যারিয়ারে ইতোমধ্যেই ১০ বছর পার করেছেন। অনেকদিন ধরেই ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল পারফর্মেন্সের জন্য তার নাম ছড়িয়ে গেছে। অবশেষে সেরার পুরস্কার হাতে উঠল তার। বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপে যখন অভিজ্ঞ ও পরীক্ষিত ক্রিকেটাররা ব্যর্থ, তখন ২৭ বছর বয়সী শুক্কুর হয়েছেন আসরের সেরা ব্যাটসম্যান। শীর্ষ ৫ ব্যাটসম্যানের মধ্যে সর্বাধিক ৭১.৩৩ ব্যাটিং গড় তার। তবে দারুণভাবে ফিরেছেন অভিজ্ঞ রুবেল হোসেন ও দীর্ঘ সময় জাতীয় দলের বাইরে থাকা তাসকিন আহমেদ। ১২ উইকেট নিয়ে রুবেল হয়েছেন আসরের সেরা বোলার আর তাসকিন হয়েছেন সেরা কামব্যাক খেলোয়াড়। প্রেসিডেন্টস কাপ আয়োজনের লক্ষ্যগুলো পূরণ হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)। সাবেক যুব ক্রিকেটার তৌহিদ হৃদয়, পারভেজ হোসেন ইমন ব্যাটিংয়ে এবং বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম বোলিংয়ে নজর কেড়েছেন। এছাড়া আফিফ হোসেন ধ্রুব, রাকিবুল হাসান, পেসার সুমন খান, লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন নিজেদের মেলে ধরেছেন। উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কিঞ্চিৎ আলো দেখিয়েছেন তারা। রিশাদ পুরস্কৃত হয়েছেন টুর্নামেন্টের প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটার হিসেবে। দীর্ঘ সময় ধরেই সম্ভাবনাময় উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান হয়েছেন সেরা ফিল্ডার। তবে ব্যাটে-বলে সেরা হতে পারেননি এদের অনেকেই। ব্যাটিংয়ে পুরো আসরেই দেখা গেছে চরম দুর্গতি। তবে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে শুধু মুশফিক ছিলেন ব্যতিক্রম। তিনি আসরের একমাত্র সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে আরও দুই অর্ধশতকে ৫ ম্যাচে সর্বোচ্চ ২১৯ রান করেছেন। তাই টুর্নামেন্টের সেরা হয়েছেন তিনি। ঠিক তার পেছনেই শুক্কুর। ২ অর্ধশতকে ৮৮.০৬ স্ট্রাইকরেটে ২১৪ রান করে নজর কেড়েছেন। বাঁহাতি এ মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান ফাইনালে ৭৭ বলে ৭৫ রানের ইনিংসটি মুগ্ধতা ছড়িয়েছে। এছাড়া ১০৮ বলে আফিফের ৯৮ রানের ইনিংসটি অনেকদিন মনে রাখার মতো। মূলত পেস বোলিং বিভাগই ছিল এই আসরে চোখে পড়ার মতো। বোলিংয়ে পেসাররা পরস্পরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জড়িয়েছেন এগিয়ে যাওয়ার লড়াইয়ে। ফাইনালে ২০ বছর বয়সী ডানহাতি পেসার সুমন ৫ উইকেট শিকার করেন। ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ তামিম একাদশের পেসার সাইফউদ্দিন ইনজুরি কাটিয়ে ফেরার পর ছিলেন দারুণ ধারাবাহিক। ৪ ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়ে শীর্ষে থাকেন তিনি। প্রথম বোলার হিসেবে এ আসরে ম্যাচে ৫ উইকেট নেন তিনি। তবে রুবেলের দল ফাইনালে গেছে, সাইফউদ্দিনের চেয়ে ১ ম্যাচ বেশি খেলেও তাই সমান ১২ উইকেট শিকারে এ অভিজ্ঞ পেসার হয়েছেন টুর্নামেন্টের সেরা বোলার। গত ২ বছর জাতীয় দলের সঙ্গে থাকলেও নিয়মিত খেলতে পারেননি রুবেল। এবার ফিরেছেন দুর্দান্তভাবে। দীর্ঘ সময় জাতীয় দলে জায়গা না পাওয়া তাসকিনের ফেরাটাও ছিল দুর্দান্ত। ৫ ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়ে তিনি হয়েছেন সেরা কামব্যাক করা খেলোয়াড়। শীর্ষ বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে কৃপণ বোলার ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। বাঁহাতি এই পেসারও তার পুরনো ছন্দে ফিরেছেন, ওভারপ্রতি রান খরচ ৩.৫৭ করে।
×