ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কুড়িগ্রামে দমকা হাওয়ায় কৃষকের স্বপ্ন চুরমার

প্রকাশিত: ২১:১৪, ২৭ অক্টোবর ২০২০

কুড়িগ্রামে দমকা হাওয়ায় কৃষকের স্বপ্ন চুরমার

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ কুড়িগ্রামে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না উঠতেই গত তিন দিনে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, দমকা হাওয়া ও ঝড়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে শত শত একর জমির আমন খেত। সদ্য শীষ বের হওয়া ও আধাপাকা ধান খেত লুটিয়ে পড়ায় ভেঙ্গে গেছে কৃষকের স্বপ্ন। বৃষ্টিপাত এবং দমকা হাওয়ায় জেলার চলতি মৌসুমের আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। সদ্য শেষ হওয়া বন্যা থেকে বেঁচে যাওয়া আমন ধানের সবেমাত্র ফুল এসেছে। এই সময় বৃষ্টি আর বাতাসে ফুল ঝড়ে যাচ্ছে। এছাড়া অনেক ধান বাতাসে মাটিতে নুয়ে পড়েছে। যেগুলোতে কোন প্রকার ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা নেই। এছাড়া টানা বৃষ্টিপাতে শাকসবজিরও ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে ধারণা কৃষকদের। ইতোমধ্যে জেলার বেশিরভাগ উঁচুস্থানের লাগানো আমন ধান গাছ মাটিতে নুয়ে পড়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার নাগেশ্বরী ভূরুঙ্গামারী, রাজারহাট, উলিপুর, সদর এবং ফুলবাড়ী উপজেলার বেশিরভাগ উঁচু এলাকার খেতের ধান গাছ নুয়ে পড়েছে। ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের পশ্চিম ফুলমতি গ্রামের কৃষক মমিনুল ইসলাম, হেলাল উদ্দিন, সায়েদ আলী ও জহুরুল ইসলাম জানান, তাদের প্রত্যেকের দেড় থেকে দুই বিঘা করে আমন খেত বাতাসে হেলে পড়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফসলের ক্ষতি হওয়ায় আমরা বড় দুশ্চিন্তায় আছি। আর কয়েকদিন পরেই খেতে ধান পাকতো। জানি না আমাদের কি হবে। নাগেশ্বরী উপজেলার কেদার ইউনিয়নের কৃষক শহিদ মিয়া, আবুল হোসেন জানান, তাদের আমন খেতে কেবল ফুল এসেছে এর মধ্যে বাতাস আর বৃষ্টি হওয়ায় ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দমকা হাওয়ায় জেলার আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি সবজিসহ মরিচেরও ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক শামসুদ্দিন মিঞা জানান, এখন পর্যন্ত বৃষ্টিপাত এবং দমকা হাওয়ায় ২ হাজার ২৭৪ হেক্টর আমনের খেত মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে এর মধ্যে প্রায় ৯শ’ হেক্টর জমির আমন খেত সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। তবে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের হেলে পড়া ধান গাছগুলো ছোট ছোট করে আঁটি বেঁধে তুলে দেয়ার পরামর্শ দেয় হচ্ছে। ধান গাছগুলো তুলে দিলে কিছুটা রক্ষা পাবে কৃষক। কৃষিবিভাগ আরও জানান, এ মৌসুমে ১ লাখ ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আমন চাষ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ১৯ হাজার হেক্টর জমিতে। এর আগে বন্যায় ৯ হাজার ৯৭ হেক্টর আমনের ক্ষতি হয়েছে। এবার বৃষ্টিপাত এবং দমকা হাওয়ার কারণে আরেক দফা ক্ষতিতে পড়েছে আমন ধান। ফলে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় করছেন সংশ্লিষ্টরা।
×