ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জেগে ওঠা পদ্মার চরে ফের বসতি গড়ার চেষ্টা

প্রকাশিত: ২১:০৩, ২৭ অক্টোবর ২০২০

জেগে ওঠা পদ্মার চরে ফের বসতি গড়ার চেষ্টা

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ পানি প্রবাহের গতি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজশাহীর পদ্মায় জেগে ওঠেছে চর। সেই চরে আবারও ঘর বাঁধার চেষ্টা করছেন নিঃস্ব পরিবারগুলো। জেলার বাঘা ও পবার বিভিন্ন চরে আবারও বসতি গড়ার চেষ্টা করছেন বাসিন্দারা। পদ্মার পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইতোমধ্যে জেগে ওঠেছে নতুন নতুন চর। সেখানে নিরাপদে বসবাসের জন্য চরবাসী নির্মাণ করছে ঘরবাড়ি। তারা নতুন করে সেখানে বসবাসের চেষ্টা করছেন। সোমবার জেলার বাঘা উপজেলার কালীদাসখালী চরের আকবর হোসেন বলেন, ভেঙ্গে যাওয়া ঘরবাড়ি নতুন করে মেরামত করছি। মেরামত করার পয়সা নেই। তিন ছেলে তিন মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি। এবারের ভাঙ্গনে বাড়িঘর পদ্মাগর্ভে চলে গেছে। কী করে ঘর মেরামত করব? হাতে তো পয়সা নেই। তারপরও নতুনভাবে চর জেগে ওঠায় ঘরবাড়ি মেরামত করছি। পলাশী ফতেপুর চরের আমিরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, চকরাজাপুর ইউনিয়ন চরের মানুষের প্রধান পেশা কৃষিকাজ ও পাশাপাশি পদ্মায় মাছ ধরা। তাদের যা আয় হয়, এই দিয়ে সংসার চলে। তারপর প্রতি বছর ঘড়বাড়ি ভেঙ্গে যায়। এবারও বন্যার সময় ঘরবাড়ি বিলীন হয়েছে। চর জেগে ওঠায় আবারও সেখানে বসতি গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, প্রতি বছর ঘরবাড়ি মেরামত করতে হয়। ভাঙ্গনের ফলে এক স্থান থেকে অন্য জায়গায় ঘরবাড়ি তুলতে হয়। এভাবেই চলে আমাদের জীবন। শুকনো মৌসুমে কৃষিকাজ, বর্ষায় মাছ ধরে জীবন-জীবিকা নির্ভর করতে হয়। উপজেলার চৌমাদিয়া চরের আঞ্জু মোল্লা বলেন, পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ঘরবাড়ি মেরামত করার চেষ্টা করছি। ঘরবাড়ি মেরামত না করলে থাকা মুশকিল হয়ে যাবে। খোলা জায়গাতে তো বসবাস করা যায় না। একই চরের গোলাম মোস্তফা বলেন, ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গেছে। মেরামত তো করতেই হবে। মেরামত না করলে ছেলেমেয়ে নিয়ে বসবাস কীভাবে করব। চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, বেশ কিছু দিন আগে থেকে পদ্মার পানি কমতে শুরু করেছে। নতুন নতুন চর জেগে ওঠছে। তবে কালীদাসখালী ও লক্ষ্মীনগর এলাকায় যেভাবে পদ্মার পাড় ভাঙ্গছে তা প্রতিকারের ব্যবস্থা না করলে এলাকার চিহ্ন থাকবে না। পদ্মার ১৫টি চরে পরিবার রয়েছে ৩ হাজার ৭৬২। এবারের ভাঙ্গনে প্রায় দেড় শতাধিক পরিবার গৃহহারা হয়েছে। তারা নতুন করে সাধ্যমতো ঘরবাড়ি তৈরি করার চেষ্টা করছে। ভেঙ্গে যাওয়া পরিবারের তালিকা তৈরি করে উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে। এদিকে জেলার পবা উপজেলার বিভিন্ন চরেও নতুন করে বসত-বাড়ি নির্মাণের চেষ্টা শুরু করেছেন চরের ঘরহারা মানুষ।
×