ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নাব্য সঙ্কট ॥ লঞ্চ চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে

প্রকাশিত: ২১:০১, ২৭ অক্টোবর ২০২০

নাব্য সঙ্কট ॥ লঞ্চ চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ২৬ অক্টোবর ॥ কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌপথের পদ্মা নদীতে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে স্বপ্নের সেতু। দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগের অন্যতম নৌপথ এটি। পারাপারের জন্য রয়েছে ফেরি, লঞ্চ ও স্পীডবোট। তবে নাব্য সঙ্কটের কারণে অনেকদিন ধরেই বন্ধ রয়েছে ফেরি চলাচল। সাধারণ যাত্রীদের অন্যতম বাহন লঞ্চও ঠেকে যাচ্ছে প্রমত্তা পদ্মার ডুবোচরে। চ্যালেন দিয়ে লঞ্চ চলাচল করছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। ফলে নৌপথ পাড়ি দিতে বিরক্ত ও ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের। মাঝেমধ্যে নাব্য সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করলে বন্ধ রাখতে হয় লঞ্চ চলাচলও। কয়েকদিন আগেও টানা দু’দিন বন্ধ ছিল লঞ্চ চলাচল। চ্যানেলটিতে খনন কাজ করে চলাচলের উপযোগী করা হলেও তার স্থায়িত্ব থাকছে না। চ্যানেল পার হতে গেলেই লঞ্চের তলদেশে ধাক্কা লাগছে ডুবোচরের। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। জানা গেছে, প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরত্বের কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌপথের অর্ধেক পথ চরঘেরা ক্যানেলের মতো। শিবচরের কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে এ পথটুকু পার হয়ে মূল পদ্মায় যেতে হয় নৌযানগুলোকে। মূল পদ্মার উভয়ঘাটে যাতায়াতে পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে পাড়ি দিতে হয় নৌযান। পদ্মা সেতুর পিলার ঘেঁষে লঞ্চগুলো মূল পদ্মায় আসার আগ পর্যন্ত পথের অনেকস্থানেই ডুবোচরের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। পানি কম থাকায় লঞ্চের তলদেশ ঠেকে যায় মাটিতে। পথটুকু পার হতে লম্বা বাঁশ ফেলে পানির গভীরতা মেপে এগুতে হয় লঞ্চগুলোকে। এতে লঞ্চের তলদেশ ও প্রপেলার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে বলে জানান লঞ্চের চালকরা। শিমুলিয়া থেকে স্বাভাবিক গতি নিয়ে দ্রুততার সঙ্গে মূল পদ্মা নদী পার হয়ে এসে চ্যানেলে প্রবেশ করতেই লঞ্চের গতি কমাতে হচ্ছে। কখনও ধীরগতি আবার কখনও অধিক গতিতে গর্জন তুলছে লঞ্চের ইঞ্জিন। ডুবোচরের সঙ্গে লঞ্চের তলদেশে ধাক্কা লেগে লেগে উচ্চ গতির কারণে এগিয়ে চলে। কিছুপথ গতি নিয়ে গিয়ে ডুবোচরে ধাক্কা লেগে থেমে যাচ্ছে। এরপর পদ্মা সেতুর পিলার ঘেঁষে সতর্কতার সঙ্গে সেতু অতিক্রম করতে হচ্ছে। সেতুর নিচ দিয়ে পানি প্রবাহের গতি বেশি থাকায় লঞ্চগুলোকে অধিক সতর্কতার সঙ্গে চলতে হচ্ছে যাতে সেতুর পিলারে ধাক্কা না লাগে। এদিকে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য চ্যানেলের কিছু অংশ খনন করছে। লঞ্চ চালকদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানান, চ্যানেলে পানি কম থাকায় লঞ্চ ঠেকে যাচ্ছে। মাঝেমধ্যেই লঞ্চ ডুবোচরে আটকে থাকছে। লঞ্চ চলাচল হুমকির মুখে রয়েছে। পানি আরও কমে গেলে লঞ্চ চলাচল বন্ধই হয়ে যাবে। শীত মৌসুমে আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে এই নৌপথ। বিআইডব্লিউটিএর কাঁঠালবাড়ী লঞ্চঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বলেন, চ্যানেলে পানি কম থাকায় লঞ্চের তলদেশ ঠেকে যায়। গত সপ্তাহে এ কারণে দু’দিন লঞ্চ বন্ধ রেখেছিল চালকরা। এখন লঞ্চ চলছে তবে পদ্মা সেতু অতিক্রম করে চ্যানেল পার হতে গিয়ে বার বার ডুবোচরে ধাক্কা খেতে হয় লঞ্চের। কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে মূল নদীতে প্রবেশের আগ পর্যন্ত চ্যানেল অতিক্রম করতে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করে চলতে হয়।
×