ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষক নিয়োগ

প্রকাশিত: ২০:২৩, ২৭ অক্টোবর ২০২০

শিক্ষক নিয়োগ

করোনাকালে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে প্রাথমিকে ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। যার আবেদনপত্র গ্রহণ শুরু হয়েছে ২৫ অক্টোবর থেকে। শেষ হবে ২৪ নবেম্বর। অন্যদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর রাজস্ব খাতে শূন্যপদের বিপরীতে শিক্ষক নিয়োগ দেবে ৪ হাজার ৩২ জন। যার আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে এক নবেম্বর থেকে। করোনার কারণে অর্থনীতির পাশাপাশি বিশেষ করে শিক্ষার যে সমূহ ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। কবে নাগাদ এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে তাও অনিশ্চিত। ইতোমধ্যে উচ্চ মাধ্যমিকসহ স্কুলগুলোতে নিয়মিত পাঠদান ও বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হওয়ায় ঘোষণা করা হয়েছে অটো প্রমোশন। অবশ্য এর বিকল্প মূল্যায়নের একটা ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। তবে তা নিয়ে শিক্ষাবিদদের মধ্যে সমালোচনাও রয়েছে বিস্তর। যা হোক শিক্ষার এই সমূহ ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য আগামীতে কি করণীয় এবং করোনা যদি অভ্যাহত থাকে, তাহলেই বা কি হবে শিক্ষার ভবিষ্যত- তা নিয়ে ভাবতে হবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ অভিজ্ঞজনদের। আপাতত নতুন শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি যে ইতিবাচক তা বলতেই হবে। তবে এর জন্য সর্বত্র স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা আবশ্যক, যাতে নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি অনিয়মের অনুপ্রবেশ না ঘটে। যোগ্য ও মেধাবীরা যাতে স্থান পায় সর্বত্র। দেশে প্রাথমিক শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির ‘দ্য ওয়ার্ল্ড ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট : লার্নিং টু রিয়ালাইজ এডুকেশন প্রমিজ’ শীর্ষক এক বৈশ্বিক প্রতিবেদনে বিভিন্ন দেশের প্রাথমিক শিক্ষার মান সম্পর্কে করা হয়েছে মূল্যায়ন। তাতে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, উগান্ডা, তাঞ্জানিয়া, কেনিয়াসহ আরও নানা দেশের প্রাথমিক শিক্ষার মান নিয়ে জরিপ করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশ অংশে বলা হয়েছে, শিক্ষায় দুর্বল মানের কারণে বাংলাদেশের একজন শিশুর ১১ বছরের স্কুলজীবনের প্রায় সাড়ে ৪ বছর নষ্ট হয়ে যায়। অর্থাৎ, তারা ১১ বছরে শেখে সাড়ে ছয় বছরের পাঠ্যক্রমের সমান। সারাদেশে পঞ্চম শ্রেণীর প্রতি চারজন শিক্ষার্থীর তিনজনই নিজেদের শ্রেণীর উপযোগী সাধারণ মানের অঙ্ক কষতে পারে না। তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ৩৫ শতাংশের বাংলা স্কোর খুবই কম। এর ফলে তারা ভালভাবে বাংলা পড়তে পারে না। ৪৩ শতাংশ বাংলায় কোন প্রশ্নের উত্তরও দিতে পারে না। সে অবস্থায় শিক্ষার্থীদের অঙ্ক ও ইংরেজী শেখার মান যে কতটা শোচনীয় তা সহজেই অনুমেয়। এহেন শিক্ষাব্যবস্থার চারটি বড় কারণও চিহ্নিত করেছে বিশ্বব্যাংক। এগুলো হলো- শৈশবের মানোন্নয়ন কর্মসূচীর দুর্বলতা, নিম্নমানের পাঠদান, দুর্বল স্কুল ব্যবস্থাপনা, সর্বোপরি অপ্রতুল সরকারী বরাদ্দ। এর পাশাপাশি দক্ষ যোগ্য শিক্ষকের কথাও বলতে হবে বৈকি। সে অবস্থায় দক্ষ জনশক্তি গড়তে হলে শিক্ষার মান ও বিনিয়োগ আরও বাড়াতে হবে। নতুন শিক্ষক নিয়োগে নিশ্চিত করতে হবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ব্যবস্থা।
×