ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাদারীপুরে পদ্মা নদীতে মা ইলিশ রক্ষা অভিযানে সন্ত্রাসী হামলা

প্রকাশিত: ১২:৪৯, ২৫ অক্টোবর ২০২০

মাদারীপুরে পদ্মা নদীতে মা ইলিশ রক্ষা অভিযানে সন্ত্রাসী হামলা

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ শিবচরে পদ্মা নদীতে মা ইলিশ রক্ষার অভিযানে হামলা চালিয়েছে এক দল জেলে ও দুর্বুত্তরা। মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব হাবিবুর রহমান ও মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (আরডিসি} মাহবুবুল হকের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে শনিবার বিকেলে এ হামলার ঘটনা ঘটে উপজেলার বন্দরখোলা ও চরজানাজাত এলাকায়। শিবচর উপজেলার মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুর ১টার দিকে পদ্মা নদীর শিবচর উপজেলা চরজানাজাত এলাকায় নদীতে একদল জেলে জাল ফেলে মা ইলিশ ধরার চেষ্টাকালে অভিযান পরিচালিত হয়। এসময় মাদারীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এটিএম সামসুজ্জামান ও শিবচর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদসহ পুলিশের একটি টিমের উপস্থিত ছিলেন। অভিযানের এক পর্যায়ে একদল জেলে ও স্থানীয়রা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় হামলাকারীরা নৌকা থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এসময় ১৪ জন জেলেকে মাছ ধরার অভিযোগে আটক করা হয়। এক পর্যায়ে ওই এলাকা থেকে তারা চলে আসেন। পরে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে এক বছর করে করাদন্ড দেওয়া হয়েছে। শিবচর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এটিএম সামসুজ্জামান বলেন, ‘দুপুর ১টার দিকে পদ্মানদীর শিবচর উপজেলা চরজানাজাত পদ্মা নদীতে একদল জেলে জাল ফেলে মা ইলিশ ধরার চেষ্টা করছে এমন সংবাদ পেয়ে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। এসময় দুর্বৃত্তদের ছোড়া একটি মাটির খণ্ড আরডিসি মাহবুবুল হকের মাথায় এসে পড়লে তিনি সামান্য আহত হন। এছাড়াও অভিযানে অংশ নেয়া চার পুলিশ সদস্য আহত হয়।’ সন্ধ্যায় শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামানের নেতৃত্ব মাদারীপুর সদর ও শিবচর থানা পুলিশ, আনসার, কোস্টগার্ডের প্রায় অর্ধশতাধিক সদস্য একযোগে ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় শিবচর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম রাকিবুল হাসান ও মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত ছিলেন। এসময় ফরিদপুরের সালথা উপজেলা থেকে মাছ ক্রয় করতে আসা তিন যুবককে মাছসহ আটক করা। অভিযানে অংশ নেতৃত্ব দেওয়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের আরডিসি মাহবুবুল হক জানান, ‘নিউজ করার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। পাড়ের পাশ দিয়ে স্পিডবোট গেলে চরের মানুষ এক জায়গায় থাকলে হইহুল্লা করে থাকে। এটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা এবং আহত হওয়ার মতো কোনো নয়। আমি আরডিসি নিজেও আহত নই এবং কাউকে আহত হতে দেখিওনি। আমরা ১৪জন আসামিকে ধরেছিলাম যাদেরকে এক বছর করে কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।’ প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকার পরেও কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না মাছ ধরা। রাতের আধাঁরে শিবচরের পদ্মার নদীর তীরবর্তী চরজানাজাত, কাঠাঁলবাড়ি, মাদবরেরচর, বন্দরখোলা ইউনিয়নের প্রায় দশ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবাধে বিক্রি হচ্ছে মা ইলিশ। কোনো কোনো চরাঞ্চলে হাট বসিয়ে মাছ বিক্রি করছেন জেলারা। এসব এলাকায় দূর-দুরান্ত থেকে শিশু, নারী পুরুষ অল্প দামে মাছ ক্রয় করছেন বলে জানা যায়। উল্লেখ্য, গত ১৪ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত শিবচর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রায় দেড় শতাধিক জেলেকে মা ইলিশ ধরার অভিযোগে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়।
×