ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এসআই আকবর গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে

রায়হান হত্যায় জড়িত কনস্টেবল হারুন ৫ দিনের রিমান্ডে

প্রকাশিত: ২৩:০০, ২৫ অক্টোবর ২০২০

রায়হান হত্যায় জড়িত কনস্টেবল হারুন ৫ দিনের রিমান্ডে

স্টাফ রিপোর্টার সিলেট অফিস ॥ সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে রায়হান হত্যার ঘটনায় হারুন রশিদ নামক এক পুলিশ সদস্যকে গেফতার করেছে পিবিআই। ফাঁড়িতে পুলিশী নির্যাতনে নিহত রায়হান হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত কনস্টেবল হারুন রশিদকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাকে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালতের বিচারক শারমিন আক্তার নীলার আদালতে হাজির করা হয়। এসময় পিবিআই হারুনকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন জানালে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে বিজ্ঞ আদালত। এর আগে শুক্রবার রাতে কনস্টেবল হারুন রশিদকে সিলেট পুলিশ লাইন্স থেকে গ্রেফতার করা হয়। কনস্টেবল হারুন এই ঘটনায় সাময়িক বহিষ্কার ছিলেন। এই মামলায় ২০ অক্টোবর মঙ্গলবার পুলিশ কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়েছে পিবিআই। এই নিয়ে চাঞ্চল্যকর রায়হান হত্যা মামলায় দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হলো। এদিকে নিখোঁজ হওয়ার ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত রায়হান হত্যায় জড়িত অন্যতম অভিযুক্ত এস আই আকবরের খোঁজ মেলেনি। আকবর ইস্যুতে সিলেট মহানগর পুলিশকে নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এই সমালোচনার মুখে বুধবার মহানগর পুলিশের কমিশনার গোলাম কিবরিয়াকে বদলি করা। আর এই ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত আকবর হোসেন ভূইয়া ১২ অক্টোবর থেকে পলাতক রয়েছেন। তদন্তে নেমে পুলিশ হেফাজতে রায়হান উদ্দিনের মৃত্যু ও নির্যাতনের প্রাথমিক সত্যতাও পায় তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটি জানতে পারে ঘটনার দিন ভোর ৩টার দিকে সিএনজিচালিত অটোরিক্সায় করে সুস্থ অবস্থায় রায়হান আহমদকে আনা হয় বন্দরবাজার ফাঁড়িতে। সেখানে ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়ার নেতৃত্বেই তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। নির্যাতনে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে রায়হানকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সকাল ৭টার দিকে মারা যান তিনি। এমন অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ১২ অক্টোবর আকবরসহ ৪ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার ও ৪ জনকে প্রত্যাহার করা হয়। বহিষ্কার দিন থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন আকবর হোসেন। সিলেট মহানগর পুলিশের দাবি, আকবর পালিয়ে গেছেন। নিখোঁজ হওয়ার ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি তার। আকবরকে গ্রেফতারের দাবিতে সিলেটজুড়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুললেও এখন পর্যন্ত তার সন্ধানই বের করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ফলে রায়হানের পরিবারও সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ আরও বাড়ছে। ১২দিনেও আকবরের সন্ধান না পাওয়ায় তিনি দেশে আছেন না দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। আকবর ইতোমধ্যে ভারতের মেঘালয়ে পালিয়ে গেছেন বলেও বিভিন্ন সূত্র দাবি করছে। সিলেটসহ সারাদেশে নারী ও শিশু ধর্ষণ, নির্যাতন এবং রায়হান হত্যা বিচারের দাবিতে বন্ধন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থার উদ্যোগে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নগরীর কাজলশাহ এলাকায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বন্ধন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থার সভাপতি সোহেল আহমদ পাপ্পুর সভাপতিত্বে এবং লিটন আহমদ ও সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক রুমেল আহমদের যৌথ পরিচালনায় এতে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল খালিক, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ লায়েক। ডাঃ নজরুল ইসলাম ভূইয়া, ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ওয়ারিছ মিয়া, সমাজসেবী আব্দুর রব হাজারী, ৩নং ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি মোঃ শামীম আহমদ, দুলাল আহমদ, সালাউদ্দিন বকস সালাই, আলী আহমদ, মুক্তা মিয়া, নাসিরুল ইসলাম, নাসির, অখিল চন্দ্র, সাংবাদিক আব্দুল বাসিত, আলী আহমদ, খোকন মিয়া, বন্ধন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থার উপদেষ্টা আওলাদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমদ প্রমুখ।
×