ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বব্যাংকের কাছে চার হাজার ২৫০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে

প্রকাশিত: ২২:৪৬, ২৫ অক্টোবর ২০২০

বিশ্বব্যাংকের কাছে চার হাজার ২৫০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে বিশ্বব্যাংকের কাছে ৪ হাজার ২৫০ কোটি টাকার ঋণ সহায়তা চাওয়া হয়েছে। করোনার টিকা আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে তা যেন সহজে দেশের সকল জনগণকে দেয়া যায় সেজন্য এই ঋণ দ্রুত মঞ্জুর হওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। দেশের সকল মানুষ করোনার টিকা পাবে। বিশ্বব্যাংকের প্রশংসা করে তিনি বলেন, করোনার শুরুতে সংস্থাটি ১০ কোটি ডলারের সহায়তা দিয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়নে তারা ঋণ দিয়ে যাচ্ছে। কোভিড-১৯ মোকাবেলায় টিকা কিনতেও বাংলাদেশের পাশে থাকবে বিশ্বব্যাংক। অর্থমন্ত্রীর দাবির প্রতি ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে বিশ্বের বড় ঋণদানকারী এই সংস্থাটি। শনিবার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ এর বার্ষিক সভা-২০২০ এর অংশ হিসেবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের নেতৃত্বে একটি ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল ও বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফার ভার্চুয়াল সভায় অংশগ্রহণ করেন। ওই সভায় বিশ্বব্যাংককে টিকা ক্রয়ে জনসংখ্যাধিক্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশের জন্য নায্যতার সঙ্গে দ্রুত ঋণ মঞ্জুরের আহ্বান জানান অর্থমন্ত্রী। এতে তিনি টিকা কিনতে সংস্থাটির কাছ থেকে ৫০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা চান। প্রতি ডলার সমান ৮৫ টাকা ধরে যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৪ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। প্রসঙ্গত, করোনা মোকাবেলায় বর্তমান সরকার নিজস্ব অর্থায়নেও অনেকগুলো কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে। ইতোমধ্যে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে শুধু টিকা কেনার জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ রেখেছে সরকার। কিন্তু কোন দেশেই এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের টিকা চূড়ান্তভাবে বাজারে আনতে সমর্থ্য হয়নি। তবে আশা করছে শীঘ্রই করোনার টিকা পাবে বিশ্ববাসী। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাংলাদেশে টিকা কেনার বিষয়ে দেখভালের জন্য ২৪ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি রয়েছে। কিন্তু সেই কমিটি এখনও এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। অন্যদিকে টিকা কেনার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা বাস্তবায়ন করছেন। এর ফলে অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোতে ভাল অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। আশা করা হচ্ছে, করোনা মোকাবেলা করে দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে বাংলাদেশ। এদিকে, সভার শুরুতে অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের অব্যাহত সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি কোভিড-১৯ টিকা ক্রয়ের জন্য ঋণ সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে আইডিএভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে জনসংখ্যাধিক্যের দিক দিয়ে ৩য় স্থানে থাকা বাংলাদেশের জন্য জনসংখ্যার ভিত্তিতে নায্যতার সঙ্গে দ্রুত ঋণ মঞ্জুরের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য মি হার্টউইগ শেফার এর সহযোগিতা কামনা করেন। অর্থমন্ত্রী কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের গৃহীত দ্রুত ও সময়োপযোগী বিভিন্ন উদ্যোগেরও প্রশংসা করেন। সভায় প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় অনুযায়ী করোনার টিকা আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে দেশের সকল জনগণের জন্য টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণের কথা বলেন। বর্তমান চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জন্য বিশ্বব্যাংকের আইডিএ ১৯ এর আওতায় বরাদ্দকৃত অর্থের অতিরিক্ত হিসেবে করোনা টিকা আমদানি, কেনা, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বিতরণের কাজে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়। কোভিড-১৯ এর কারণে সংঘটিত দেশের বিভিন্নমুখী ক্ষয়-ক্ষতি পূরণের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত কোভিড-১৯ রিকভারি এ্যান্ড রেসপন্স প্রকল্পের মোট বরাদ্দ ৫০ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরে জরুরী ভিত্তিতে অন্তত ২৫ কোটি ডলার ছাড়করণের জন্য বিশ্বব্যাংকের প্রতি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জোর অনুরোধ জানানো সভায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন আলোচনাকালে বলেন, আইডিএ-১৮ এর আওতায় বাংলাদেশ কোর আইডিএ হতে ৫(পাঁচ) বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং এসইউএফ হতে আরও ২(দুই) বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে। যা আইডিএভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে একক সর্বোচ্চ পরিমাণ।
×