ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩০ মার্চ ২০২৪, ১৬ চৈত্র ১৪৩০

নিম্নচাপের প্রভাব কেটে গেছে বৃষ্টিও কমছে

প্রকাশিত: ২২:৪৫, ২৫ অক্টোবর ২০২০

নিম্নচাপের প্রভাব কেটে গেছে বৃষ্টিও কমছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে নিম্নচাপের প্রভাব কেটেছে। কমে আসছে বৃষ্টিপাত। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ রবিবারও দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টিপাত হতে পারে। সোমবার থেকে আবহাওয়া সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়ে আসবে। এর প্রভাবে ভারি বৃষ্টিপাতের কোন আশঙ্কা আর নেই। শনিবার সকালে নিম্নচাপটি লঘুচাপে রূপ নিয়ে দুর্বল হয়ে ঢাকার পাশেই গাজীপুরে অবস্থান করছিল। ফলে এদিন ঢাকার আকাশ সারাদিনই মেঘে ঢাকা ছিল। তবে বৃষ্টিপাত হয়েছে সামান্যই। এদিকে কয়দিনের ভারি বৃষ্টিপাতে পাহাড়ী অববাহিকার নদীগুলোতে নতুন করে বাড়ছে পানি। এদিকে গত ৫ মাসে বেশি সময় ধরে সক্রিয় থাকার পর দেশের অধিকাংশ এলাকা থেকে বিদায় নিয়েছে মৌসুমি বায়ু। দু’একদিনের মধ্যে বাকি এলাকা থেকেও বিদায় নেবে। এরপরই পশ্চিমা লঘুচাপ সক্রিয় হয়ে উঠবে। আগামী বছর বর্ষার আসার আগ পর্যন্ত এর প্রভাবে বৃষ্টিপাত হবে। এছাড়া তারা জানায়, নবেম্বর মাস থেকেই তাপমাত্রা আস্তে আস্তে কমে আসবে। বাতাসে শীতল অনুুভূতি বাড়তে থাকবে। বাজবে শীতের আগমনী বার্তা। এদিকে শনিবার দেশের বিভিন্ন স্থানে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়ছে। আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, নিম্নচাপের সঙ্গে বাংলাদেশের বেশির ভাগ এলাকা থেকে মৌসুমি বায়ুও বিদায় নিয়েছে। আপাতত এক সপ্তাহের মধ্যে দেশে বৃষ্টিপাতের তেমন আশঙ্কা নেই। আবহাওয়াবিদ আবদুল হামিদ বলেন, নিম্নচাপটি দুর্বল হয়ে বাংলাদেশ ভূখ- অতিক্রম করে যাচ্ছে। ফলে বৃষ্টির দাপট ধীরে ধীরে কমে আসবে। নিম্নচাপের প্রভাবে দেশে বৃহস্পতিবার থেকে টানা ভারি বর্ষণ শুরু হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত একই ধারা অব্যাহত ছিল। শনিবার নিম্নচাপ দুর্বল হয়ে লঘুচাপে পরিণত হয়েছে ঢাকার পাশে গাজীপুরে অবস্থান করে। ফলে ঢাকা আকাশ এদিন সকাল থেকেই ঢাকা ছিল। যদিও বৃষ্টিপাত হয়েছে সামান্যই। আবহাওয়াবিদরা জানান, নিম্নচাপের প্রভাব কেটে যাওয়ায় ইতোমধ্যে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে এসেছে। উপকূলে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার কোন আশঙ্কা নেই। তবে এর প্রভাবে আজ রবিবারও কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বর্ষণ হতে পারে। সোমবার থেকে আবহাওয়া সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়ে আসবে। তারা জানান, পরবর্তীতে রাতের তাপমাত্রা ভোরের দিকে কমার প্রবণতা আসবে। নবেম্বরের মাঝামাঝি শীতের বার্তাও থাকবে আবহাওয়ায়। উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্টি গভীর নিম্নচাপটি শুক্রবার পশ্চিম খুলনা উপকূল অতিক্রম করে। স্থলভাগে উঠে বৃষ্টি ঝরিয়ে আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। আবহাওয়া অফিস জানায়, স্থল নিম্নচাপটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে। এটি সুস্পষ্ট লঘুচাপ হিসেবে মানিকগঞ্জ থেকে সরে গিয়ে গাজীপুর ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। এ কারণে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার শঙ্কা আর নেই। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকাগুলোকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। এদিকে নিম্নচাপ দুর্বল হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেশ থেকে মৌসুমি বায়ু বিদায় নিচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশের অধিকাংশ এলাকা থেকে এই বায়ু বিদায় নিয়েছে। বর্ষায় মূলত এই মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। গত জুন থেকে চলতি অক্টোবর পর্যন্ত এটি দেশে বেশি সক্রিয় ছিল। এর প্রভাবে বর্ষার প্রায় ৫ মাস স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়াবিদ হামিদ বলেন, এখনও দেশের কোথাও কোথাও সক্রিয় রয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। এর প্রভাবে কোথাও কোথাও বৃষ্টি হবে। ধীরে ধীরে তা বিদায় নেবে। মধ্য নবেম্বরে শীতল আবহাওয়া বিরাজ করবে। এদিকে আবহাওয়ার রবিবারের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, রংপুর ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুয়েক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে চাঁদপুরে ১৬৭ মিলিমিটার। এ সময় ঢাকায় ৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। ভারি বৃষ্টিপাতে বাড়ছে নদ-নদীর পানি ॥ এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, কয়েকদিনের টানা বর্ষণের কারণে দেশে নদ-নদীর পানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। তবে এর ফলে দেশে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মোঃ আরিফুজ্জামান ভুইয়া বলেন, কয়দিনের ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে পাহাড়ী অববাহিকার সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত এই বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। তবে দেশের সব নদীর পানি বিপদ সীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে পর্যবেক্ষণকৃত ১০১টি সমতল স্টেশনের মধ্যে পানি বেড়েছে ৫৩টি স্টেশনের। কমেছে ৪৫টি স্টেশনের পানি।
×