ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগ আজীবন গণমানুষের অধিকারের কথা বলেছে : পূর্ত প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১৭:৫৮, ২৪ অক্টোবর ২০২০

আওয়ামী লীগ আজীবন গণমানুষের অধিকারের কথা বলেছে : পূর্ত প্রতিমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সব সময় গণমানুষের অধিকারের কথা বলে। তাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটি নেতাকর্মীর একই আদর্শের অনুসারী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ। শনিবার ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার মধুবন কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত তারাকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটির পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এর আগে প্রতিমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কলেজ চত্বরে ভাষা সৈনিক ও সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম শামসুল হকের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনায় মোনাজাতে অংশ নেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন,বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটি নেতাকর্মীর একই আদর্শের অনুসারী হতে হবে।ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে সাধারণ মানুষের কল্যাণে প্রত্যেকের সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে। তবেই জাতির পিতার আদর্শ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে এবং সম্ভব হবে তার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ। শরীফ আহমেদ বলেন, হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য যারা আওয়ামি লীগে অনুপ্রবেশ করেছেন তাদের প্রতি সতর্কবার্তা উচ্চারণ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার প্রতিষ্ঠান নয়। যারা এই মনোভাব পোষণ করেন তারা অবিলম্বে নিজেদেরকে সংশোধন করুন। আওয়ামীলীগ করতে হলে ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে। যারা এর ব্যতিক্রম করার চেষ্টা করবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গৃহায়ন প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত এদেশে সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় যত আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে তার সবগুলোর নেতৃত্ব দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আজীবন গণ মানুষের অধিকারের কথা বলেছে। দলটির প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের সাধারন মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এজন্য তাকে অনেক অত্যাচার-নির্যাতন ও জেল-জুলুমও সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু তিনি কখনও অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। ব্যক্তি বা গোষ্ঠী স্বার্থ উপেক্ষা করে তিনি মানুষের কল্যাণে আজীবন কাজ করেছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তার সুযোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে জাতির পিতার নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে এবং তার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দেশের সেবায় আত্মনিয়োগ করেছেন। তিনিও সকল প্রকার অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেও এদেশের সাধারন মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। পূর্তমন্ত্রী বলেন,বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ এবং সর্বোপরি ডেল্টা প্লান ২১০০ বাস্তবায়নে সকলের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটি নেতাকর্মীর সর্বোচ্চ শ্রম ও ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আপনারা লক্ষ্য করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। সংগঠনের ভেতরে কিংবা বাইরে যে কারো বিরুদ্ধে দুর্নীতির ন্যূনতম অভিযোগ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য যারা আওয়ামী লীগকে ব্যবহার করতে চান অবিলম্বে তারা সাবধান হয়ে যাবেন। সংগঠন কোন ব্যক্তির অন্যায়ের দায়ভার গ্রহণ করবে না। ইতোমধ্যে আপনারা তার দৃষ্টান্ত দেখতে পেয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দুর্নীতিবাজ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ কার্যক্রম একইভাবে অব্যাহত থাকবে। সুতরাং সবার প্রতি আমার অনুরোধ নিজের সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা এবং শ্রমের বিনিময়ে দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন, তাহলে আওয়ামী লীগ আপনার পাশে থাকবে, নতুবা সাংগঠনিক কোনো সহযোগিতা আপনি পাবেন না। তারাকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটির সদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্যাগী এবং যোগ্য নেতা বলেই আপনাদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে। এর অপব্যবহার যেনো না হয়। যে কঠিন দায়িত্ব আপনারা পেয়েছেন নিজের সবটুকু দক্ষতা ও শ্রম দিয়ে এই পবিত্র দায়িত্ব পালন করবেন। একই সাথে সকল অন্যায় অবিচার এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবেন, এতে সরকারের সর্বোচ্চ সহযোগিতা আপনারা পাবেন। অনুষ্ঠানে তারাকান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট ফজলুল হক, তারাকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্য গঠিত কমিটির সভাপতি শ্রী প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক হাজী বাবুল মিয়া সরকার এবং কমিটির অন্যান্য সদস্য বর্গ উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রতিমন্ত্রী তার নির্বাচনী এলাকা তারাকান্দা ও ফুলপুর উপজেলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপ ঘুরে দেখেন এবং সনাতন ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠীর সর্ববৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে তাদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় তিনি দুর্গাপূজা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন এবং সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
×