ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শেরপুরে গৃহকর্মী নির্যাতন ॥ ২৭ দিন পর মৃত্যু

প্রকাশিত: ২২:১২, ২৪ অক্টোবর ২০২০

শেরপুরে গৃহকর্মী নির্যাতন ॥ ২৭ দিন পর মৃত্যু

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর, ২৩ অক্টোবর ॥ শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব শাকিলের স্ত্রী রুমানা জামান ঝুমুরের বর্বরোচিত নির্যাতনের শিকার সেই শিশু গৃহকর্মী সাদিয়া আক্তার ফেলি (১০) ২৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যায় সে। গৃহকর্মী শিশু সাদিয়া শ্রীবরদী পৌর শহরের মুন্সীপাড়া মহল্লার দরিদ্র ট্রলিচালক সাইফুল ইসলামের মেয়ে। শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমিন তালুকদার ওই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শনিবার ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে ওই শিশুর লাশ এলাকায় নিয়ে আসা হবে। এরপর তার নির্যাতনের মামলায় পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্যাতন বা পূর্বের আঘাতের কারণে তার মৃত্যু হয়ে থাকলে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে। একই কথা জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সাইফুল ইসলাম। এদিকে ওই মামলায় গ্রেফতার হওয়া গৃহকর্ত্রী রুমানা জামান ঝুমুর (৩৫) জেল হাজতে থাকলেও বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর মানববন্ধন ও দাবির পরও এখনও গ্রেফতার হয়নি গৃহকর্তা শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন খোকার ছেলে ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব শাকিল। পুলিশ বলছে, মামলায় গৃহকর্তাকে আসামি করা হয়নি। আর স্থানীয় সূত্রসহ গৃহকর্ত্রীর পরিবারের লোকজনের দাবি, গৃহকর্তার জ্ঞাতসারেই তার বাসায় গৃহকর্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে ওই নির্যাতন চালিয়েছে। সাদিয়ার বাবা সাইফুল ইসলাম জানান, হাসপাতাল থেকে পুলিশকে জানানোর পর তার সুরতহাল করা হয়েছে। শনিবার হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত হওয়ার পর মেয়ের লাশ নিয়ে হয়ত এলাকায় ফিরতে পারব। তিনি ওই ঘটনায় গৃহকর্তা আহসান হাবিব শাকিলকে গ্রেফতারসহ ওই দম্পতির উপযুক্ত বিচার দাবি করেন। উল্লেখ্য, শ্রীবরদী পৌর শহরের মুন্সীপাড়া মহল্লার দরিদ্র ট্রলিচালক সাইফুল ইসলামের মেয়ে সাদিয়া ওরফে ফেলি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব শাকিল ও রুমানা জামান ঝুমুর দম্পতির বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করত। কাজে সামান্য ভুল হলেই গৃহকর্ত্রী ঝুমুরের বেদম প্রহার ও খুন্তির ছঁ্যাঁকার কারণে তার মাথায়, পিঠে ও কাঁধে গুরুতর জখম ও দগদগে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। পরে ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে গৃহকর্মী সাদিয়াকে উদ্ধার ও গৃহকর্ত্রী ঝুমুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে গৃহকর্তা শাকিল গা ঢাকা দেন। পরে গৃহকর্ত্রী ঝুমুরকে একমাত্র আসামি করে মামলা গ্রহণ করে থানা পুলিশ।
×