ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ডিজিটাল উদ্যোক্তা

প্রকাশিত: ২১:৫৩, ২৪ অক্টোবর ২০২০

ডিজিটাল উদ্যোক্তা

ফারহানা রহমান, নেশা ও পেশায় পুরোদমে উদ্যোক্তা। ফটোগ্রাফি তার প্রাণের কাজ। এটাকে ব্রত হিসেবে নিয়ে এগিয়ে চলছেন স্বপ্ন সীমানা জয়ের পথে। দেশে হাতেগোনা যে কয়েকজন আলোকচিত্রী এগিয়ে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে গুণগত নারী আলোকচিত্রীর আবার বেশ অভাব- সেখানে ফারহানা এক পরিচিত নাম। ফারহানা বললেন, ‘আমি সব সময়ই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। কখনই কোন ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানের অধীনে কাজ করতে আমি পছন্দ করি না। কলেজ জীবনের শুরু থেকেই ফটোগ্রাফি আমার শখ ছিল। ফটোগ্রাফির পাশাপাশি নিজের একটা বুটিক হাউস খোলার খুব শখ ছিল। ফ্যাশন ডিজাইনের ছাত্রী হওয়ায় সেই স্বপ্নটিও আজ বাস্তব করতে সফল হয়েছি। জনকণ্ঠের কাছে আরও বললেন, ‘এইচএসসি পরীক্ষার পরেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনার্স শেষ করি গত বছর। এখন আমি ফ্যাশন ডিজাইনের ওপর ডিপ্লোমা করছি।’ শুরুটা ছিল একদম সাধারণ। ফারহানা যুক্ত করলেন, ‘শখের বসে খুব অল্প টাকায় সাধারণ একটা ক্যামেরা কিনে ফেলি এইচএসসি শেষে। তোলা ছবিগুলো টুকটাক ফেসবুকে পোস্ট করা শুরু করি। তখন সবাই আমাকে বেশ উৎসাহ দেয়। মানুষের এমন উৎসাহই আমার প্রেরণার মূল কারণ। কটূক্তি ছিল প্রচুর। তার ওপর আমার পরিবার চাইত না আমি বাসার বাইরে রাত করে ইভেন্ট শেষে বাড়ি ফিরি। আত্মীয়স্বজন আমার পরিবারকে নানা রকম নেতিবাচক কথা আমার প্রফেশন নিয়ে বলত। তবে সেদিন বেশি দিন টিকেনি, স্বল্প পারিশ্রমিকে একটা প্রতিষ্ঠানের হয়ে ছবি তোলা থেকে শুরু করে বর্তমানে নিজের প্রতিষ্ঠানে অন্যের কর্মসংস্থান তৈরি করাই সবচেয়ে বড় অর্জন। ফারহানার কথা শুনেই বোঝা যায়, বাংলাদেশের অন্যতম সফল নারী ফটোগ্রাফার হওয়ার পথটা অবশ্যই খুব সহজ ছিল না। অর্জনও প্রচুর। শিশু ফটোগ্রাফার হিসেবে আমি ২০১৮ সালে পুরস্কৃত হই। তা ছাড়াও ‘স্বাধীনতা সংসদ’ পরিষদের পক্ষ থেকে আমি সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে পুরস্কৃত হই। বেবি ফটোগ্রাফিতেও ফারহানা দেশের সেরা একজন। এর বাইরে আমি একটি অনলাইন বুটিক শপ প্রতিষ্ঠা করেছি একদম নিজের ডিজাইনের বুটিক হোম ডেলিভারি দেই আর ইতিমধ্যে আমি আমার আরও একটু স্বপ্ন বাস্তবায়নে সফল হয়েছি তা হলো অনলাইন বুটিক শপ দেয়ার এবং তা খুব ভাল জনপ্রিয়তা পেয়েছে খুব কম সময়ে আলহামদুলিল্লাহ। কিছু জামা আমি নিজে ডিজাইন করি এবং কিছু আমদানি করি। আমার নিজস্ব একটু ছোট কারখানা আছে যেখানে স্বল্প সংখ্যক করমী আমার জন্য কাজ করে এবং ডেলিভারি ম্যান দ্বারা আমি আমার প্রোডাক্ট ক্লায়েন্টদের কাছে হোম ডেলিভারি দেই। আমি সব সময়ই আমার ক্লায়েন্ট এবং কাস্টমারদের কাছ থেকে অনেক ভালবাসা এবং প্রশংসা পেয়ে আসছি শুরু থেকেই। তারা আমাকে এবং আমার কাজকে খুবই পছন্দ করে। আমার কাজ দ্বারা আমি নিজের পরিচয় বানিয়ে নিয়েছি এবং তার জন্য আমি আল্লাহর কাছে অনেক কৃতজ্ঞ। ‘ফারজাহ্-দি হিজাব ব্রান্ড’-এর মাধ্যমে নিজের ডিজাইনের প্রিমিয়াম হিজাব রুচিশীল গ্রাহকদের দিতে পেরে আমি ধন্য। ফারহানার ফটোগ্রাফি প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক লিংক : https://www.facebook.com/dreammatesbd/, উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক লিংক : https://www.facebook.com/fashionfactorybyfarhana/ সাবিনা ইয়াসমিন জুহি, পেশায় একজন গৃহিণী। অনলাইনে নিজের অনেকদিনের স্বপ্ন বুটিক নিয়ে কাজ করার ইচ্ছাটাকে পূর্ণতা দিতে ‘আয়াত কালেকশন হাউজ’ নামের ফেসবুক পেজ খোলেন ২৮ জুলাই ২০১৬তে। মেয়ে হলো তখন, অবসর পেলেই নিজের স্বপ্নের এই পেজে সময় দিতেন। জুহি বললেন, ‘শুরু গল্পটা বলতে গেলে ভালই ছিল, তখন কারচুপি অনেক চলছিল পরিচিত মানুষের কাছে কিছু অর্ডার হাতে নিয়ে আল্লাহ নাম নিয়ে পেজ শুরু করি, প্রথম দিনই অপরিচিত এক আপু ড্রেস অর্ডার করে। আপুটা ড্রেস ডেলিভারি পেয়ে যখন মেসেজ এ জানায় তার অনেক পছন্দ হয়েছে। সেই অনুভূতিটা আমাকে এগিয়ে যাওয়া জন্য অনেক প্রেরণা দিছে। পেজের নামকরণ আমার কাছে স্পেশাল কারণ, আমার মেয়ের নাম জোয়া হোসেন আয়াত। কি কি পণ্য আছে তার পেজে ঘুরে দেখা গেল দেশীয় পণ্য- যেমন ব্লক, বাটিক, স্ক্রিন প্রিন্ট, থ্রি-পিস /শাড়ি আছে, এবং তাঁতের থ্রি-পিস/ শাড়ি আছে, ব্লকের বেডশিট এবং পর্দা, ইন্ডিয়ান ক্যাটালগ ড্রেস এবং পাকিস্তানী পণ্যও আছে তার সংগ্রহে। জুহি বললেন, আমার খুশি লাগে যখন গ্রাহক পণ্য পেয়ে জানায় তারা সন্তুষ্ট। অনেক গ্রাহক এতই সন্তুষ্ট যে তারা যাই কিনুক আমার পরামর্শ নিতে চায়। আমার একটা বিষয়ে আমি একটু স্বকীয়, আমি চাই সব সময় সেরা কোয়ালিটির পণ্য গ্রাহকদের হাতে তুলে দিতে। আরও বললেন জুহি, ‘আমার বিয়ে হয় দশম শ্রেণীতে, বিয়ের পর আমি মাধ্যমিক পরীক্ষা দেই। আমার স্বামীর সহযোগিতায় আমি মাস্টার্স পাস করেছি। আমাকে অনলাইনের এই পেশাতেও প্রচুর সমর্থন করে আমার স্বামী। আমার সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলে আর আমার ছোটবোনও আমার এই কাজে অনেক সাহায্য করে বলেই আমি অনেক দ্রুত সার্ভিস দিতে পারছি। সবার দোয়া চাই সামনের যাত্রায়। জুহির ফেসবুক পেজের লিংক : https://www.facebook.com/Ayaat007/
×