ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে ভুয়া দলিলে বিদ্যুত সংযোগ

প্রকাশিত: ২১:৪৬, ২৪ অক্টোবর ২০২০

চট্টগ্রামে ভুয়া দলিলে বিদ্যুত সংযোগ

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ১৩টি বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্রে ভুয়া গ্রহক কর্তৃক হয়রানির শিকার হচ্ছে খোদ পিডিবি’র প্রকৌশলীরা। পিডিবির সঙ্গে প্রতারণার চেষ্টা করছে ভূমিদস্যু চক্র। কোথাও কোথাও ভুয়া দলিল দিয়ে সংযোগ নেয়ায় পিডিবি পড়েছে হয়রানিতে। ভূমিদস্যুরা পিডিবির সঙ্গে প্রতারণা করে সংযোগ নেয়ায় সচেতনদের অভিযোগের পর তদন্ত করতে হচ্ছে বারবার। ফলে অনেকটা বেকায়দায় পড়ছে বিভিন্ন দফতর। আবার ভূমিদস্যুরা ভুয়া দলিল দিয়ে সংযোগ নেয়ার মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে যা তদন্তে উঠে এসেছে। সম্প্রতি পিডিবির খুলশী বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কেনোয়ার হোসেনের দফতরে এমন প্রতারণা করেছে আকবর শাহ মাজার এলাকার প্রতারক মোঃ সলিমউল্লাহ। তদন্ত শেষে থ্রি ফেইজ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে প্রি-পেইড মিটারও খুলে নেয়া হয়েছে সরকারী পরিত্যক্ত সম্পত্তি থেকে। এ ব্যাপারে খুলশী বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কেনোয়ার হোসেন জনকণ্ঠকে জানান, অবৈধভাবে সংযোগ নিতে ভূমিদস্যুদের চাপাচাপি অনেক বেশি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংযোগ নিতে ভূমিদস্যুরা নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে। আমরা খুব সচেষ্ট। কোন ধরনের বায়নানামা দলিল বা অন্য স্থানের দলিল দিয়ে অপর স্থানে সংযোগ নেয়ার কোন সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে আবেদনের সঙ্গে দাখিল করা দলিলপত্র ও খাজনার দাখিলা পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে সংযোগ দেয়া হয়। আকবরশাহ মাজার এলাকার সলিম উল্লাহ নামের এক প্রতারক আমার দফতরের সঙ্গে প্রতারণা করে সংযোগ নিয়েছিল গত বছরের সেপ্টেম্বরে। দৈনিক জনকণ্ঠে সংবাদ প্রকাশ ও তদন্তের পর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি অবৈধ দখলদারের স্থাপনা থেকে মিটারটি খুলে আনা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, হাজী মোঃ সলিম উল্লাহ আকবর শাহ মাজার এলাকার বেশকিছু সেমিপাকা স্থাপনা গড়ে তুলেছেন সরকারী পরিত্যক্ত সম্পত্তির ওপর। যা লট-৯ মৌজায় বিএস ৭০ দাগে অবস্থিত। পরিত্যক্ত এ সম্পত্তিতে পিডিবির বিদ্যুত সংযোগ নিতে পারছিলেন না দলিল না থাকায়। সরকারী পরিত্যক্ত সম্পত্তি অবৈধ দখলদার চক্র ভুয়া দলিল সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। চতুর সলিমউল্লাহ সরকারী জায়গায় তার নামে বিদ্যুত সংযোগ নিতে দুই কিলোমিটার দূরে থাকা ফয়’স লেক এলাকার একটি দলিল ব্যবহার করেছে। যা আবদুল হামিদ সড়কের বিএস ১১০নং দাগের । মাত্র প্রায় ৫ শতক জায়গার দলিল ব্যবহার করে ৩২ শতক জায়গায় বিদ্যুতের সংযোগ নিতে প্রতারণা করেছেন গতবছরের ১২ সেপ্টেম্বর। এমনকি ওইস্থানে আরেক অবৈধ দখলদার আরেকটি মিটার স্থাপন করেছে। আবার পূর্ব পার্শ্বের সড়কের বিদ্যুত সঞ্চালন লাইনের মাঝখানে কেটে আরেক প্রতারক সংযোগ নিয়েছে আরেক খন্ড সরকারী জায়গায়। তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, সংযোগ বিচ্ছিন্নের পর সলিম উল্ল্যাহ প্রতারণার চেষ্টা করতে গিয়ে আবার নুরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির দলিল দাখিল করেছে। এমনকি সলিম উল্লাহর সঙ্গে এ দলিলের বিপরীতে সরকারী সম্পত্তির বায়নানামা হয়েছে বলেও দাবি করেন খুলশী বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে। প্রকৃতপক্ষে, সরকারি সম্পত্তি আয়ত্বে নিতে বিএস-৭০ দাগ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলছে বলে প্রতিবেদককে ফোনে জানিয়েছেন সরকারী এ জায়গার দকলদার নুরুল ইসলাম। এমনকি সলিম উল্লাহর সঙ্গে কোন ধরনের রেজিস্ট্রি দলিল হয়নি বলে জানান নুরুল ইসলাম। তবে সরকারী এ সম্পত্তি ভোগ দখলের জন্য সলিম উল্লাহর সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের একটি বায়না হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেছেন।
×