স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ পটুয়াখালীর আগুনমুখা নদীতে স্পিডবোট উল্টে নিখোঁজ পাঁচ যাত্রীর সন্ধানে স্হানীয় প্রশাসন অভিযান অব্যাহত রেখেছে। আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত তাদের খোঁজ মেলেনি।
নিখোঁজরা হলেন- রাঙ্গাবালী থানায় কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল মহিবুল্লাহ (৪৫), কৃষি ব্যাংক বাহেরচর শাখার পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান (৩৫), এনজিও কর্মী কবির হোসেন (২৮), দিনমজুর হাসান মিয়া (৩৫) ও ইমরান হোসেন (৩৪)।
বৃহস্পতিবার শেষ বিকেলে স্পিডবোটটি রাঙ্গাবালী উপজেলার কোড়ালিয়া ঘাট থেকে আগুনমুখা নদী পাড়ি দিয়ে গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি ঘাটে আসছিল। প্রচণ্ড ঢেউয়ের তোড়ে ওই স্পিডবোটের তলা ফেটে যায়।
স্পীডবোটটিতে মোট ১৮ জন যাত্রী ছিল। সাঁতরে ও অন্যান্য মাছ ধরার ট্রলারের মাধ্যমে ১৩ জন তীরে উঠতে পারলেও পাঁচ জন যাত্রী এখনও নিখোঁজ রয়েছে।
ঘটনার খবর পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাৎক্ষণিক ভাবে প্রথমে স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রশাসন মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে নিখোঁজদের সন্ধানে চেষ্টা চালায়। পরে গলাচিপা থেকে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড সদস্যরা উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন।
তবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে নদী উত্তাল থাকায় উদ্ধার অভিযানে বিঘ্ন ঘটছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাশফাকুর রহমান বলেন, এমনিতেই ২২ দিন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় নদীতে কোন ট্রলার নাই। তাই নিখোঁজদের খবর পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। তারওপরে আজ শুক্রবারও আগুনমুখা নদী উত্তাল রয়েছে। এরপরও নিখোঁজদের সন্ধান চলছে।
এদিকে উদ্ধার হওয়া কয়েকজন যাত্রী দাবি করেছেন, নদীতে প্রচণ্ড ঢেউ শুরু হলে চালককে বোট তীরে নেয়ার কথা বললেও তিনি শোনেননি।
পটুয়াখালী নৌবন্দর কর্মকর্তা খাজা সাদিকুর রহমান জানান, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে বোট চালানোর অভিযোগে মালিক ও চালকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখন তারা সবাই পলাতক রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বৈরী আবহাওয়া ছিল। নদীবন্দরে ২ নম্বর ও সমুদ্র বন্দরে ৪ নম্বর সতর্কতা সঙ্কেত বহাল ছিল। এর মধ্যে লাইফ জ্যাকেট ছাড়া স্পিডবোট কীভাবে চলাচল করলো সে প্রশ্ন আসায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানিয়েছেন নদী বন্দর কর্মকর্তা খাজা সাদিকুর রহমান।
অপরদিকে, নিখোঁজ যাত্রীদের স্বজনরা ঘটনার পর থেকে আগুনমুখা তীরে ভীড় জমিয়েছে। তাদের মধ্যে চলছে শোকের মাতম।