ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মুন্সীগঞ্জে এখনও সোয়া ২ লাখ টন আলু সংরক্ষিত

প্রকাশিত: ২১:২২, ২৩ অক্টোবর ২০২০

মুন্সীগঞ্জে এখনও সোয়া ২ লাখ টন আলু সংরক্ষিত

সংবাদদাতা, মুন্সীগঞ্জ, ২২ অক্টোবর ॥ মুন্সীগঞ্জে ২০১৯ সালের অক্টোবরে প্রতি কেজি আলু ১৪-১৫ টাকায় খুচরা বাজারে বিক্রি হলেও ১ বছরের ব্যবধানে বুধবার তা বিক্রি হয় ৪৫-৫০ টাকায়। আলুর মূল্য ৫৫ টাকা কেজি পৌঁছলে সরকার প্রথমে ৩০ টাকা পরে তা বৃদ্ধি করে ৩৫ টাকা মূল্য নির্ধারণ করার পর হিমাগার থেকে আগের মতো বের হচ্ছে না। ফলে সরকার নির্ধারিত দামেও বিক্রি হচ্ছে না। আলুর বেপারিরা সিন্ডিকেট করে হিমাগারেই মজুদ রাখছে, পর্যাপ্ত আলু থাকলেও তাই দাম কমছে না। মুন্সীগঞ্জের আলু ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ফরিদপুুর, ভোলা, বরিশাল, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যবসায়ীরা নিয়ে বিক্রি করে। বিগত ১০ বছর যাবত আলুর ভাল দাম না পেলেও চলতি মৌসুমে আলুর দাম পেয়ে খুশি বেপারিরা। আর অধিকাংশ কৃষক আগেই আলু বিক্রি করে দেয়ায় উচ্চ মূল্য তারা পাননি। জেলা সদরে ২০টি, টঙ্গীবাড়িতে ৩০টি, সিরাজদিখানে ১০টি অন্য ৩টি উপজেলায় ৮টিসহ জেলায় মোট ৬৮টি হিমাগারের দুটি বন্ধ থাকায় সচল ৬৬টির প্রত্যেকটিতে খাবার আলুসহ বীজ আলু সংরক্ষিত রয়েছে। হিমাগারগুলোতে ৫,৩৬,৬৩০ মেট্রিক টন আলু সংরক্ষণ করা যায়। তার মধ্যে খাবার উপযোগী ৩,৭০,৫০০ টন এবং বীজ আলু ১,০৯,৫০০ টন হিমাগারগুলোর ধারণ ক্ষমতা। ডায়মন্ড, কার্ডনাল, এস্টারিকস, মালটাসহ উচ্চ ফলনশীল জাতের ৫০ কেজির আলুর বস্তা প্রতিটি হিমাগারেই ৩০ থেকে ৪০ হাজার খাবার উপযোগী আর ৪০ থেকে ৫০ হাজার বীজ আলুর বস্তা সংরক্ষিত রয়েছে। ২০১৯ সালে জেলায় ৩৮,৩০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হলেও চলতি বছর ৩৭,৫৯০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। আলু রোপণের পর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফলন কিছ্টুা কম হলেও ১৩,০২,০২৭ টন আলু উৎপাদন হয়। চলতি বছর বন্যায় অন্য কৃষিপণ্যের ক্ষতি হওয়ায় আলুর ওপর চাপ পড়ে। তাছাড়া করোনাকালে নি¤œ আয়ের মানুষদের আলু ত্রাণ হিসেবে দেয়ায় অন্য বছরের তুলনায় হিমাগারের আলুর পরিমাণ কমে যায়। সানোয়ারা কোল্ড স্টোরেজের ম্যানেজার আবদুস সাত্তার জানান, সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করার পর স্টোরেজ থেকে গ্রাহকরা আগের মতো আলু খালাস করছে না। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর আলু সংরক্ষণ কম হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শাহ আলম জানান, সরকার ভোক্তা পর্যায়ে আলুর দাম নির্ধারণ করেছে, যদি কেউ নিয়ন্ত্রণহীন হয় ভ্রাম্যমাণ আদালত চলমান আছে। জেলায় ৬৬টি হিমাগারে এখনও প্রায় সোয়া ২ লাখ মেট্রিক টন আলু সংরক্ষিত রয়েছে। নীলফামারীতে বীজ আলুর সঙ্কট স্টাফ রিপোর্টার নীলফামারী থেকে জানান, আলু বীজের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করা হয়েছে। সার, কীটনাশক এবং মজুরি হারের দাম না বাড়লেও আলু বীজের দাম দ্বিগুণেরও বেশি হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন আলুচাষীরা। অভিযোগ উঠেছে, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) আলু বীজ এখনও বাজারে না আসায় একটি সিন্ডিকেট বেশি মুনাফার আশায় কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে দাম বাড়িয়েছে। ভুক্তভোগী কৃষকরা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে এ জেলায় ২২ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৩৪ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। প্রতি হেক্টরে ফলন ধরা হয়েছে ২৪ দশমিক ৩ মেট্রিক টন । এদিকে আলু উৎপাদনে প্রতি হেক্টর জমিতে আলু বীজ লাগে দেড় টন। এ হিসেবে নীলফামারী জেলায় এবার ৩৩ হাজার টন আলুর বীজ প্রয়োজন। গত বছর জেলায় আলু চাষ হয়েছিল ২১ হাজার ৭৩৫ হেক্টর জমিতে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানায়, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় আগাম আলু রোপণ করা হয় তিন হাজার ১৮৮ হেক্টর জমিতে। জেলার কিশোরীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, বীজ আলুর কোন ঘাটতি নেই। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি যাতে সরকার নির্ধারিত মূল্যে আলুর বীজ বিক্রি হয়।
×