ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাঠে ফিরতে পারায় খুশি কোচ জেমি ডে

প্রকাশিত: ২৩:২৯, ২২ অক্টোবর ২০২০

মাঠে ফিরতে পারায় খুশি কোচ জেমি ডে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘দলকে প্রস্তুত করতে দুই সপ্তাহ খুবই অল্প সময়। ম্যাচের আগে আমাদের কমপক্ষে আট সপ্তাহ প্রস্তুতির দরকার ছিল। কিন্তু যেহেতু ম্যাচের আগে সময় কম। তাই আমাদের সেভাবেই প্রস্তুত হতে হবে। তবে এই ফিফা ফ্রেন্ডলির মধ্যদিয়ে বাংলাদেশে ফুটবল ফিরছে এটাই বড় বিষয়।’ কথাগুলো জেমি ডের। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের এই কোচ বুধবার এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে উপরোক্ত মন্তব্য করেন। আগামী ১৩ ও ১৭ নবেম্বরে নেপালের বিপক্ষে দুটি ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে এই দুটি প্রীতি ম্যাচের জন্য অল নেপাল ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনের (আনফা) কাছে লিখিত সম্মতি পেয়ে মঙ্গলবার ৩৬ সদস্যের প্রাথমিক দল ঘোষণা করে বাফুফে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত মার্চ থেকে দেশের অনেক খেলাই বন্ধ। পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ক্রিকেট শুরু করেছে। সেই সঙ্গে গুটি কয়েক ফেডারেশন/এ্যাসোসিয়েশনও খেলা শুরু করেছে। তবে এখন পর্যন্ত দেশে কোন আন্তর্জাতিক খেলা অনুষ্ঠিত হয়নি। গত আগস্টে ফিফা বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের জন্য দলটিকেই মূলত ডাকা হয়েছে এই দুটি ম্যাচের জন্য। প্রাথমিক দলকেই আরও কাটছাঁট করে চূড়ান্ত দল গঠন করবেন জেমি। যদিও ছুটিতে এখন তিনি আছেন নিজ দেশ ইংল্যান্ডে। আগামী ২৮ অক্টোবর তার ঢাকায় আসার কথা। এছাড়া ডেনমার্কে অবস্থানরত অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া এবং ফিনল্যান্ড থেকে তারিক কাজীরও সেদিনই ঢাকা আসবেন। এর আগে কোভিড-১৯ টেস্টের মধ্য দিয়ে কাল থেকে শুরু হবে জাতীয় দলের প্রস্তুতি। তবে মূল প্রস্তুতি শুরু হবে কোচ আসার পরেই। তিনি আসার আগ পর্যন্ত সহকারী কোচ মাসুদ পারভেজ কায়সারের অধীনে ফুটবলাররা অনুশীলন করবে। ২৮ অক্টোবর ঢাকায় এলেও কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে জেমিকে। এরপর তিনি দলের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে অনুশীলন করাতে পারবেন সপ্তাহ দু’য়েক। এই সময়টা একটু কম হয়ে গেছে বলে এ নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করলেও বাস্তবতা মেনে নিয়ে দ্রুত মাঠে ফেরাটাকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি। অনআইন মিটিংয়ে অংশ নেয়া বাফুফের জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘নেপালও দুই সপ্তাহের প্রস্তুতিতে ম্যাচ খেলবে, আমরাও তাই। সুতরাং প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলার চেয়ে ফুটবল আয়োজনই এখন আমাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। এই ঘোষণা দিতে পেরে আমি খুশি যে আমরা ম্যাচ খেলব।’ নাবিল আরও বলেন, ‘ফুটবল একার খেলা নয়, পুরো টিমের খেলা। আমরা জেতার জন্য খেলব। তবে জয়ই মুখ্য নয়। এখানে ফুটবলকে মাঠে ফিরিয়ে আনাটাও বড় বিষয়।’ এবারও খেলোয়াড়দের আগে-পরে মিলিয়ে একাধিকবার করোনা পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে। খেলোয়াড়দের যত সম্ভব বিচ্ছিন্ন করে রাখারও (আইসোলেটেড) চিন্তাভাবনার কথা জানিয়ে নাবিলের ভাষ্য, ‘কোভিড টেস্ট করে ক্যাম্পে আসবে সবাই। কোথায় করাবে তা আমরা অনুমোদন করে দেব। আসার পরে তারপরে আরও দুই-তিনবার পরীক্ষা হবে তাদের। যতটা পারা যায় আইসোলেটেড রাখতে হবে। নেপাল দলেরও একই অবস্থা হবে। এ নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা আছে। সেখানে অনেক নির্দেশনা পাওয়া যাবে। সংশ্লিষ্ট সবাই সেখানে থাকবেন। তারা ভাল বুঝবেন। তখন বাস্তবায়ন করা যাবে সবকিছু।’ উল্লেখ্য, বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছিল এ বছরের জানুয়ারিতে। ২৩ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু কাপের সেমিতে বুরুন্ডির কাছে ৩-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। করোনাভাইরাসের দরুণ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের খেলা স্থগিত হয় মার্চের শেষ দিকে। বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ দিয়ে অক্টোবরে মাঠে ফেরার কথা ছিল লাল-সবুজদের। কিন্তু করোনার কারণে সব এলোমোলো হয়ে যায়। বাছাইপর্বও স্থগিত করে ফিফা। তাই তো নবেম্বরে নেপালের বিপক্ষে ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফিরতে মরিয়া বাংলাদেশ দলের কোচ জেমি ডে। কোভিড-১৯-এর কারণে বিশ্বে বেশিরভাগ জায়গায় ফুটবল ম্যাচ হচ্ছে দর্শক ছাড়াই। নেপালের সঙ্গে দুটি ম্যাচে দর্শক উপস্থিতি নিয়ে বাফুফের অন্যতম এই সহ-সভাপতি (নাবিল) এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, ‘পৃথিবীর অন্য দেশগুলোতে দেখতে পাচ্ছি খুব বেশি দর্শক থাকে না। আমরা এখানে স্বল্পসংখ্যক দর্শক রাখতে পারি। আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সিদ্ধান্ত হবে। সেটাই বাস্তবায়ন করব। একেবারেই দর্শকশূন্য খেলা অন্যরকম লাগবে। আশা করছি অল্পকিছু দর্শক যেন রাখতে পারি।’ ম্যাচ সন্ধ্যায় ফ্লাডলাইটের আলোতেও আয়োজিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন কাজী নাবিল।
×