ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনঃনির্বাচন দাবি করেছে বিএনপি

প্রকাশিত: ১৭:২৬, ২১ অক্টোবর ২০২০

স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনঃনির্বাচন দাবি করেছে বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে মঙ্গলবার সারাদেশের বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখানে করে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। বুধবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স এ দাবি জানান। প্রিন্স বলেন, সারা দেশে অব্যাহত নারী ও শিশু ধর্ষণ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও নানা ব্যর্থতা আড়াল করতেই সরকার দেশব্যাপী বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর বেপরোয়া হামলা ও নির্যাতন-নিপীড়ণ অব্যাহত রেখেছে। তবে এসব হামলা ও নির্যাতন চালিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ¯্রােতধারাকে স্তিমিত করা যাবে না। যেকোন মুহূর্তে জনগণ রাজপথ কাঁপিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটাতে ধেয়ে আসবে। প্রিন্স বলেন, মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও উপ-নির্বাচনে সরকার তাদের দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে বরাবরের মতোই ভোট কেন্দ্র থেকে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেয়া, ভোটকেন্দ্র দখলসহ ব্যালট পেপারে গণহারে সিল মারা, জালভোট প্রদান ও সাধারণ ভোটারদের ভোট দিতে প্রচন্ড বাধা দিয়েছে। প্রিন্স বলেন, মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে সরকারদলীয় লোকজন ঘৃণ্য পন্থায় ভোট জালিয়াতিসহ সন্ত্রাসী কার্যকলাপের ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছে বিএনপি। এসব ঘটনায় আহত নেতাকর্মীদের আমরা দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি এবং হামলার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গেস্খফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। প্রিন্স বলেন, বরাবরের মতোই স্থানীয় নির্বাচনগুলোতেও সরকারদলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করতে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত নির্লজ্জ। নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হলেও নিজেদের স্বাধীন স্বত্তা বিকিয়ে দিয়ে সরকারের অঙ্গ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। বিএনপি মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করছে এবং পুনঃতফসিল ঘোষণার মাধ্যমে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জোর দাবি জানাচ্ছে। এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, একতরফাভাবে সরকারদলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করতেই সরকার এধরণের অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। সরকারি দল বিএনপির সমর্থক ও ভোটারদের ওপর হামলা এবং ব্যাপক ভোট জালিয়াতির আশ্রয় নিলেও আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সরকার অনুগত প্রশাসন সেসব দেখেও না দেখার ভান করেছে। এসব অনিয়ম, ভোট জালিয়াতি ও পেশী শক্তির বিষয়ে অভিযোগ করা হলেও রিটার্নিং কর্মকর্তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। প্রিন্স বলেন, বিএনপি মনোনীত প্রার্থীসহ অন্যান্য প্রার্থীদের এজেন্ট কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া এবং সাধারণ ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা প্রদানসহ সন্ত্রাসীদের ব্যাপক তান্ডবের ঘটনায় দেশের নির্বাচনী পরিবেশ ও গণতান্ত্রিক মৃতপ্রায় চেহারা আরও স্পষ্ট হয়েছে। রুহুল কবির রিজভীর অনুপস্থিতিতে বিএনপির অস্থায়ী মুখপাত্র এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, সারাদেশে ধানের শীষের গণজোয়ার সহ্য করতে না পারার জন্যই সন্ত্রাসীরা নির্বাচনে ভোট জালিয়তিসহ ধানের শীষের সমর্থক ও সাধারণ ভোটারদের ভয় পাইয়ে দিতে হামলা চালিয়েছে। বরাবরের মতো নির্বাচনকে একতরফা করতেই মঙ্গলবার সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে এ ধরণের সন্ত্রাসের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, দেশের যেসব এলাকায় স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে সেসব নির্বাচনে সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের ব্যাপক তান্ডব ও অপকর্মের ফলে আরেকবার সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে যে, নির্বাচন কমিশন সরকারের ঠুটো জগন্নাথে পরিণত হয়েছে। প্রিন্স বলেন, দিনাজপুর, নওগাঁ, যশোর, খুলনা, বাগেরহাট, মাদারীপুর, কুমিল্লা, চাঁদপুর, গাজীপুর, লালমনিরহাট, রংপুর, বরিশাল, ময়মনসিংহ, সিরাজগনজ, পাবনা, চুয়াডাঙ্গা, সিলেট, হবিগঞ্জ, লক্ষীপুর ও চট্টগ্রাম জেলায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোট ডাকাতির ঘঁনা ঘটেছে। সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা বিএনপির সমর্থক ও ভোটারদের ওপর হামলা চালিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। সাধারণ ভোটাররা ভোট দেয়া দূরের কথা, ভোটকেন্দ্রেই যেতে পারেনি। সংবাদ সম্মেলনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ধানমন্ডির ল্যাব এইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর আশু রোগমুক্তি কামনায় দেশবাসীর দোয়া চান সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ।
×