ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

স্ত্রীর পায়ে শিকল বেঁধে নির্যাতন

প্রকাশিত: ১৩:০৬, ২১ অক্টোবর ২০২০

স্ত্রীর পায়ে শিকল বেঁধে নির্যাতন

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেশবপুর ॥ কেশবপুরের গৃহবধূ আনোয়ারা খাতুনকে ৫ দিন যাবত ঘরে বন্দী রেখে পায়ে শিকল বেঁধে স্বামী নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় আনোয়ারা বাবার বাড়ি পালিয়ে গেলে তাকে কেশবপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নেশাখোর স্বামী আবুল গোলদারের এই পৈচাশিক নির্যাতনের ঘটনাটি যেন মধ্যযুগীয় বরবরতাকেও হার মানিয়েছে। ভয়ে আনোয়ারার পিতা-মাতা থানান মামলা করার সাহস পাচ্ছেন না। কেশবপুর হাসপাতালে ভর্তি আনোয়ারা খাতুন (২৫) জানান, প্রায় ৮ বছর আগে তার পিতা কেশবপুর উপজেলার সন্যাসগাছা গ্রামের এনায়েতুল্য মোল্যা পাশ্ববর্তী উপজেলা ডুমুরিয়ার চাকুন্দিয়া গ্রামের আবুল গোলদারের সাথে তার বিয়ে দেয়। বিয়ের পর তিনি জানতে পারেন তার স্বামী একজন সন্ত্রাসী ও নেশা করে। প্রতিদিন তার স্বামী সন্ধ্যার আগে বাড়ী থেকে বের হত আর শেষ রাতে নেশা করে বাড়ী ফিরত। কারন জানতে চাইলে তার উপর নেমে আসত অমানুষিক নির্যাতন। আনোয়ারা জানান, সবকিছু জেনেও তিনি গরীব মা-বাবা ও তার সংসারের কথা চিন্তা করে স্বামীর সকল অন্যায় অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করেছেন। সম্প্রতি তার স্বামীর অপরাধমূলক কর্মকান্ড ও মাদক সেবনের মাত্রা বেড়ে যায়। তার অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় স্বামী তার পায়ে লোহার শিকল দিয়ে ঘরের মধ্যে আটকিয়ে রাখে। নেশা করে বাড়ি এসে তার উপর অমানুষিক অত্যাচার চালাতে থাকে। এমনকি তাকে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। শিকলের চাবি সে তার কাছে রাখত যাতে করে আমি পালাতে না পারি। গত ১৭ অক্টোবর রাতে স্বামী বাড়ীতে না থাকার সুযোগে আমি জীবন বাঁচাতে পায়ের শিকল কেটে পালিয়ে আসে । পরের দিন রবিবার (১৮ অক্টোবর) পরিবারের লোকজন পায়ে শিকলবস্থায় আমাকে কেশবপুর হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালে আনোয়ারার মা বলেন, তার জামাই একজন ভয়ংকর সন্ত্রাসী ও নেশাখোর। মেয়ে ও তার পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থে জামাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করতে সাহস পাচ্ছেন না। মামলা করলে তার পরিবারের লোকদেরকে হত্যা করা হবে বলে সে বিভিন্নভাবে হুমকী অব্যাহত রেখেছে।
×