ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কনস্টেবল টিটু গ্রেফতার ॥ ৫দিনের রিমান্ডে

প্রকাশিত: ২৩:০৯, ২১ অক্টোবর ২০২০

কনস্টেবল টিটু গ্রেফতার ॥ ৫দিনের রিমান্ডে

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ সিলেট বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তি দাবিতে সিলেটে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ সমাবেশ অব্যাহত রয়েছে। রায়হান হত্যা মামলায় মঙ্গলবার পুলিশ কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। চাঞ্চল্যকর এই মামলায় এই প্রথম কাউকে গ্রেফতার করা হলো। গ্রেফতারের পর তাকে আদালতে তোলা হলে পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক জিহাদুর রহমান তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন। টিটু বন্দরবাজার ফাঁড়িতে কর্মরত ছিল। রায়হান হত্যার পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশলাইন্সে সংযুক্ত থাকা অবস্থায় পিবিআই কর্মকর্তা তাকে গ্রেফতার করেন। এরপর তাকে আদালতে নিয়ে রিমান্ড প্রার্থনা করা হয়। মঙ্গলবার দিনভর নগরীর কোর্ট পয়েন্ট ছিল প্রতিবাদ বিক্ষোভে উত্তাল। সকালে সিলেট জেলা ও মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের ব্যানারে সমাবেশ হয়। এ সময় কোর্ট পয়েন্টে বিক্ষোভ কর্মসূচী থেকে বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। জানা যায়, পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) অমূল্য কুমার চৌধুরীর গাড়ি যাচ্ছিল। সেই গাড়ি লক্ষ্য করে হঠাৎ সমাবেশে যোগ দেয়া লোকজনের একাংশ এগিয়ে গিয়ে স্লোগান দিতে থাকে। এদের মধ্য থেকে কয়েকজন গাড়িটিতে কিল-ঘুষি দিতে থাকে। একপর্যায়ে কয়েকজন গাড়িটি লক্ষ্য করে ঢিলও ছুঁড়তে থাকে। পরবর্তীতে জেলা ও মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের নেতাদের সহযোগিতায় এবং পুলিশ সদস্যের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম মিয়া বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এসআই আকবরকে নিয়ে জল্পনা ॥ যুবক রায়হানকে নির্যাতনকারী এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে নিয়ে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। আকবর পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ও পুলিশ সদর দফতরেও চলছে নানা বিশ্লেষণ। পুলিশ খুঁজছে এসআই আকবরকে। রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরকে পালাতে সহায়তাকারীদের শনাক্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুলিশ সদর দফতর। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এ্যাডিশনাল ডিআইজি (ডিএন্ডপিএস-১) রেজাউল হক স্বাক্ষরিত এক আদেশে তিন সদস্যের এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি (ক্রাইম এ্যানালাইসিস) মোহাম্মদ আয়ুবকে প্রধান করে গঠিত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুবুল আলম, এসএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার মুনাদির ইসলাম চৌধুরী। তাদের পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আকবরের পলাতক হওয়ার সঙ্গে কোন পুলিশ সদস্যের দায় আছে কিনা তা তদন্ত করবে এই কমিটি। বুধবার সকাল থেকে তদন্ত কমিটির কাজ শুরু করার কথা রয়েছে। আকবরকে গ্রেফতারের গুঞ্জন ॥ রায়হানের (৩৪) মৃত্যুর ঘটনায় বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে গ্রেফতারের গুঞ্জন উঠেছে। কয়েকটি টিভি চ্যানেলে খবরটি সম্প্রচারিত হলেও তথ্যটি এখনও নিশ্চিত করেনি সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে পিবিআই সিলেটের এসপি খালেকুজ্জামান জানান, আকবর গ্রেফতারের বিষয় তিনি কিছু জানেন না। তার কাছে এরকম কোন তথ্য নেই। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে খবরটি তিনিও জানতে পেরেছেন। রায়হান হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (পিবিআই) মুহিদুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোন সংস্থা আকবরকে গ্রেফতার করলে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে বিষয়টি তার জানার কথা। কিন্তু তিনি এ পর্যন্ত আকবর গ্রেফতারের বিষয়ে কিছু জানেন না।
×