ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় এবার বাগেরহাটে রাসমেলা বন্ধ

প্রকাশিত: ১৩:৪৩, ২০ অক্টোবর ২০২০

করোনায় এবার বাগেরহাটে রাসমেলা বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ করোনা দুর্যোগের কারণে এবার রাস উৎসবের মেলা অনুষ্টিত হবে না। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা-অর্চনা ও পূর্ণস্নান যথাযথ অনুষ্টিত হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক পত্রের প্রেক্ষিতে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ-এর সভাপতিত্বে সমন্বয় সভা অনুষ্টিত হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের সন্মেলন কক্ষে এ সভা শেষে আজ মঙ্গলবার দুপুরে সুন্দরবন দুবলাচর রাস উদযাপন জাতিয় কমিটির সভাপতি কামাল উদ্দিন এতথ্য নিশ্চিত করেন। প্রতি বছর কার্ত্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে বাগেরহাটের সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার চরের আলোরকোলে এই রাস উৎসব ও ৩ দিনের মেলা অনুষ্টিত হয়। ১৩৬ বছরের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব মেলা ঘুর্ণিঝড় বুলবুল’র প্রভাবে গত বছরও অনুষ্টিত হতে পারেনি। রাস উৎসব উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সমন্বয় সভায় আরও বক্তব্য দেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কামরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাফিন মাহমুদ, পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন, কোষ্ট গার্ডের লেফ: হাসান মেহেদী, র‌্যাব-৬ এর সহকারী পুলিশ সুপার মাহবুব উল আলম, সুন্দরবন দুবলাচর রাস উৎসব উৎযাপন কমিটির সভাপতি কামাল উদ্দিন, সম্পাদক সোমনাথ দে, প্রদীপ বসু সন্তু, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শিবপ্রসাদ ঘোষ, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অমিত রায়, ক্যাবের সভাপতি ও রাস কমিটির সহ-সভাপতি বাবুল সরদার, প্রেসক্লাবের সম্পাদক বাকী তালুকদার, সাংবাদিক এম আকবর টুটুল, অরিন্দম দেবনাথ, ট্যুর অপারেটর এ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবন’র সভাপতি মঈনুল ইসলাম জমাদ্দার, সম্পাদক নাজমুল হাসান ডেভিড, রাস উৎযাপন কমিটির মোহনলাল হালদার, সুমন দাস, গোবিন্দ হালদার, বিকাশ দাস, তাষার দাস প্রমুখ। এ বিষয়ে গত ১ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপ-সচিব শারাফাত মাহবুব চৌধুরী স্বাক্ষরিত পত্রে উল্লেখ করা হয়, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় এবং ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয় বিধায় রাসপূর্ণিমা উপলক্ষ্যে শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা ও পূণ্যস্নান চালু রেখে রাসমেলা আয়োজন বন্ধ এবং উক্ত সময়ে পূণ্যার্থ/তীর্থযাত্রী সনাতন ধর্মালম্বী ব্যতিত অন্যান্যদের সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি বন্ধ রাখার বিষয়ে মাঠ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষকে নির্দেশনা প্রদানের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সন্ত্রণালয় কতৃক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।” এঅবস্থয় রাস উৎসব উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ রাসমেলা বন্ধ এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাস উৎসবে ধর্মীয় আচার-অনুষ্টানের পক্ষে একমত পোষন করেন। তবে তাঁরা ‘পূণ্যার্থ/তীর্থযাত্রী সনাতন ধর্মালম্বী ব্যতিত অন্যান্যদের সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি বন্ধ’ রাখার সিদ্ধান্তে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন। তাঁদের ভাষায়, রাস উৎসবে সনাতন ধমালম্বি ছাড়াও অন্যান্য ধর্মের হাজার হাজার মানুষ অংশ গ্রহণ করেন। সেখানে গাজীকালুর মূর্তি রয়েছে। ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে বনজীবীরা ঐতিহ্যগতভাবে সেখানে ধর্মীয় ক্রিয়াকর্মে অংশ গ্রহণ করেন। রাস উৎসব কমিটির সভাপতি ছিলেন প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা মেজর(অব) জিয়া উদ্দিন। তাঁর মৃত্যুর পর বর্তমানে তাঁর ভাই কামাল উদ্দিন সভাপতি। তাছাড়া, পূণ্যার্থ বহনের অনেক নৌকা ও ট্রলারের চালক বা’ মাঝি সনাতন ধর্মলম্বী নয়। এ বিবেচনায় উল্লেখিত সিদ্ধান্ত পূণবিবেচনার জন্য তাঁরা মত দেন।
×