ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইউজিসির সভায় সিদ্ধান্ত

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মদক্ষতা যাচাই করে বাজেট বরাদ্দ

প্রকাশিত: ২২:৫৪, ২০ অক্টোবর ২০২০

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মদক্ষতা যাচাই করে বাজেট বরাদ্দ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী অর্থবছর থেকেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মদক্ষতা যাচাই করে বাজেট বরাদ্দের কথা ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। একই সঙ্গে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে গড়ে তুলতে গবেষণায় বরাদ্দের পরিমাণও বৃদ্ধি করা হবে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন মিলনায়তনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাজেট সংক্রান্ত দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত সভার সমাপনী দিনে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ। সভায় ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক শৃঙ্খলা খুবই দরকার। আর্থিক কাজে ভুলের কোন সুযোগ নেই। এ খাতে এক পয়সা পর্যন্ত ছাড় দেয়া যাবে না। তবে বাজেটে বরাদ্দকৃত টাকা যাতে অলসভাবে পড়ে না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এ সময় চেয়ারম্যান সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের আইনকানুন মেনে এবং ইউজিসির অনুমোদন নিয়ে দাফতরিক কাজ শেষ করার অনুরোধ করেন। ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রধান অতিথি হিসেবে সভায় ভার্চুয়ালি যোগদান করেন। কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মোঃ আবু তাহেরের সভাপতিত্বে বাজেট সভায় ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর ও অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কমিশনের সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামান। এছাড়া এ সভায় ইউজিসি’র বিভাগীয় প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। ইউজিসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন ধরনের আর্থিক অনিয়ম সহ্য করা হবে না। আর্থিক বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সকলকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং বিদ্যমান আর্থিক নিয়মাবলী শতভাগ অনুসরণ করতে হবে। ইচ্ছেমতো আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে সুযোগ-সুবিধা নেয়ার কোন সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে উপাচার্য যদি আর্থিক বিষয়ে আউট অব লাইন করে, আপনাদের (কোষাধ্যক্ষ এবং অর্থ হিসাব বিভাগের পরিচালক) দায়িত্ব প্রথমে বিষয়টি তাকে অবহিত করা। এরপরও উপাচার্য যদি কোন অনিয়ম করেন, তাহলে এর দায়ভার তাকেই (উপাচার্য) নিতে হবে। অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যাতে সেন্টার অব এক্সিলেন্স হয়, শিক্ষায় গুণগতমান বজায় রেখে এগিয়ে যায় এবং বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে সম্মানজনক স্থান করে নিতে পারে, সেজন্য গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হবে । পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামীতে বাজেট বরাদ্দ নিয়ে তিনি বলেন, কর্মদক্ষতা মূল্যায়ন করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাজেট বরাদ্দের কথা ভাবছে কমিশন। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মদক্ষতা কমে গেলে সামগ্রিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নিচে নেমে যায়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তাদের অভিন্ন গ্রেড ও বেতন নির্ধারণ দাবি বিষয়ে তিনি বলেন, এক বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ-সুবিধা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে দেয়া যাবে না। কারণ প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব আইন ও বিধি-বিধান দিয়ে পারচালিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন মানে যথেচ্ছার নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন শুধুমাত্র এ্যাকাডেমিক ক্ষেত্রে, আর্থিক বিষয়ে প্রযোজ্য নয়। আর্থিক বিষয়ের জন্য অবশ্যই ইউজিসি’র অনুমোদন নিতে হবে। এ সময় তিনি সিনেট-সিন্ডিকেটে অর্থ সক্রান্ত বিষয় পাস করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সরকারের আর্থিক বিধি-বিধান ও পে-স্কেল অনুসরণের পরামর্শ দেন। অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছতে হলে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে। ‘স্ট্রাটেজিক প্ল্যান ফর হায়ার এডুকেশন ইন বাংলাদেশ-২০৩০’ এ শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। তবে খাতওয়ারি বরাদ্দকৃত টাকা প্রয়োজন অনুযায়ী খরচ করতে হবে।’ অনুষ্ঠানে ২৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক ও বাজেট কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ নেন। সভায় ২০২০-২০২১ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট এবং ২০২১-২০২২ অর্থবছরের মূল বাজেটের সুবিধা-অসুবিধা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়।
×