ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সকল বকেয়া বেতন না দিলে অনলাইনে পরীক্ষা বন্ধ

প্রকাশিত: ১৮:২৬, ১৮ অক্টোবর ২০২০

সকল বকেয়া বেতন না দিলে অনলাইনে পরীক্ষা বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রথম থেকে দশম শ্রেনী পর্যন্ত সকল বকেয়া বেতন ফি এক সঙ্গে পরিশোধ না করলে অনলাইনে পরীক্ষা নেয়া হবেনা-কর্তৃপক্ষের এমন অবস্থানে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে মনিপুর স্কুলের অভিভাবকদের মাঝে। করোনাকালে আর্থিক সংকটের মধ্যে রাজধানীর মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় এ্যন্ড কলেজের এমন অবস্থান প্রত্যাহার চেয়ে আইনি নোটিশও পাঠানো হয়েছে। ক্ষুদ্ধ অভিভাবকরা বলছেন, অনলাইন পরীক্ষার নামে বেতন-ভাতা পরিশোধের যে হুশিয়ারী কর্তৃপক্ষ দিয়েছে তা অমানবিক ও অত্যন্ত দুঃখজনক এবং বেআইনী। কর্তৃপক্ষের টনক না নড়লে আন্দোলনে যাওয়ারও হুশিয়ারী দিয়েছেন অভিভাবকরা। জানা গেছে, গত ১১ অক্টোবর মনিপুর স্কুল এ্যন্ড কলেজ কতৃপক্ষ নোটিশ জারি করে ¤্রণেী শিক্ষকদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের এবং অভিভাবকদের জানিয়েছে, করোনার কারনে স্কুল ছুটি হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত সকল বকেয়া বেতন ফি একসঙ্গে পরিশোধ করতে হবে। সকল মাসের বেতন পরিশোধ করতে হবে, অন্যথায় আসন্ন অনলাইন হোম টেস্ট-২/অনলাইন মডেল টেস্ট-১ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেয়া হবে না। বকেয়া পরিশোধ করে পরীক্ষা না দিলে পরবর্তী শ্রেণীতে ক্লাস করতে দেয়াও হবে না। অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন, এ পরীক্ষা বকেয়া বেতন ভাতা আদায়ের একটি কৌশল। কোভিডের কারনে স্কুল ছুটি হওয়ার পর আগস্ট মাসের শেষে সপ্তাহ থেকে অনলাইনে নামকাওয়াস্তে ক্লাস শুরু করেন। যৌক্তক কারনে দুই মাসের বেতন দাবি করতে পারেন। স্কুল ছুটি হওয়ার পর সব মাসের বেতন দাবি করা অন্যায় ও অযৌক্তক। নোটিশ জারি হওয়ার পর অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। ইতিপূর্বে নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বোর্ডের নিবন্ধন করার সময় সকল বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে বাধ্য করা হয়েছে। স্কুল বন্ধ থাকার পরও এরই মধ্যে যেসব অভিভাবক বেতন পরিশোধ করেছেন, তাদের কাছ থেকে মাসিক পানি, বিদ্যুৎ ও আইটি বিল রাখা হয়েছে। এদিকে মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় এ্যন্ড কলেজের এমন অবস্থান প্রত্যাহার চেয়ে আইনি নোটিশও পাঠানো হয়েছে। শিক্ষা সচিব, ঢাকার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান এবং মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ বরাবর এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশটি পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জে আর খান রবিন। নোটিশ পাওয়ার পর বেতন পরিশোধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। তা না করলে বিবাদীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস একটি বড় সমস্যা। বাংলাদেশও এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্ত নয়। ফলে দেশের প্রায় সব মানুষ আর্থিকসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা কমিয়ে দিয়েছে। কর্মী ছাঁটাই করেছে। এমন পরিস্থিতিতে নিম্ন, নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষদের জীবিকা নির্বাহ করাটা অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার বিভিন্ন খাতে প্রণোদনা দিচ্ছে। সরকার শিক্ষার উন্নয়নের জন্যও আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। এর মধ্যেই মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় বেতন-ভাতা পরিশোধের যে নোটিশ দিয়েছে, তা অমানবিক ও অত্যন্ত দুঃখজনক এবং বেআইনিও বটে। নোটিশকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট জে আর খান রবিন জানান, করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন অনেক পেশাজীবী ও চাকরিজীবী। বিদ্যুৎ বিলসহ বিভিন্ন বিলে বিলম্ব ফি মওকুফ করা হয়েছে। ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সুদ মওকুফ করতে বলা হয়েছে। এ অবস্থায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্তানদের মাসিক বেতন পরিশোধে নোটিশটি অমানবিক। সে কারণেই নোটিশটি দেয়া হয়েছে।
×