ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে আলু

প্রকাশিত: ০০:৫২, ১৮ অক্টোবর ২০২০

বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে আলু

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দাম নির্ধারণের চারদিন পরও সারাদেশে আলু আগের বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকায়। এর আগে সরকার সবদিক বিবেচনায় নিয়ে প্রতিকেজি আলুর দাম খুচরা পর্যায়ে ৩০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল। ইতোমধ্যে ঢাকা, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়েও আলুর দাম কমাতে পারেনি। এছাড়া মুন্সীগঞ্জের কোল্ডস্টোরেজ থেকে আলু বিক্রি করা হচ্ছে না। বেশি দামের আশায় পাইকারি ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিকরা আলু ছাড়ছে না। আর এ কারণে কমছে না আলুর দাম। শনিবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আলু বাড়তি দামে বিক্রি হয়। কয়েকটি বিভাগীয় শহরে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকার কোন বাজারে আলুর দাম কমেনি। এ অবস্থায় সাধারণ ভোক্তাদের কষ্ট বেড়েছে। মান্ডা কাঁচাবাজার থেকে আলু কিনছিলেন সর্দার ম্যাচের বাসিন্দা খালেক মিয়া। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, আলু এতদিন সস্তা ছিল। এখন সেই আলুও ৫০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। কোন সবজি ৮০ টাকার নিচে পাওয়া যায় না। দ্রুত সরকার নির্ধারিত দাম কার্যকর করে আলুর দাম কমিয়ে আনতে হবে। ওই বাজারের সবজি ব্যবসায়ী কামাল জানান, পাইকারি বাজারে দাম কমেনি। তারা বেশি দামে কিনে সামান্য লাভে বিক্রি করছেন। এদিকে, মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বাঘিয়া বাজারের আল মদিনা কোল্ডস্টোরেজসহ ওই এলাকা থেকে গত চারদিনে এক বস্তা আলুও বিক্রি হয়নি। ফলে ওই এলাকার কোল্ডস্টোরেজের শ্রমিকরা অলস সময় পার করছেন। সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করে দেয়ার পর থেকে হিমাগারে আলু বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। অতিরিক্ত মজুদ থাকা সত্ত্বেও আলু বিক্রি করছেন না তারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ৮-১০ দিন আগে ৪০-৪২ টাকা কেজিতে আলু কিনে মজুদ করেছেন তারা। এখন সরকার ২৩ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করতে বলছে। ওই দামে বিক্রি করলে কেজিতে ১৮-২০ টাকা লোকসান হবে। এজন্য হিমাগারে আলু বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন তারা। উল্লেখ্য, সম্প্রতি আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে হিমাগার পর্যায়ে ২৩ টাকা, পাইকারি ২৫ টাকা এবং খুচরা বাজারে ৩০ টাকা নির্ধারণ করে জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদফতর। মূলত এ কারণে হিমাগারে আলু বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসায়ী। কোল্ডস্টোরেজের সেট খালি পড়ে আছে। স্টোরের অর্ধশতাধিক শ্রমিকের কেউ গল্প করছেন, কেউ তাস খেলছেন, কেউ লুডু খেলে সময় পার করছেন। হিমাগারের শ্রমিকরা জানান, আমরা আট বছর ধরে এ স্টোরে কাজ করছি। এখন ভরা মৌসুম। অথচ আলু বিক্রি বন্ধ। কোন ব্যবসায়ী হিমাগারে আলু বিক্রি করতে আসছেন না। আমরা চারদিন ধরে অলস বসে আছি। জমানো টাকা বসে বসে খাচ্ছি। এর আগে কখনও এ অবস্থা দেখিনি। তারা আরও বলেন, প্রতিদিন ৫০০-৬০০ টাকা আয় হতো আমাদের। তা দিয়েই সংসার চলতো। কিন্তু এখন কাজ না থাকায় হতাশায় আমরা। হিমাগারের ম্যানেজার নজরুল ইসলাম বলেন, সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করে দেয়ার পর থেকে হিমাগারে কেউ আলু বিক্রি করতে আসছেন না। ব্যবসায়ীরা আগে বেশি দামে আলু কিনে রাখায় এখন সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করলে লোকসান হবে বিধায় বিক্রি করছেন না। এদিকে, সরকারের বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে বেশি দামে আলু বিক্রি করায় বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বরিশালে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত নগরীর পাইকারি আড়তগুলোতে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় দুই আড়তদারকে জরিমানা করা হয়।
×