ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফেনীতে লংমার্চে হামলা, আহত ৫

প্রকাশিত: ২৩:১৭, ১৮ অক্টোবর ২০২০

ফেনীতে লংমার্চে হামলা, আহত ৫

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফেনী, ১৭ অক্টোবর ॥ দেশব্যাপী ধর্ষণ, নারী নিপীড়ন ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে শাহবাগ থেকে নোয়াখালীর একলাশপুরগামী লংমার্চে ফেনীতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ করার সময় শহরের কুমিল্লা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। এর আগে শহরের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে লংমার্চকারীরা সমাবেশ করেন। লংমার্চকারীরা জানান, ধর্ষণের বিরুদ্ধে সমাবেশ ও প্রচারাভিযান করে ফেনী জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের দিকে লংমার্চ যাওয়ার সময় কুমিল্লা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গেলে কয়েকজন সন্ত্রাসী লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে। এ সময় লংমার্চকারীদের মধ্যে হৃদয়, শাহাদাত, অনিক, যাওয়াদ ও পথচারীসহ পাঁচজন আহত হয়। আহতদের স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। তাদের অভিযোগ, সমাবেশে সরকার ও ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে বক্তব্য দেয়ায় ক্ষমতাসীনরা ক্ষিপ্ত হয়ে লংমার্চকারীদের ওপর পুলিশ প্রহরায় হামলা করেছে। বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ফেনী শহর শাখার সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ সূর্য বলেন, এ হামলা ন্যক্কারজনক। আমাদের কর্মীদের হামলা করে দমিয়ে দিতে চায় সন্ত্রাসীরা। এর আগে শহরের শহীদ মিনারের পাশে দোয়েল চত্বরে সমাবেশ চলাকালে স্থানীয় সংসদ সদস্যের ছবির ওপর লাল রং লাগিয়ে নেতিবাচক বক্তব্য লেখাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে লংমার্চকারীদের বাগবিত-ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে লংমার্চকারীর নেতৃত্বদানকারীরা বলেন, সমাবেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে বহিরাগত কেউ এ ঘটনা ঘটিয়ে আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চেয়েছে। দুপুরে লংমার্চ নোয়াখালীর উদ্দেশে ফেনী ছেড়ে যায়। লংমার্চে আহতরা নোয়াখালীতে চিকিৎসাধীন ॥ পরবর্তীতে দাগনভূঁঞা হামলায় আরও ২০ জন আহত হয়। ফেনীর শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ, ফেনীর কোম্পানীর মোড় ও দাগনভূঁঞা উপজেলায় তারা দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হয়। শনিবার দুপুর ৩টা থেকে লংমার্চে আহত ২৫ জন আন্দোলনকারী নোয়াখালীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে। বাসদ খালেকুজ্জামান গ্রুপের ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল কাদরি জয় অভিযোগ করেন, লংমার্চের সমাবেশে আহত ২৫ জন সমর্থককে নোয়াখালীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ, পূর্ব ঘোষিত নয় দফা বাস্তবায়নের দাবিতে ঢাকা থেকে নোয়াখালীর উদ্দেশে এ লংমার্চের আয়োজন করা হয়। বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহজাহান শেখ, বিকেলে গণমাধ্যম কর্মীদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি আরও বলেন, ঢাকা থেকে যাওয়া ধর্ষণ ও নিপীড়ন বিরোধী লংমার্চে আহতরা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল ও অন্যান্য প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। শেষ বিকেলে নোয়াখালী জেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ্যাড. মোল্লা হাবিবুর রসুল মামুনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বাসদ (মাহবুব), কেন্দ্রীয় নেতা এ্যাড. শ্যামল কান্তি দেসহ অন্যান্য দলীয় নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে বক্তরা নারীর প্রতি বৈষমমূলক সকল আইন ও প্রথা বিলুপ্ত, ধর্মীয় সমাবেশে নারী বিরোধী বক্তব্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাব গণ্য করা, নারীকে পণ্য হিসাবে উপস্থাপন বন্ধ করা, তদন্তের সময় মানসিক নিপীড়ন বন্ধের দাবি জানান।
×