ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ফিরতি লড়াইয়ে মুখোমুখি মাহমুদুল্লাহ-নাজমুল

প্রকাশিত: ২৩:৩৮, ১৭ অক্টোবর ২০২০

ফিরতি লড়াইয়ে মুখোমুখি মাহমুদুল্লাহ-নাজমুল

মোঃ মামুন রশীদ ॥ বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপে একধাপ শেষ হয়ে গেছে। ৩ দলের ওয়ানডে সিরিজে সবাই পরস্পরের মধ্যে একটি করে ম্যাচ খেলেছে। ৩টি দলই একটি করে ম্যাচ জিতেছে এবং একটি করে হেরেছে। এবার দ্বিতীয় ধাপে ফিরতি মোকাবেলা হবে দলগুলোর মধ্যে। আর এই ফিরতি লড়াইয়ে হেরে যাওয়া দলটির জন্য ফাইনালে ওঠা কঠিন হয়ে যাবে। চ্যাম্পিয়নশিপ ম্যাচে নামার রেসে টিকে থাকার লড়াই শুরু আজ থেকেই। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ আবার মুখোমুখি হচ্ছে মাহমুদুল্লাহ একাদশ ও নাজমুল একাদশ। দিবারাত্রির এই ম্যাচটি বেলা ১টা ৩০ মিনিটে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। গত ১১ অক্টোবর এ দু’দলের মধ্যে ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়ায় বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ। সেই ম্যাচে নাজমুল একাদশ জিতেছিল। এবার মাহমুদুল্লাহ একাদশের প্রতিশোধ নেয়ার পালা। আর সর্বশেষ ম্যাচে তামিম একাদশের কাছে হেরে যাওয়া নাজমুল একাদশের লক্ষ্য জয়ের ধারায় ফিরে ফাইনালে ওঠার রাস্তা সুগম করা। সে জন্য দু’দলের মূল চিন্তা আজ ব্যাটিং ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠার। বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপে সবচেয়ে বড় পরীক্ষা দিতে হচ্ছে ব্যাটসম্যানদের। দীর্ঘ সাড়ে ৭ মাস বিরতির পর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলতে নেমে স্বচ্ছন্দে ব্যাট চালাতে পারছেন না স্বীকৃত, অভিজ্ঞরাও। বোলাররাই দাপট দেখিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে পেসাররা দুর্ধর্ষ বোলিং করছেন প্রথম ম্যাচ থেকেই। এর পেছনে পরিবেশ, পরিস্থিতিরও ব্যাপার রয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই কিছুটা বৃষ্টির জন্য মাঠ ও উইকেটের আর্দ্রতা সহায়ক হয়েছে পেসারদের জন্য। আর ব্যাটসম্যানদের দীর্ঘ অনভ্যাসের কারণে টেকনিক ও মৌলিক বিষয়গুলোর সামঞ্জস্যতা খুঁজে পেতে সমস্যা হয়েছে। তাছাড়া মিরপুরের উইকেটের যতœ সেভাবে হয়নি দীর্ঘ সময়। কারণ মূল কিউরেটর গামিনি ডি সিলভা ছুটিতে শ্রীলঙ্কায় গেছেন, আর ফেরেননি। সবমিলিয়ে ব্যাটসম্যানদের ভরাডুবি প্রথম দুই ম্যাচে দেখা গেছে। তবে তৃতীয় ম্যাচের আগেই বিসিবি চট্টগ্রামের কিউরেটর প্রাভীন হিঙ্গানিকারকে এনে কিছুটা সুফল পেয়েছে। উইকেটের চরিত্র কিছুটা হয়তো বদলাতে পেরেছেন তিনি, তাই তৃতীয় ম্যাচে রান দেখা গেছে। এমনকি দুর্দান্ত সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। তার ব্যাটের দিকেই এতদিন তাকিয়ে ছিল নাজমুল একাদশ। অবশেষে রানে ফিরেছেন এ ব্যাটিংনির্ভরতা। কিন্তু দলের বাকিরা ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙ্গতে পারেননি। তাই নাজমুল হাসান শান্ত টানা দ্বিতীয় জয়ের স্বাদ পাননি, হেরেছে দ্বিতীয় ম্যাচ ৪২ রানের ব্যবধানে। এবার সেই ব্যর্থতাই কাটিয়ে ওঠার রসদ হয়তো মুশফিকের ইনিংসটা থেকে পেয়ে গেছেন দলের বাকি ব্যাটসম্যানরা। সৌম্য সরকারের মতো মারকুটে ব্যাটসম্যানও ৪৭ বল খেলে ৯ রান করেছেন। আফিফ হোসেন ধ্রুব, সাইফ হাসান, অধিনায়ক শান্ত নিজে দুই ম্যাচেই সুবিধা করতে পারেননি। সে কারণে ব্যাটিং লাইনে দুয়েকটি রদবদল ঘটতে পারে আজ। কিন্তু বোলিং লাইনআপ দুর্দান্ত দলটির। তাসকিন আহমেদ, আল-আমিন হোসেন, মুকিদুল হাসান মুগ্ধরা পেস বোলিংয়ে দুর্দান্ত। তাদের পাশাপাশি লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন ও অফস্পিনার নাঈম হাসানও দারুণ বোলিং করছেন। এবার তাদের সঙ্গে ব্যাটসম্যানদের জ্বলে ওঠার পালা। মাহমুদুল্লাহ একাদশ প্রথম ম্যাচ নাজমুল একাদশের কাছে ৪ উইকেটে হেরে যায়। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। লো স্কোরিং ম্যাচে তামিম একাদশের বিরুদ্ধে ৫ উইকেটের জয় পায় তারা। তবে সেই ম্যাচে বোলারদের দুর্দান্ত পারফর্মেন্সেই জিতেছে তারা। দুই ম্যাচেই বোলাররা ভাল করেছেন। কিন্তু ব্যাটসম্যানরা ছিলেন একেবারেই ব্যর্থ। বিশেষ করে মারকুটে ওপেনার লিটন কুমার দাস ও নাইম শেখ, অভিজ্ঞ সাব্বির রহমান ও ইমরুল কায়েস বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। তিন পেসার এবাদত হোসেন, রুবেল হোসেন ও সুমন খান দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। স্পিনও ভাল হয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজ, রাকিবুল হাসান, আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের। এখন ব্যাটসম্যানরা তাদের স্বাচ্ছন্দ্য ফিরে পেলেই তা দলের জয়ে ভূমিকা রাখতে পারে। বর্তমান পরিস্থিতিতে মিরপুরের উইকেটে রান করা সম্ভব সেটা বৃহস্পতিবার তৃতীয় ম্যাচে মুশফিকের মাত্র ১০৯ বলে ১০৩ ও মেহেদী হাসানের ৫৭ বলে ৮২ রানের টর্নেডো ইনিংস প্রমাণ করে দিয়েছে। এ দুটি ইনিংস থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মাহমুদুল্লাহ একাদশের ব্যাটসম্যানরা জ্বলে উঠলে বোলাররা আরও নির্ভার হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করতে পারবেন। সেটাই এখন লক্ষ্য দলটির। আজকের ম্যাচ হারলে ফাইনালে ওঠার আশা শেষ হবে না কোন দলেরই। তবে কঠিন হয়ে যাবে রাস্তাটা। তবে বিজয়ী দল অনেকটাই এগিয়ে যাবে ফাইনালের পথে। তাই জয়ের চেষ্টাতেই নামবে দু’দল।
×