ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তিন বছরেও চালু হয়নি শায়েস্তাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

প্রকাশিত: ২১:১৯, ১৭ অক্টোবর ২০২০

তিন বছরেও চালু হয়নি শায়েস্তাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ, ১৬ অক্টোবর ॥ তিন বছরেও প্রস্তাবিত ৫০ শয্যা শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পুরোপুরি চালু করা যায়নি। ফলে একজন চিকিৎসক দিয়ে নতুন এই উপজেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষের নিয়ম রক্ষার চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে উপজেলার উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে। ২০১৪ সালের ২৯ নবেম্বর হবিগঞ্জ নিউফিল্ডে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শায়েস্তাগঞ্জকে উপজেলা ঘোষণা দেন। ২০১৭ সালের ২০ নবেম্বর নিকারের (প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি) সভায় উপজেলা হিসেবে শায়েস্তাগঞ্জকে অনুমোদন দেয়া হয়। ২০১৯ সালের ১৮ জুন শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, দেশের ৪৯২তম উপজেলা শায়েস্তাগঞ্জের দেড় লক্ষাধিক লোকের জন্য সরকারীভাবে মাত্র একজন চিকিৎসক নিয়োজিত রয়েছেন। অথচ প্রায় সাড়ে ৩৯ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ উপজেলায় রয়েছে একটি পৌরসভা ও ব্রাহ্মণডুরা, নূরপুর ও শায়েস্তাগঞ্জ নামে তিনটি ইউনিয়ন। এছাড়াও জেলার ব্যস্ততম স্থান হওয়ায় দেশের নানা প্রান্তের লোকজনের পদচারণ রয়েছে শায়েস্তাগঞ্জে। কেউ অসুস্থ হলে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রাথমিক সেবা পেয়ে থাকেন উপজেলা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। গুরুতর হলে যেতে হয় জেলা সদর হাসপাতালে। এতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে সেবা গ্রহিতাদের। অনুসন্ধানে এসব তথ্য ছাড়াও জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাবিত ৫০ শয্যা শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফ মিলে মোট ৪৭টি পদের প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু এত কম সংখ্যক লোকবল দিয়ে ৫০ শয্যার একটি হাসপাতাল পরিচালনা সম্ভব নয়। তাই ইতোমধ্যে হবিগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিস থেকে ১১১টি পদ সৃষ্টি করার জন্য লিখিতভাবে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আর জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে লোকবল নিয়োগ দেয়ার কার্যক্রমও থেমে আছে। এ অবস্থায় শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার তালুগড়াই গ্রামে এক একর জমির ওপর অবস্থিত শায়েস্তাগঞ্জ উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের একটি রুম মেরামত করে সেখানে চলছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যক্রম। দেড় লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা তিন বছর ধরে চলছে মাত্র একজন মেডিক্যাল অফিসার দিয়ে। তাকে সহায়তা করছেন একজন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট, একজন অফিস সহকারী ও একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার। সেবা নিতে আসা জামাল মিয়া বলেন, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা হয়েছে। তাহলে কেন হাসপাতাল হবে না। দ্রুত প্রস্তাবিত ৫০ শয্যা হাসপাতাল চালু করা হোক। একই কথা জানালেন রোগী লিমা আক্তারও। তাদের মতো অন্য রোগীদেরও একটাই দাবি দ্রুত হাসপাতাল চালু করার। উপজেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি মোঃ আব্দুর রকিব বলেন, এ সরকার ক্ষমতায় এসে পর্যায়ক্রমে শায়েস্তাগঞ্জকে উপজেলা করে দিয়েছে। এটা এলাকার মানুষের অনেক বড় প্রাপ্তি। তিনি আশা করেন, দ্রুত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হবে। শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ গাজীউর রহমান ইমরান বলেন, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে বসে নতুন উপজেলার দেড় লক্ষাধিক বাসিন্দার চিকিৎসা সামাল দিচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ সাদ্দাম হোসেন। সাধ্যমতো তিনি চেষ্টা করে চলেছেন মানুষের সেবা দিতে।
×