ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

লীগ কমিটির সভায় বর্ষপঞ্জিকা প্রণয়ন হতে পারে আজ

প্রকাশিত: ২৩:৪০, ১৫ অক্টোবর ২০২০

লীগ কমিটির সভায় বর্ষপঞ্জিকা প্রণয়ন হতে পারে আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের পর, অনেক প্রতীক্ষার পর অবশেষে কয়েক মাস অগে নতুন ঘরোয়া ফুটবল মৌসুম শুরুর ঘোষণা দিতে পেরেছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) পেশাদার লীগ কমিটি। সবকিছু ঠিক থাকলে নতুন মৌসুম (২০২০-২১) শুরু হতে যাচ্ছে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে। ফেডারেশন কাপ দিয়ে যা শুরু হবে। দল বদল শুরুর কথা এই অক্টোবরেই। স্থানীয়দের জন্য সেটা স্থায়িত্ব হবে তিন সপ্তাহ এবং বিদেশীদের জন্য হবে চার সপ্তাহব্যাপী। আগের মৌসুমে বিদেশী খেলোয়াড় নিবন্ধন করাতে পারত পাঁচজন, মাঠে খেলতেন চারজন। এবার বিদেশী নিবন্ধন করানো যাবে চারজন, খেলানোও যাবে চারজনকে। চার বিদেশীদের মধ্যে এশিয়া কোটায় নেয়া যাবে একজনকে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের ভেন্যু হবে ঢাকাসহ মোট চারটি। ঢাকার বাইরের ভেন্যুগুলো সব ঢাকার আশপাশেই হবে, যেন ক্লাবগুলো দিনে খেলে আবার দিনেই ঢাকায় ফিরে আসতে পারে। ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ফুটবলের বাইরে অলস সময় কাটাচ্ছেন ফুটবলাররা। যদিও ফিটনসে ধরে রাখতে নিজ উদ্যোগে অনুশীলন করছেন তারা, কিন্তু তা তো পরিপূর্ণ বা শতভাগ হচ্ছে না। ফলে তারাও এতে তৃপ্ত নন। অস্থির হয়ে পড়েছেন তারা আবারও মাঠের খেলায় ফিরতে। বাফুফে যদিও তাদের আশ্বাস দিয়েছে শীঘ্রই মৌসুম শুরু করার, কিন্তু বিভিন্ন কারণে সেটা এখনও করে দেখাতে পারেনি তারা। এ নিয়ে ফুটবলারদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছেই। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাতিল হওয়া বিগত মৌসুমের ন্যায্য ও বকেয়া পারিশ্রমিক এখনও না পাওয়ার ক্ষোভও। তবে এই সমস্যার সমাধান যারা খুব সহজেই করতে পারে, সেই ক্লাবগুলোই করছে গড়িমসি, করছে টালবাহানা। এ নিয়ে পরিস্থিতি এখন অনেকটাই বিস্ফোরণমুখী! ক্লাবগুলোর সঙ্গে ফুটবলারদের এই দ্বন্দ্বের মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করছে বাফুফে। নতুন মৌসুম শুরুর আগে ফুটবলারদের সঙ্গে ক্লাবের দেনা-পাওনার বিষয়টি নিষ্পত্তিতে ভূমিকা রাখতে চায় দেশীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ এই নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করতেই আজ বৃহস্পতিবার বাফুফের পেশাদার লীগ কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নতুন করে নির্বাচিত হওয়ার পর এটিই হবে লীগ কমিটির প্রথম সভা। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ, ‘আমাদের প্রফেশনাল ফুটবল লীগের একটি সভা রয়েছে আগামীকাল (আজ)। বাফুফে ভবনে বিকেল ৩টায় সভাটি অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে আমরা আমাদের আসন্ন ২০২০-২১ ফুটবল মৌসুমে যে খেলা শুরু হবে, দল বদলসহ বিভিন্ন বিষয়, প্রফেশনাল ফুটবল লীগের ক্যালেন্ডার প্রণয়নসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করব।’ সোহাগ আরও যোগ করেন, ‘একই সময়ে খেলোয়াড়দের বকেয়া পাওনার বিষয়টিও আলোচনা করব। আসন্ন মৌসুমে খেলোয়াড়রা তাদের বিভিন্ন বিষয়গুলো সম্পর্কে একটি লিখিত প্রস্তাবনা বাফুফের কাছে দিয়েছে। মঙ্গলবার বাফুফে ভবনে ৩৫ ফুটবলার উপস্থিত ছিলেন। তাদের প্রস্তাবনা নিয়ে তাদের ম্যাসেজটা প্রফেশনাল ফুটবল লীগ কমিটির কাছে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করব। এ বিষয়গুলো যাতে মিটিংয়ে আলোচনা করা হয়।’ উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ফুটবলারদের পারিশ্রমিকটি যাতে অন্তত ৪০ শতাংশ করা যায় সে বিষয়ে চেষ্টা করবেন বলে ফুটবলারদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন। ইতোমধ্যে তিনি এ বিষয় নিয়ে প্রফেশনাল ফুটবল লীগ কমিটির চেয়ারম্যান বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীর সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও নিশ্চিত করেছেন সোহাগ, ‘ইতোমধ্যে প্রেসিডেন্ট লীগ কমিটির চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানিয়েছেন। ২০২০-২১ মৌসুমে এডিশনাল যে ২৫ শতাংশ অর্থ দেয়ার যে বিষয়টা সেটা যেন আরেকটু বাড়ানো হয়। সেটা যদি ৪০ শতাংশের কাছাকাছি রাখা হয়। যদিও ফুটবলারদের দাবি হচ্ছে ৬০ শতাংশ। ফুটবলাররা গতকাল (মঙ্গলবার) যে কাগজ দিয়েছেন সেখানে লেখা আছে ন্যূনতম যেন ৬০ শতাংশ হয়। প্রেসিডেন্ট সেখানে বলেছেন সেটা ৪০ শতাংশ যেন হতে পারে, সে বিষয়ে ব্যক্তিগতভাবে ক্লাবগুলোর সঙ্গে কথা বলবেন। আগামী পেশাদার লীগ কমিটির মিটিংয়ে এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে।’ তবে সোহাগ মনে করেন শীঘ্রই ফুটবল মাঠে গড়াতে হলে ক্লাব ও ফুটবলার উভয়কেই ছাড় দিতে হবে। বাফুফে সভাপতিও এমনটাই বলেছেন। এ প্রসঙ্গে সোহাগ বলেন, ‘তিনি ফুটবলারদের অনুরোধ করেছেন তারাও যেন তাদের জায়গা থেকে কিছুটা ছাড় দেয়। ক্লাবগুলোকে অবশ্যই তাদের দিকটাও দেখতে হবে। তাদেরও ছাড় দিতে হবে। সবাই যার যার জায়গা থেকে ছাড় দিয়ে এমন একটা অবস্থানে আসতে হবে, যাতে করে ক্লাব ও ফুটবলার কারোরই ক্ষতির মুখে পড়তে না হয়। এবং আমরা যেন সুষ্ঠু সুন্দরভাবে দলবদলটা করতে পারি।’
×