ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

একক বক্তৃতায় আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের জন্মদিন পালন

প্রকাশিত: ২১:৩৮, ১২ অক্টোবর ২০২০

একক বক্তৃতায় আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের জন্মদিন পালন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির যথার্থ ইতিহাস রচনায় স্মরণীয় হয়ে আছে তার নাম। আমৃত্যু হাতে লেখা পুরনো পুঁথি সংগ্রহ করেছেন। বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে তিনি প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাংলা কাব্যের হাতে লেখা পান্ডুলিপি (পুঁথি) অনুসন্ধান ও উদ্ধার করেছেন। অজ্ঞাত-লুপ্ত ঐতিহ্য-উপাদানের সন্ধান, জন্মভূমির মহিমা-প্রচার ও স্বদেশ-আবিষ্কারের চেতনাই ছিল তার কর্মধারার মূল ব্রত। প্রাচীন পুঁথি সংগ্রহ ও সাহিত্যের ঐতিহ্য অন্বেষণকারী এই কীর্তিমান হচ্ছেন আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ। রবিবার ছিল তার ১৪৯তম জন্মবার্ষিকী। বাংলা একাডেমি আয়োজিত একক বক্তৃতানুষ্ঠানের মাধ্যমে উদ্্যাপিত হলো তার জন্মদিন। সাহিত্যবিশারদ : পুঁথিপ্রেমিকের লোকসংস্কৃতি সন্ধান শীর্ষক বক্তৃতাটি উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট গবেষক অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরী। একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আয়োজনে স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। সভাপতিত্ব করেন একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরী বলেন, আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের আগ্রহ ও সন্ধিৎসা কেবল পুঁথির জগতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। তার বিচিত্রমুখী অনুরাগ ও কৌতূহল প্রসারিত হয়েছে ইতিহাস, লোকসংস্কৃতি, ধর্মতত্ত্ব, ভাষাতত্ত্ব, সাহিত্য-সমালোচনা, রাজনীতি, এমনকি আধুনিক সাহিত্যের প্রতিও। ঐতিহ্য-অন্বেষার সূত্রেই লোকসংস্কৃতিচর্চার সূচনা করে তিনি। একদিকে তিনি ছিলেন ফোকলোর-উপকরণের নিষ্ঠ সংগ্রাহক, অপরপক্ষে এই বিষয়ের প্রাজ্ঞ আলোচক। স্বাগত বক্তব্যে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, বাংলা একাডেমি মহান গবেষক আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একাডেমির মূল মিলনায়তনের নামকরণ করেছে ‘আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তন’। সাহিত্যবিশারদের রচনাবলী, অভিভাষণসমগ্র, জীবনী ও নিবেদিত প্রবন্ধ সঙ্কলন প্রকাশের মাধ্যমে একাডেমি বাংলা সাহিত্যে তার অবদানকে স্মরণ করেছে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই। আগামী বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের জন্মের সার্ধশতবর্ষকে কেন্দ্র করে তার জীবন ও কৃতি বিষয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাকর্ম সম্পন্ন হবে বলে আমরা আশা করি। সভাপতির বক্তব্যে শামসুজ্জামান খান বলেন, আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ ছিলেন এক অসাধারণ বঙ্গীয় মনীষা। বাঙালী মুসলমানের মাতৃভাষা বিতর্কের আদিপর্বে বাংলার পক্ষে অবস্থান নিয়ে তিনি আমাদের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন। পাশাপাশি বাঙালীর আত্মসত্তা বিকাশের পূর্ণ পরিচয় ধারণ করেছে সাহিত্যবিশারদের পুঁথিসাধনা, লোকসংস্কৃতিচর্চা এবং তার সামগ্রিক জীবনসংগ্রাম।
×