ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় প্রাণী প্রজনন

কাজল-লাইলী দম্পতির কোলজুড়ে এলো আরেক শাবক

প্রকাশিত: ২১:৪৯, ১০ অক্টোবর ২০২০

কাজল-লাইলী দম্পতির কোলজুড়ে এলো আরেক শাবক

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ দৃষ্টিনন্দন পরিবেশে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। একদিকে পাহাড়বেষ্টিত ফয়’স লেক। কৃত্রিম এ লেকের কোল ঘেঁষেই গড়ে উঠেছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। ব্যতিক্রমধর্মী এ চিড়িয়াখানায় শুধুই যে পশুপাখি রয়েছে তা নয়, শিশুদের আকর্ষণে রয়েছে কিছু ইভেন্ট কর্নার। পরিপাটি এ চিড়িয়াখানা সযত্নে গড়ে তোলা হয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে। চিড়িয়াখানাটি তদারকিতে রয়েছেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমীন। চিড়িয়াখানার আয়তন বেশি না হলেও পক্ষিকুল ও প্রাণিকুলের প্রজননের যথেষ্ট পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। ফলে বাঘ, হরিণ, অজগর এমনকি ময়ূরপঙ্খীও থেমে নেই প্রজনন থেকে। বছর পার না হতেই খবর পাওয়া যায় শুভ জন্মের। গত মঙ্গলবার বাংলাদেশের চিড়িয়াখানাগুলোর মধ্যে সংরক্ষণে থাকা একমাত্র চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় জন্ম নিয়েছে সাম্বার হরিণ শাবক। এ নিয়ে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচটিতে। কাজল-লাইলী হচ্ছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার সাম্বা হরিণ দম্পতি। এ দম্পতির প্রজননে জন্ম নিয়েছে তুলতুলে নরম শরীরের সাম্বা শাবক। অল্প কিছুদিনের মধ্যে এ শাবকেরও নাম দেয়া হতে পারে বলে জানা গেছে চিড়িয়াখানা সূত্রে। উল্লেখ্য, এ চিড়িয়াখানায় থাকা অনেক প্রাণিকুলেরই নামকরণ করা হয়েছে। এমনকি বিয়ের আয়োজনও করা হয়েছে দুই সিংহ দম্পতির। এমন রেকর্ডও রয়েছে এ চিড়িয়াখানায়। জানা গেছে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় কাজল-লাইলীর সংসারে এসেছে ফুটফুটে সাম্বা হরিণ শাবক। উপমহাদেশে এ সাম্বা হরিণ বিরল হলেও বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দৃষ্টিনন্দন ছোঁয়ায় গড়া চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় রয়েছে পাঁচটি। দেশের আর কোন চিড়িয়াখানায় সাম্বার হরিণ নেই। এমন তথ্য কর্তৃপক্ষের। এ ধরনের হরিণ সর্বোচ্চ ২৪ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকার রেকর্ড রয়েছে আর্কাইভে। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় আরও দুই প্রজাতির হরিণ রয়েছে। এগুলো হলো মায়া হরিণ ও চিতা বা চিত্রল হরিণ। এ চিড়িয়াখানায় চিত্রল হরিণের সংখ্যা ২২টি আর মায়া হরিণ রয়েছে চারটি। সাম্বার হরিণ নতুন শাবকসহ পাঁচটিতে উন্নীত হয়েছে। অবাক বিষয়, চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ সাম্বার হরিণ শাবক ভূমিষ্ঠের জন্য পরিপাটি আয়োজনও করেছিল। খড়ের গাদায় এ হরিণ শাবকের জন্ম হয়েছে অনায়াসে। কোন ধরনের ত্রুটি-বিচ্যুতি ছাড়াই চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডাঃ শাহাদাত হোসেন শুভর তত্ত্বাবধানে জন্ম নিয়েছে অনেকটা বিলুপ্তপ্রায় সাম্বার হরিণ শাবক। প্রত্যক্ষভাবে দেখা গেছে, পাহাড়তলীর ফয়’স লেকের পাহাড়ে মায়া হরিণের অবস্থান রয়েছে বিভিন্ন স্থানে। ভোর থেকে সূর্য ওঠার কিছুক্ষণ পরও মায়া হরিণের গুটি কয়েক সংঘবদ্ধ হরিণ দেখতে পাওয়া যায়। বিশেষ করে আকবর শাহ মাজার সংলগ্ন পাহাড়তলী রেলওয়ে কবরস্থানে প্রায় প্রতিদিনই তৃণলতা খেতে আসে মায়া হরিণ। বিশাল এ কবরস্থানে ফাঁকে ফাঁকে ঘুরে বেড়ায় মায়া হরিণের দল। কমপক্ষে সাত থেকে আটটি মায়া হরিণ সকালে এ কবরস্থানে দেখতে পাওয়া যায়। তবে কুকুরের উপদ্রব থাকায় ঝোপের আড়ালে অনেক সময় লুকিয়ে থাকতে দেখা যায় মায়া হরিণগুলোকে। অনেক সময় মায়া হরিণের শাবকও দলছুট দম্পতির সঙ্গে ফয়’স লেকের পাহাড় থেকে পাশর্^বর্তী বিভিন্ন পাহাড়ে চলে আসে।
×