ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মূলে হাত না দিলে কোন অনিয়মই দূর হবে না ॥ প্রধান বিচারপতি

প্রকাশিত: ০০:৩৩, ৮ অক্টোবর ২০২০

মূলে হাত না দিলে কোন অনিয়মই দূর হবে না ॥ প্রধান বিচারপতি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, সমস্যার মূলে হাত না দিয়ে আমরা যত অনিয়মের কথাই বলি না কেন, কোন অনিয়মই দূর হবে না। আগে মূলে আঘাত করতে হবে। তার আগে অনিয়ম দূর হবে না। তিনি বুধবার প্রয়াত এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের স্মরণে আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করে ল রিপোর্টার্স ফোরাম। প্রধান বিচারপতি বলেন, কিছুদিন আপীল বিভাগে জেল আপীলের রায় হয়েছে। জেল আপীল করতে গিয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অনেক আসামিকে আমরা ছেড়েছি। কারণ আমরা সংবিধানের অধীনে শপথ নিয়েছি, যে আমরা ন্যায় বিচার করব। সততার সঙ্গে ন্যায় বিচার করব। সেটা শপথের প্রতি সম্মান দেখিয়ে বিচার করেছি, ছেড়েছি। আপনারাও (সাংবাদিকরা) এটি নিয়ে বড় বড় প্রতিবেদন করেছেন। তিনি বলেন, এক মামলায় তিনজনের ডেথ নিশ্চিত (মৃত্যুদণ্ড বহাল) করেছি। এটা নিয়ে কোন সংবাদপত্রে কোন নিউজ নেই। কারণ এখন সারাদেশে নারীদের ওপর এত নির্যাতন যে, সরকার পর্যন্ত বিব্রত। সরকারের মন্ত্রী পর্যন্ত বলেছে, আমরা ক্ষমতায়, আমরা এটার দায় এড়াতে পারি না। আমরা জুডিসিয়ারিতে আছি আমরাও চাই উপযুক্ত বিচার হোক। মাহবুবে আলমের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, তার একটা সবচেয়ে বড় কথা ছিল বিচার অঙ্গনে যত অনিয়ম আছে এগুলো দূর করতে হবে। তিনি আমাকে বলেছেন, সেন্ট্রাল ফাইলিং করেন। এটা যদি করেন তাহলে কোর্টের ৫০ শতাংশ অনিয়ম দূর হয়ে যাবে। আমি বারের (সুপ্রীমকোর্ট বার) নেতৃবৃন্দকে বলেছি আপনারা যদি সেন্ট্রাল ফাইলিংয়ে আসেন তাহলে বারের যে অনিয়ম আছে তার ৫০ শতাংশ চলে যাবে। কিন্তু বারের থেকে বলল সেন্ট্রাল ফাইলিং হবে না। আমরা (বার) আমাদের চয়েস অনুযায়ী কোর্ট নির্বাচন করব। আমি আশা করব বার (সুপ্রীমকোর্ট বার) মাহবুবে আলমের ইচ্ছাটা অচিরেই বাস্তবায়ন করবেন। আমিও ব্যক্তিগতভাবে চাই, সেন্ট্রাল ফাইলিং যদি হয় তাহলে সুপ্রীমকোর্টের অনিয়ম ৫০ শতাংশ থাকবে। বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাংলাদেশের এ্যাটর্নি জেনারেল মরহুম মাহবুবে আলমের অনেক বিরল গুণ ছিল। কেউ তার সঙ্গে রাগ করলেও তিনি রাগ করতেন না। তিনি ছিলেন সৎ ও অধ্যবসায়ী। কাজের প্রতি ছিল তার শতভাগ কমিটমেন্ট। তার এই আদর্শগুলো অনুসরণ করতে পারলে আইনজীবীদের অনেক লাভ হবে। আইনমন্ত্রী বলেন, মাহবুবে আলমের প্রতি আইন অঙ্গনের কিছু বিশেষ ঋণ আছে। বিচার বিভাগের বিশেষ করে সুপ্রীমকোর্টের মর্যাদা ও ভাবমূর্তি বজায় রাখার ব্যাপারে তিনি কখন আপোস করেননি। সম্পূর্ণ অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ছিলেন তিনি। তার আদর্শগুলো অনুসরণ করা গেলে এই ঋণ কিছুটা হলেও পরিশোধ হবে। ফোরামের সভাপতি মাশহুদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আলোচনায় স্মৃতিচারণ করেন বিশেষ অতিথি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, আপীল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী ও এ্যাটর্নি জেনারেলের ছেলে সুমন মাহবুব।
×