ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সীমান্ত পিলারে ‘বাংলাদেশ’ লেখার কাজ শেষ করেছে বিজিবি

প্রকাশিত: ২৩:২৪, ৮ অক্টোবর ২০২০

সীমান্ত পিলারে ‘বাংলাদেশ’ লেখার কাজ শেষ করেছে বিজিবি

সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি সীমান্ত ব্যবস্থাপনা জোরদারকরণের লক্ষ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, বিজিবিতে ‘স্মার্ট ডিজিটাল সার্ভেইল্যান্স এ্যান্ড ট্যাকটিক্যাল বর্ডার রেসপন্স সিস্টেম’ স্থাপন ও অল টেরেইন ভেহিক্যাল (এটিভি) সংযোজন, হেলিকপ্টার সংযোজন, ভাসমান বিওপি স্থাপন ও দ্রুতগতিসম্পন্ন ইন্টারসেপটোর সিলভার ক্র্যাফট জলযান সংযোজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিদ্যমান পিলারের গায়ে ‘চঅক/চঅকওঝঞঅঘ’ লেখা পরিবর্তন করে ‘ইউ/ইঅঘএখঅউঊঝঐ’ লেখার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। পার্বত্য সীমান্ত এলাকায় ৮১৫ কিমি সীমান্ত সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে ৩১৭ কিমি সীমান্ত সড়ক নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এছাড়া ৭৩টি আধুনিক কম্পোজিট বিওপি নির্মাণের অনুমোদন গ্রহণ করা হয়েছে। এদিকে বিজিবি ‘আলোকিত সীমান্ত’ প্রকল্পের মাধ্যমে সীমান্তবর্তী কর্মহীন ও অসহায় মানুষের মাঝে ভ্যানগাড়ি, সেলাই মেশিন, গবাদিপশু, টি-স্টল বিতরণ করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে এবং বিজিবির ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন সাহায্যকারী সংস্থার সহায়তায় এ পর্যন্ত সীমান্তবর্তী ২৮ জেলার প্রায় এক লাখ ২০ হাজার গরিব, দুস্থ, অসহায় ও হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় নিজস্ব ক্ষয়ক্ষতিকে উপেক্ষা করে বিজিবি দুর্যোগকবলিত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। ভবিষ্যতে এ সকল সাফল্যজনক কর্মকা-ের ধারা অব্যাহত থাকবে। এছাড়া ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের সীমান্ত এলাকাসহ বিভিন্নস্থানে পাঁচ লক্ষাধিক অভিযান পরিচালনা করে সর্বমোট ৩৭২ কোটি ৯ লাখ ৫৯ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান ও মাদকদ্রব্য জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে। জব্দকৃত মাদকের মধ্যে রয়েছে ৬৭ লাখ ৫৮ হাজার ৬১ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, তিন লাখ এক হাজার ৮৩০ বোতল ফেনসিডিল, ৫০ হাজার ৭৯০ বোতল বিদেশী মদ, পাঁচ হাজার ৯৫৮ ক্যান বিয়ার, আট হাজার ৮৯৭.৯২৬ কেজি গাঁজা, ১৪.০৩২ কেজি হেরোইন, ৩০ হাজার ৫৯৭টি উত্তেজক ইনজেকশন, ৪৬ হাজার ২১৯টি এ্যানেগ্রা/সেনেগ্রা ট্যাবলেট এবং ১৭ লাখ ৬৩ হাজার ৮৪৫টি অন্যান্য ট্যাবলেট। জব্দকৃত অন্যান্য চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ৩৭.১৪১ কেজি স্বর্ণ, ২০২.৩৭১ কেজি রুপা, পাঁচ হাজার ৮১১টি ইমিটেশনের গহনা, ছয় লাখ চার হাজার ২৯টি কসমেটিক্স সামগ্রী, ১২ হাজার ৬০০টি শাড়ি, আট হাজার ৭৭টি থ্রিপিস/শার্টপিস, তিন হাজার ৪৭৫টি তৈরি পোশাক, ৬২২ মিটার থান কাপড়, আট লাখ ৮৪ হাজার ৯৫১.৩০ ঘনফুট কাঠ, ৩৮ লাখ ১২ হাজার ৮২ কেজি চা পাতা, এক লাখ ১৭ হাজার ১৭৫ কেজি কয়লা, ৩২টি ট্রাক, ১৮টি প্রাইভেটকার, ২৭টি পিকআপ, ১৫১টি সিএনজি/ইঞ্জিন চালিত অটোরিক্সা এবং ৫৬১টি মোটরসাইকেল। উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ২২টি পিস্তল, একটি রিভলবার, ৪৫টি সকল প্রকার গান, ২৭টি ম্যাগাজিন, এক হাজার ৯৭ রাউন্ড গুলি, ৮০০ গ্রাম গান পাউডার এবং চারটি আইইডি। এছাড়া সীমান্তে বিজিবি’র অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই হাজার ৬৩ চোরাকারবারিকে এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ৩৪৪ বাংলাদেশী নাগরিক ও ৯৬ ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ফলশ্রুতিতে সীমান্ত অপরাধ সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ দমন করা সম্ভব হয়েছে। উল্লেখ্য, চলমান করোনাভাইরাস মহামারীতে জর্জরিত সারাদেশে যখন সকল ধরনের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ার উপক্রম তখন বিজিবি সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্যে অটুট থেকে দেশের ৪,৪২৭ কিলোমিটার সীমান্ত রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব অব্যাহত রেখেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ নিদের্শনায় ও বিজিবি মহাপরিচালক মহোদয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রথম থেকেই বিজিবি’র সকল ইউনিট/প্রতিষ্ঠান ও কোম্পানি/বিওপি পর্যায়ে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কারণে বিজিবি সদস্যদের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সদস্য সংখ্যা ন্যূনতম পর্যায়ে রাখা সম্ভব হয়েছে। যার ফলে বিজিবি সদস্যরা বিভিন্ন অভিযান/টহল পরিচালনা করে সীমান্ত সুরক্ষা ও আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পেরেছে।-বিজ্ঞপ্তি।
×