ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শিশু রিফাত হত্যা ॥ এক আসামিকে যাবজ্জীবন, দু’জন খালাস

প্রকাশিত: ২৩:২৩, ৮ অক্টোবর ২০২০

শিশু রিফাত হত্যা ॥ এক আসামিকে যাবজ্জীবন, দু’জন খালাস

কোর্ট রিপোর্টার ॥ পুরান ঢাকার লালবাগে ৬ বছরের শিশু রিফাতকে অপহরণ করে হত্যার মামলায় আরিফুর রহমান জুয়েলকে যাবজ্জীবন কারাদ-াদেশ দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত। মামলার দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেয়া হয়। বুধবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মুন্সী রবিউল আলম এ রায় দেন। জুয়েলকে যাবজ্জীবন কারাদ-াদেশের পাশাপাশি ৩০ লাখ টাকা অর্থদ- দেয়া হয়েছে। আদালত এ অর্থদ-ের টাকা ভিকটিমের পরিবারকে দেয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। অর্থদ- অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদ-াদেশ দেয়া হয়। ইকবাল মুন্সি ওরফে মেকার ইকবাল ও হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেয়া হয়। মামলার নথি থেকে জানা যায়, হাবিবুর রহমান বিভিন্ন সময় রিফাতের বাবা রফিকুল ইসলামকে বসতবাড়ি কেনার প্রস্তাব দিতেন। রফিকুল ইসলাম অস্বীকৃতি জানালে আসামি তার ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। রফিকুল ইসলাম এলাকার লোকজন এবং আত্মীয়-স্বজনদের জানান। ২০১৫ সালের ৯ জুন রিফাতের বাবা কর্মস্থলে চলে যান। রাত ৮টার দিকে স্ত্রী তাকে ফোন দিয়ে জানান রিফাতকে পাওয়া যাচ্ছে না। এ ঘটনায় লালবাগ থানায় একটি জিডি করা হয়। রাত সোয়া ১২টার দিকে ফোনে অপহরণকারী রিফাতকে পেতে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। অপহরণকারীরা বিষয়টি র‌্যাব-পুলিশকে না জানানোর জন্যও সতর্ক করে। কিন্তু রফিকুল ইসলাম বিষয়টি র‌্যাব-১০কে জানান। তিনি অপহরণকারীদের সঙ্গে আলোচনাও করেন। আজিমপুর মেটারনিটি হাসপাতালের সামনে ময়লা ফেলানোর জায়গায় সন্ধ্যায় ৪০ হাজার টাকা রেখে আসতে বলে তারা। এক অপহরণকারী টাকা নিতে আসলে র‌্যাব-পুলিশ তাকে ধরে ফেলে। পরে অপর দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। আসামিদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১১ জুন কামরাঙ্গীরচর থানাধীন বরিশুর গুদারাঘাট সংলগ্ন মধুমতি বিস্কুট ফ্যাক্টরির সামনে বুড়িগঙ্গা নদীর কিনার থেকে ভাসমান অবস্থায় বস্তাবন্দী রিফাতের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে আরিফুর রহমান বলেন, ২০১৫ সালের ৯ জুন হাবিবুর রহমানের পরিকল্পনায় ইকবাল মুন্সীর সহযোগিতায় টেনিসবল এবং ফুটবল দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আরিফুর রহমান জুয়েল শিশু রিফাতকে তার ঘরে নিয়ে যায়। পরে ফলের জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে আটকে রাখে। মুক্তিপণের ১০ লাখ টাকা না পেয়ে তারা তাকে হত্যা করে। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা রফিকুল ইসলাম ১১ জুন মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ৬ অক্টোবর পুলিশ তিন আসামিকে অভিযুক্ত করে চার্জশীট দাখিল করে। মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত ৩৫ সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
×