ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ধর্ষক যেন রাজনৈতিক আশ্রয় না পায় ॥ কাদের

প্রকাশিত: ২২:৫৮, ৮ অক্টোবর ২০২০

ধর্ষক যেন রাজনৈতিক আশ্রয় না পায় ॥ কাদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- করার যে দাবি উঠেছে, তাতে সমর্থন জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বুধবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে নতুন সড়ক ভবনে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। সারাদেশে চলা ধর্ষণ, নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, এদের ছোটখাটো লঘু দ- দিয়ে লাভ নেই। সর্বোচ্চ বিচারের যে দাবি উঠেছে, আমার মনে হয় এটা অযৌক্তিক নয়। এসব অপরাধীর বিরুদ্ধে সকল রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনকে আপোসহীন মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। ধর্ষক যেন কোন রাজনৈতিক আশ্রয় না পায় সে বিষয়ে নেতাকর্মীদের সতর্ক করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেছেন, যে সকল অপরাধী বা ধর্ষক এ ধরনের ঘৃণ্য কাজ করছে, তাদের জন্য শাস্তিই শেষ কথা নয়; তারা কোন রাজনৈতিক দলের ছায়ায় থাকলে তাদের চিরতরে রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। ধর্ষণকারীর যেন কোন রাজনৈতিক আশ্রয়ের ঠিকানা না হয় এবং ধর্ষকদের যেন কোন রাজনৈতিক দল প্রশ্রয় না দেয়। শেখ হাসিনার শাসনামলে অপরাধ করে কেউ পার পাবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, উন্নয়নের গতি ধরে রাখার পাশাপাশি সামাজিক অপরাধ, দুর্নীতি, অনিয়ম, বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকারে অবস্থান স্পষ্ট। দুর্নীতি-অনিয়ম করে যেমন কেউ ছাড় পায়নি তেমনি নারীর প্রতি, শিশুদের প্রতি অন্যায়ের বিষয়ে সরকার কঠোর অবস্থানে। তিনি বলেন, যেখানে যেই ঘটনাই ঘটুক কোনটাকেই সরকার ছাড় দেয়নি। অপরাধীকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনেছে, বিচার কাজ চলমান রয়েছে অনেক চাঞ্চল্যকর মামলার। কোনটির রায় ইতোমধ্যে হয়েছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, দুর্নীতি ও অপকর্মের মূলোৎপাটনে শেখ হাসিনার কোন পিছুটান নেই্। নারীর প্রতি সহিংসতা, নারীর অবমাননা, মাদক, সাইবার অপরাধ, গুজব ছড়ানো এসব অপরাধের বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে রুখে দাঁড়াতে হবে, গড়ে তুলতে হবে সামাজিক প্রতিরোধ। এসব নষ্ট রুচির অপরাধীকে কঠোর শাস্তির পাশাপাশি তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদেরও ছাড় দেয়া হবে না। দেশে ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে বলেই ধর্ষণ বাড়ছে বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার কঠোর সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের। তিনি বলেন, বিচার শেখ হাসিনার আমলেই হয়েছে। এর আগে কোন অপরাধের বিচার হয়নি। তার আগে ফাহিমা, মুন্নি, পূর্ণিমাদের কথাই ভাবুন। একটি ঘটনারও কি বিচার হয়েছে? একটি অপরাধেরও কি দ- দেয়া হয়েছে? বিএনপির দলীয় লোকদের একটিরও কি বিচার হয়েছে? তাদের মুখে এটা শোভা পায় না। বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেছেন, দেশে নাকি গণতন্ত্র নেই। আমরা বলতে চাই প্রতিদিন গণমাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে ‘ফ্রি স্টাইলে’ তারা বিষোদগার করছে। গণতন্ত্র না থাকলে মির্জা ফখরুল সাহেবরা এভাবে অবিরাম মিথ্যাচার করতে কি পারতেন, তাদের দলের কাউকে কি জেলে যেতে হচ্ছে? গণতন্ত্র আছে বলেই তারা সরকারের সমালোচনা করতে পারছেন। এমনকি গঠনমূলক না হয়ে বিরূপ আচরণ করছেন। মিথ্যাচারের পুরনো ভাঙ্গা রেকর্ড বাজিয়ে যাচ্ছেন। একদিকে অবাধ মিথ্যাচার অপরদিকে গণতন্ত্র নেই বলে তারস্বরে মিথ্যাচার করছেন, যা বিএনপির স্বভাবসুলভ দ্বিচারিতা। প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারের অন্ধ সমালোচনা এখন বিএনপির রোজনামচা। তিনি বলেন, করোনা একটি বৈশি^ক সঙ্কট। এ সঙ্কট মোকাবেলার পাশাপাশি বন্যাদুর্গত ও সুপার সাইক্লোন আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সুরক্ষায় শেখ হাসিনা সরকার সফলতার সঙ্গে কাজ করেছে এবং করে যাচ্ছে। কূটনীতিকরা প্রতিলকূতার ¯্রােত মাড়িয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এগিয়ে চলার ধারা প্রশংসার সঙ্গে স্বীকৃতি দিচ্ছেন। অপরদিকে বিএনপি জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। তিনি এ সময় সড়কের উন্নয়নে সকলকে আন্তরিকভাবে কাজ করার তাগিদ দিয়ে বলেন, সড়ক নষ্ট থাকতে পারবে না। যে কোন মূল্যে মেরামত করতে হবে। সরকার চায় না কোন অবস্থাতেই মানুষের দুর্ভোগ হোক। এজন্য পৃথক পৃথক দায়িত্ব দেয়া আছে। আশা করি, আপনারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। সেই সঙ্গে সড়ক ও জনপথের অধীন চলমান প্রকল্পগুলো যথাসময়ে শেষ করারও তাগিদ দেন মন্ত্রী। বলেন, কাজ নিয়ে কোন অজুহাত শুনব না।
×